জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের জরিপ-প্রাথমিক স্তরে বিদ্যালয়ে যায় না পাঁচ হাজার শিশু by নিজাম সিদ্দিকী

সব শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। এর পরও শিক্ষার বাইরে থেকে যাচ্ছে অনেক শিশু। চট্টগ্রাম জেলায় এ বছর প্রাথমিক স্তরের পাঁচ হাজারের বেশি শিশু বিদ্যালয়ে যায়নি। ছয় থেকে ১০ বছর বয়সের স্কুল-গমনোপযোগী (প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার উপযোগী) শিশুদের মধ্যে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের


পরিচালিত জরিপে এ তথ্য উঠে আসে। তবে গত বছরের তুলনায় এ হার কমে এসেছে বলে দাবি করেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিলকিস আরা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিশুদের স্কুলে না যাওয়ার হার গত বছরের তুলনায় প্রায় তিন শতাংশ কমেছে। গত বছর যা ছিল ২১ শতাংশ, এ বছর তা ১৮ শতাংশে নেমে এসেছে।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলায় ছয় থেকে ১০ বছর বয়সের স্কুলে যাওয়ার মতো ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা নয় লাখ ১৫ হাজার ১৯৫ জন। তবে বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে নয় লাখ নয় হাজার ৯৭১ জন। এর মধ্যে ছাত্র চার লাখ ৫১ হাজার ৩৪৭ জন এবং ছাত্রী চার লাখ ৫৮ হাজার ৬২৪ জন। প্রাথমিক শিক্ষা নিচ্ছে না পাঁচ হাজার ১২৪ শিশু। গত ২০ মার্চ পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে এ পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম জেলায় দুই হাজার ৯৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এক হাজার ৬৩৪টি, নিবন্ধিত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫১৯টি, পরীক্ষণ বিদ্যালয় দুটি এবং কিন্ডারগার্টেন স্কুলসহ অন্যান্য বিদ্যালয় রয়েছে ৮৪২টি।
যেসব কারণে বিদ্যালয়বিমুখ: জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, পারিবারিক অসচ্ছলতা, ছেলেমেয়ের পড়াশোনার ব্যাপারে বাবা-মায়ের উদাসীনতা, ভাসমান পরিবারগুলো এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরে যাওয়া, পারিবারিক সমস্যা ও সামাজিক রক্ষণশীলতা প্রাথমিক শিক্ষায় অনাগ্রহের অন্যতম কারণ।
বিদ্যালয়মুখী করার উদ্যোগ: প্রাথমিক স্তরের ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়মুখী করতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলো হচ্ছে: উপবৃত্তি প্রকল্প, শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নেওয়া, স্কুল ফিডিং, মা-সমাবেশ, সামাজিক সভা-সমাবেশ প্রভৃতি। এ প্রসঙ্গে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিলকিস আরা বেগম বলেন, ‘শিশুদের বিদ্যালয়মুখী করতে আমরা বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নেওয়াকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। তারা কেন আসছে না, কোথায় তাদের সমস্যা—এসব বিষয় চিহ্নিত করে বাবা-মাকে উদ্বুদ্ধ করছি সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠানোর ব্যাপারে। এতে আমরা ভালো সাড়া পাচ্ছি।’

No comments

Powered by Blogger.