চৈতন্যের মুক্ত বাতায়ন-জোর কদমে চলল পাকিস্তানায়ন by যতীন সরকার

কারাগারের অভ্যন্তরে থেকেই বাংলাদেশের পাকিস্তানীকরণের নানা দুঃসংবাদ পেয়ে যেতে লাগলাম। এ রকম প্রতিটি সংবাদই আমাদের চিত্তে দুঃখের অনির্বাণ আগুন জ্বালিয়ে দিত। সহবন্দিদের সঙ্গে মতবিনিময় করে সে আগুনের জ্বালা প্রশমিত করার ব্যর্থ চেষ্টা করতাম।


মুক্তিসংগ্রামের যে মূল নেতারা ছিলেন প্রকৃত দেশপ্রেমিক, তাঁদের হত্যা করে ও অনেককে নানাভাবে হটিয়ে দিয়ে যারা রাষ্ট্রের ক্ষমতার মঞ্চটিকে দখল করেছিল, তাদের ভেতর দেশপ্রেমের বাষ্পমাত্রও ছিল না। এদের সঙ্গেই যুক্ত হয়েছিল দোদুল্যমান মধ্যবিত্তের একটি গোষ্ঠী। শ্রেণী হিসেবে মধ্যবিত্ত তো একান্তই অনিকেত এবং অনিকেত বলেই সদা দোদুল্যমান। সে কারণেই দেখা গেল যে মুক্তিযুদ্ধের লড়াকু সৈনিক বলে মনে হয়েছিল যাঁদের, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এবং তার পরও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের ধারকরূপে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সামনের সারির নেতাদের সঙ্গেই শাসনক্ষমতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবস্থান নিয়েছিলেন যাঁরা, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তাঁরা বিনা প্রতিরোধে ঘাতকগোষ্ঠীর কাছে আত্মসমর্পণ করে বসলেন এবং তাঁদের পূর্বতন মূল্যবোধকে অনায়াসে বিসর্জন দিলেন।
তবে এ প্রসঙ্গে আরেকটা কথাও বলতেই হয়। সদা দোদুল্যমানতা ও মেরুদণ্ডহীনতাই মধ্যবিত্ত চরিত্রের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলেও এদের মধ্যে একটি গোষ্ঠী আছে একান্ত ধূর্ত ও মতলববাজ। ওরা দোদুল্যমানতাকে খুব বেশি প্রশ্রয় দেয় না। পঁচাত্তরের পটপরিবর্তন তথা পশ্চাদ্বর্তন যেমন ওরাই ঘটিয়েছিল, তেমনই এর পরও ওরাই মেরুদণ্ডহীন মধ্যবিত্তদের সঙ্গে নিয়ে একান্ত ধূর্ততার সঙ্গে তাদের মতলব হাসিল করে ফেলল। তারা খুবই দ্রুততার সঙ্গে স্বাধীনতার সব মূল্যবোধকে লোপাট করে ফেলতে সক্ষম হলো। তবে দালাল আইন বাতিল করে, সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল গঠনের সুযোগ অবারিত করে দিয়ে, অনেক শিল্পের রাষ্ট্রীয়করণ বাতিল ও ব্যক্তিমালিকানা প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করে এবং রাষ্ট্রের আদি সংবিধানটিকে কাটাকুটি করে স্বাধীনতার মূল মর্মের উৎসাদন ঘটিয়েও তারা সব ভয় জয় করতে পারেনি। বিশেষ করে নিহত বঙ্গবন্ধুর ভাবমূর্তি প্রতিনিয়তই তাদের তাড়া করতে থাকে। বঙ্গবন্ধুর অবদানের সাংবিধানিক স্বীকৃতি জানিয়েই ক্ষমতায় টিকে থাকার পথ সন্ধান করছিল তারা- এমন কথাও বিভিন্ন সূত্রে শোনা যাচ্ছিল। ১৯৭৬ সালের ২২ জানুয়ারি আবদুল হক সাহেব রোজনামচায় লিখেছিলেন- "গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কয়েকজনের কাছে শুনলাম... জেনারেল জিয়া গত ১৬ ডিসেম্বর তাঁর একটা পুরনো বিবৃতি কিছু রদবদল করে সংবাদপত্রে ছাপতে দিয়েছিলেন। তাতে শেখ সাহেবের ঐতিহাসিক ভূমিকার স্বীকৃতি ছিল এবং তাঁকে জিয়া জাতির জনক বলেছিলেন। এই বিবৃতি কম্পোজ করাও হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু 'ইত্তেফাক'-এর মালিক-সম্পাদক মইনুল হোসেনের চেষ্টায় (কেউ কেউ বলেন বিমানবাহিনী প্রধান এম জি তোয়াবের বিরোধিতার ফলে) শেষ মুহূর্তে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল।"
বোঝা গেল, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ক্ষমতা দখলকারীদের ভেতর প্রবল প্রভাবশালী ছিল যারা, তারা কেউই বঙ্গবন্ধুকে যথাযথ মর্যাদা দানে রাজি ছিল না। তারা বুঝে নিয়েছিল যে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভূমিকার স্বীকৃতি দেওয়া মানেই মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের অনুবর্তী থাকা। আর এ রকম থাকতে গেলে দেশটিকে কোনোমতেই তাদের অবাধ শোষণের মৃগয়াক্ষেত্র বানিয়ে তোলা সম্ভব হবে না। তাই তাদের প্রথম কাজই হলো দেশের ইতিহাস থেকে শেখ মুজিবের নাম মুছে ফেলা, কেউ যাতে শেখ মুজিবের অবদান ও আদর্শ নিয়ে রাজনীতির মাঠে প্রবেশ করতে না পারে সাংবিধানিকভাবেই তার নিশ্চয়তা বিধান করা। অর্থাৎ তাদের সবার সত্তা ছিল মুজিব ফোবিয়ায় আক্রান্ত। সেই ফোবিয়ার প্রকাশ ঘটল তাদের জারি করা 'রাজনৈতিক দল নিয়ন্ত্রণ' বিধিতে। ১৯৭৬ সালের ২৩ জুলাইয়ে জারি করা ওই বিধিতে রাজনৈতিক দলের কার্যকলাপ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হলো। বলা হলো যে 'প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে তার গঠনতন্ত্র, ম্যানিফেস্টো ও কর্মসূচি সরকারের নিকট অনুমোদনের জন্য দাখিল করতে হবে, দলের তহবিল কোনো শিডিউলড ব্যাংকের মারফত অপারেট করতে হবে।'
এই 'নিয়ন্ত্রণ বিধি'র সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিধানটি ছিল, 'কোনো দল কোনো মৃত অথবা জীবিত ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে পারসোনালিটি কাল্ট গড়ে তুলতে পারবে না।'
এই বিধানটি যে উড়ে এসে জুড়ে বসা শাসকগোষ্ঠীর 'মুজিব-ফোবিয়া' থেকে উপজাত, সে তো দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট। মুজিব ছাড়া আর কাকে কেন্দ্র করে এ দেশে পারসোনালিটি কাল্ট গড়ে তোলা সম্ভব?
যা-ই হোক, কয়েক মাসের মধ্যেই নবগঠিত ৫৬টি রাজনৈতিক দল অনুমোদনের জন্য আবেদন জানাল। নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের দিকে খবর পাওয়া গেল যে ২১টি দলকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ১৯৭৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবে- এমন খবরও সরকারি সূত্রেই প্রচারিত হলো, আবার কিছুদিন পরেই জানানো হলো যে এ সময়ে নির্বাচন হচ্ছে না।
নবগঠিত দলগুলোর মধ্যে দুটির কথা বিশেষভাবেই উল্লেখ করতে হয়। এর একটি ডেমোক্রেটিক লীগ ও অন্যটি ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টি।
'ডেমোক্রেটিক লীগ' নিয়ে মঞ্চাবতীর্ণ হলেন বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল নায়ক খন্দকার মোশতাক। ১৯৭৬ সালের ১ অক্টোবর তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁর দলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্ণনা করলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এই ঘাতকের বক্তব্য ছিল এ রকম-
'বীর জনগণ ও মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীনতা এনেছিল, কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সেই তমসাচ্ছন্ন বছরগুলোতে জনগণ তাদের স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলল। যা ছিল অবশ্যম্ভাবী, তা-ই ঘটল। জাতির দেশাত্মবোধের চেতনা এবং তাদের ইচ্ছা মূর্ত হয়ে উঠল এবং তাই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঐতিহাসিক পরিবর্তনের কারণ ঘটল। জাতি স্বস্তির নিঃশ্বাস ত্যাগ করল।'
শেখ মুজিব ও অন্য নেতাদের হত্যাকাণ্ডের তিনি নিন্দা করেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে খন্দকারের একান্ত লজ্জাহীন বক্তব্য-
'অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ মুজিব নিহত হয়েছিলেন এবং দেশে দেশে, যুগে যুগে এ ধরনের অভ্যুত্থানে অনেক ক্ষমতাসীন নিহত হয়ে থাকে। অভ্যুত্থানের পর এ ধরনের হত্যাকাণ্ড নিন্দিত হয় না।'
সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন যে তাঁর দল সমাজতন্ত্রে নয়, এর উল্টোটায়ই বিশ্বাসী। ডেমোক্রেটিক লীগ ফ্রি ইকোনমি চায়।
এ সময়ে 'ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টি' নামে যে দলটি সরকারি স্বীকৃতি পেল, সেটি আসলে আগেকার নেজামে ইসলাম ও জামায়াতে ইসলামীর মতো কয়টি সাম্প্রদায়িক দলের নেতাদের উদ্যোগেই গঠিত। এ দলটি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেয় যে বাংলাদেশকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র করাই তাদের বিঘোষিত নীতি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে তারা মুক্তিযুদ্ধ বলে স্বীকার করে না, তাদের মতে 'বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম বিদেশি চক্রান্তের ফল।'
ডেমোক্রেটিক লীগ আর ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির মতো দলগুলোর সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্তির মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠল যে বাংলাদেশের খোলসের ভেতর পাকিস্তানের শাঁস ঢুকিয়ে দেওয়াই অবৈধ পথে ক্ষমতা দখলকারীদের মূল লক্ষ্য, সে লক্ষ্যে তারা অনেক দূর এগিয়ে গেছে, তাদের সক্রিয় উদ্যোগেই বাংলাদেশের পাকিস্তানায়নপ্রক্রিয়া দ্রুতগতি লাভ করছে।
এ সময়েই (৩০ মে, ১৯৭৬) কর্নেল ফারুক রহমান 'সানডে টাইমস'-এ প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে একান্ত স্পর্ধার সঙ্গে লেখে- �I helped to kill Mujib, dare you put me on trial?� মুজিব হত্যার সপক্ষে নানা অপযুক্তি উত্থাপনের পর সর্বশেষে মুজিবকে অভিযুক্ত করে ইসলাম বিরোধিতার দায়ে। তার ভাষায়-
�Last, but not the least, Mujib betrayed his faith Islam, which is the religion of my people and the one thing which can give ideological thrust to our forward march.�
ফারুকের সঙ্গে সে সময়কার সরকারের কর্তাব্যক্তিরা যে অভিন্ন মতের ধারক, সে বিষয়টি তাদের নানা কার্যকলাপেই পরিস্ফুট হয়ে উঠছিল।
তবে একই শ্রেণীচেতনার ধারক হয়েও ওদের ভেতর গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছিল। এক গোষ্ঠী আরেক গোষ্ঠীকে ল্যাং মেরে ফেলে দেওয়ার নানা প্রক্রিয়া উদ্ভাবনে ছিল সদা তৎপর, আজ যাকে উচ্চে তুলে ধরছে, কালকেই হয়তো তাকে আছাড় মেরে নিচে ফেলে দিচ্ছে। ফারুককে নিয়েও তাদের এমনই আচরণ।
কর্নেল ফারুকের লেখাটির বিশ্লেষণ করে আবদুল হক সাহেব মন্তব্য করেছেন-
'ফারুক রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে মেজর জেনারেল জিয়ার আশ্বাস পেয়ে মেজর জেনারেল জিয়ার কথা মতোই কাজ করছিল, কিন্তু জিয়া বিশ্বাসঘাতকতা করে তাকে পুনরায় স্বদেশ থেকে বহিষ্কার করে দিয়েছে।'....
ফারুকের এই অভিমতের উল্লেখ করেই আবদুল হক লেখেন-
'ফারুকের লেখা থেকে মনে হয়, খন্দকার মোশতাক আহমদ জানতেন যে শেখ সাহেবকে হত্যা করা হবে এবং তিনি প্রেসিডেন্ট হতে স্বীকৃত হন। আরো মনে হয়, মেজর জেনারেল জিয়ারও শেখ হত্যায় সম্মতি ছিল। শেখ সাহেবকে হত্যা করে দেশে এক বিপ্লব হবে- এই ছিল পরিকল্পনা। কিন্তু সেই বিপ্লব আসেনি, জেনারেল জিয়া সেই বিপ্লব না এনে ব্যক্তিগত ক্ষমতা বৃদ্ধি করছেন, এই হচ্ছে ফারুকের বক্তব্য।...
...আসল কথা হলো, ফারুক রহমান কোনো বিদেশি শক্তির চর হিসেবে কাজ করেছে এবং তার ক্ষমতালিপ্সা ছিল। এই কারণে সে শেখ সাহেবকে হত্যা করেছে। এখন কিছু বাজে যুক্তি দেখাচ্ছে হত্যাকাণ্ডের সমর্থনে।'
এত কিছু করেও ফারুকের ক্ষমতালিপ্সা চরিতার্থ হলো না, তারই প্রমাণ মিলল জুলাই মাসের গোড়ায়। বিবিসির খবরে শোনা গেল : 'শেখ সাহেবের সকল হত্যাকারীকে কূটনৈতিক চাকরি দেওয়া হয়েছে, একমাত্র সৈয়দ ফারুক রহমান ও আরেকজন বাদে।' এই বিবিসিই আবার জানাল : ফারুক রহমান 'ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস'-এ এক প্রবন্ধ লিখেছে, তাতে মেজর জেনারেল জিয়াকে উৎখাত করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
জিয়া কিন্তু একের পর এক তাঁর সব সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীকেই হটিয়ে ছিলেন। খন্দকার মোশতাককেও ছাড়লেন না, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করলেন।
পঁচাত্তরের ৭ নভেম্বরের পর সশস্ত্র বাহিনীতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ও সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে 'জাসদ' নেতাদের বিচার করা হয় বিশেষ সামরিক ট্রাইব্যুনালে। একসময়ে সবাই যাঁকে জিয়ার প্রাণরক্ষাকারী বলে জানত, ট্রাইব্যুনালের বিচারে প্রাণ হনন করা হলো সেই কর্নেল তাহেরেরও। জাসদের অন্য অনেক নেতাকেই বিভিন্ন ধরনের দণ্ড প্রদান করা হলো। মেজর (অব.) জলিলের হলো যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
এরপর তো আরো অনেক বছর কেটে গেছে। জিয়াউর রহমান নিজেই রাজনৈতিক দল গঠন করে তার প্রধান হলেন। একসময়ে তিনিও নিহত হলেন। দেশটি আরেক জঙ্গবাহাদুর এরশাদের শাসন কবলিত হলো। পাকিস্তানায়নপ্রক্রিয়া মোশতাক ও জিয়ার আমলে যা সম্পন্ন হয়েছিল, এরশাদ তাকে আরো এগিয়ে নিলেন। এরশাদের ক্ষমতা দখলের আগেই ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়া হয়েছিল, এরশাদের আমলে ইসলামকে 'রাষ্ট্রধর্ম' করা হলো। এতে ধর্মতন্ত্রী মৌলবাদীদের উৎসাহের পালে জোর হাওয়া লাগল। তারা ধর্মতন্ত্রী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জিগির তোলার মওকা পেল এবং একসময়ে তো দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায়ই ভাগ বসাল। গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গত শতকের শেষ দশকে এরশাদীয় স্বৈরশাসনের অবসান ঘটার পর দেশের মানুষ নতুন প্রত্যাশায় উজ্জীবিত হয়ে উঠেছিল। কিন্তু জনগণের অনেক প্রত্যাশাই পরিণত হলো হতাশায়। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রইল, ধর্মতন্ত্রী সাম্প্রদায়িকতাবাদীরা রাজনীতি করার অবাধ অধিকার ভোগ করতে থাকল, মুক্তবাজার অর্থনীতির নামে ও লুটপাটতন্ত্রীদের দাপটে সমাজতন্ত্র লজ্জায় মুখ লুকাল। এসবের সঙ্গেই জোর কদমে চলল দেশটির পাকিস্তানায়ন।
লেখক : প্রাবন্ধিক, শিক্ষাবিদ

No comments

Powered by Blogger.