চবিসভার আনন্দ আয়োজন by মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর

বন্ধুদের আগমনে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে চবির বুদ্ধিজীবী চত্বরের অনুষ্ঠানস্থল। ঢোল, বাঁশি আর নানা রং-বেরঙের বেলুন, মুখোশ ও ফেস্টুন নিয়ে বন্ধুরা আনন্দে মেতে ওঠেন। এভাবেই শুরু হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার দ্বিতীয় বর্ষে পদার্পণ ও তারুণ্য উৎসব।
আনন্দ শোভাযাত্রা, গান, আবৃত্তি, নৃত্য, রম্য বিতর্ক ইত্যাদি সব বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে গত ৩১ মে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা পালন করে প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও তারুণ্য উৎসব। বুদ্ধিজীবী চত্বর থেকে বন্ধুরা বেলুন, মুখোশ, ঢোল আর বাঁশি নিয়ে শোভাযাত্রা বের করেন।
এরপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা। শুরুতেই ছিল বন্ধুদের পরিবেশনায় শুভেচ্ছা সংগীত ‘আজ জীবন খুঁজে পাবি, ছুটে ছুটে আয়...’। এরপর আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে মঞ্চে আসেন বন্ধুসভার সভাপতি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক আদনান মান্নান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং স্টাডিজ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম এবং উদ্বোধক হিসেবে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবুল হক উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শিরীন আখতার, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুকান্ত ভট্টাচার্য্য, মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক দীপান্বিতা ভট্টাচার্য্য ও সুমন ভট্টাচার্য্য এবং মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক অলক বিশ্বাস।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে বন্ধুসভার সভাপতি আদনান মান্নান বলেন, জীবনের হতাশা এবং সুন্দর বিষয়গুলো খুঁজে আনতে পারে বন্ধুসভা।
প্রধান অতিথি সৈয়দ আহসানুল আলম বন্ধুসভা ও প্রথম আলোর কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তিনি বন্ধুদের সাহসের সঙ্গে সব কাজ করার আহ্বান জানান। অধ্যাপক মাহবুবুল হক বলেন, আমাদের দেশে যেখানে নৈরাজ্য, সংকট, বিভেদ ও হানাহানি, সেখানে বন্ধুসভার সদস্যরা গঠনমূলক, সৃজনশীল, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক এবং নানা রকমের উৎসাহ-উদ্দীপনামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত, তারা সৃষ্টি করতে চায়, তারা দেশকে গঠন করতে চায়, দেশের মানুষের কল্যাণ করতে চায়, এটা আমাকে অনুপ্রাণিত করে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক শিরীন আখতার, সুকান্ত ভট্টাচার্য্য, অলক বিশ্বাস, দীপান্বিতা ভট্টাচার্য্য, সুকান্ত ভট্টাচার্য্য এবং বন্ধুসভার মিরন ও আবরার।
আলোচনা শেষে মাহবুবুল হক অতিথি ও বন্ধুসভার বন্ধুদের নিয়ে কেক কেটে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
বন্ধুসভার সাংস্কৃতিক দলের পরিবেশনায় গান, নৃত্য ও আবৃত্তি পরিবেশিত হয়। বন্ধুসভার বন্ধু নাজমা আক্তার ‘ময়না ছলাক ছলাক নাচে রে—এ গানের সঙ্গে লোকনৃত্য করেন। কণার পরিচালনায় বন্ধুসভার বন্ধুরা আবৃত্তি করে শোনান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’।
অনুষ্ঠানে বন্ধুসভার সাংস্কৃতিক দলের পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন অঙ্গন, আবৃত্তি মঞ্চ ও উদীচী গান, নাচ ও আবৃত্তি পরিবেশন করে। মাহমুদুল হাসান নির্মলেন্দু গুণের ‘তোমার চোখ এত লাল কেন’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির (সিইউডিএস) পরিবেশনায় ছিল রম্য বিতর্ক ‘আজ হূদয়ের চেয়ে উদরের চাহিদা বেশি’। এর পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি দিয়ে বিতার্কিকেরা দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন।
শেষে বন্ধুসভার সাংস্কৃতিক দলের পরিবেশনায় ‘আবার জমবে মেলা, বটতলায় হাটখোলায়’ গানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন রুবেল ও নিশা।
 চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা
যোগাযোগ: ০১৮৩২৫৮২৪৯৮

No comments

Powered by Blogger.