দ্বিতীয় স্ত্রীকেও তালাক দিলেন ইমরান খান

দ্বিতীয় স্ত্রীকেও তালাক দিলেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ও বর্তমান রাজনীতিবিদ ইমরান খান। এ বছরের জানুয়ারিতে সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র সাবেক উপস্থাপক ও মডেল রেহামকে বিয়ে করেন ইমরান খান। কিন্তু বিয়ের মাত্র ১১ মাসের মাথায় ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল তাদের। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ-এর মুখপাত্র নাঈম উল হক। দু’জনের সমঝোতায় তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। এই বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে তিনি তিক্ত সম্পর্ক ও বোঝাপড়ার অভাবের কথা বলেছেন। তবে নির্দিষ্ট কোনো কারণের কথা বলেন নি। পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী এ অধিনায়ক ১৯৯৫ সাল ব্রিটেনের জেমিমা গোল্ডস্মিথকে বিয়ে করেন। কিন্তু নানা নাটকীয়তার পর ২০০৪ সালে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর ১১ বছর একা ছিলেন ইমরান খান। গত বছর শেষে দিকে রেহামের সঙ্গে ইমরান খানের রোমান্টিকতার খবর দেয় বৃটিশ গণমাধ্যম। ইমরান খান প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হয়। এ বছরের জানুয়ারিতে জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে ৪২ বছর বয়সী রেহামের সঙ্গে ৬৩ বছর বয়সী ইমরানের বিয়ে হয়। আগের ঘরে ইমরানের দুই সন্তান ছিল। আর রেহামের আগের ঘরে ছিল ৩ সন্তান। ইজাজ রেহমান নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে ১৫ বছর সংসারের পর ২০০৫ সালে তাকে ডিভোর্স দেন রেহাম। তিনি ১০ বছর একা থাকার পর এবার গাট বাঁধেন ইমরান খানের সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইমরান খানের কাছের একজন তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে বলেন, ‘রেহাম রাজনীতিতে সক্রিয় হতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু ইমরান খান কিছুই চাইছিলেন না, তার স্ত্রী রাজনীতিতে আসুক। রেহাম কখনও ঘরে থাকতে চাইতেন না। এটা নিয়ে প্রায় দু’জনের মধ্যে মনোমলিন্য হতো। তাই বাধ্য হয়ে শেষমেশ তারা ছাড়াছাড়ির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’ ডিভোর্সের বিষয়টি নিশ্চিত করে রেহাম খান টুইটও করেছেন। তিনি লেখেন, ‘আমরা বিচ্ছিন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ডিভোর্স ফাইল পূরণ করেছি।’ ইমরান খানও টুইট করে রেহামের সঙ্গে ছাড়াছাড়ির কথা জানিয়েছেন।
ইমরান-রেহামের বিবাহ বিচ্ছেদের নেপথ্যে রাজনীতি
সমঝোতার মাধ্যমে রেহাম খানকে তালাক দিয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফ পার্টির চেয়ারম্যান ও দেশটির সাবেক বিশ্বকাপ ক্রিকেট জয়ী অধিনায়ক ইমরান খান।
শুক্রবার তেহরিক ই ইনসাফের মুখপাত্র নিয়ামুল হক পাকিস্তানের পত্রিকা ডনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিয়ের মাত্র ১০ মাসের মাথায় তারা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটালেন।
গত ছয় মাস ধরে এই দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদের গুঞ্জন চলে আসছিল। কিন্তু বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ইমরান-রেহামকে একসঙ্গে দেখা গেছে। গত মাসেও এক টুইটের মাধ্যমে টিভি চ্যানেলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ইমরান বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা সত্য নয়। এসব গুজব। আপনারা এ ধরনের ভিত্তিহীন খবর প্রচার থেকে বিরত থাকুন।
ইমরানের বরাত দিয়ে নিয়ামুল হক বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদের বিষয়ে মিডিয়াগুলোকে সংবেদনশীল খবর প্রকাশের কথা বলেছেন।
এদিকে টুইট বার্তায় ইমরান বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদ তার, রেহামের এবং তাদের পরিবারের জন্য খুবই বেদনাদায়ক। তাদের পারিবারিক বিষয়কে সম্মান করতে সবার প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
ইমরান খান বলেন, বিচ্ছেদের বিষয়ে আমাদের মাঝে আর্থিকভাবে কোনো সমঝোতা হয়নি। তিনি বলেন, রেহামের নৈতিক চরিত্র এবং সমাজের সুবিধধাবঞ্চিতদের নিয়ে কাজ করাকে আমি যথেষ্ট সম্মান করি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইমরানের একজন ঘনিষ্ট ব্যক্তি জানান, রেহাম রাজনীতিতে আসতে চেয়েছিলেন। ঘরে বসে থাকতে চাননি। কিন্তু বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি ইমরান। ইমরান চাননি রেহমা রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ুক।
তিনি বলেন, এছাড়া আরো অনেক সমস্যা ছিল যেগুলো সমাধান করা যেত। কিন্তু রাজনীতিতে আসার বিষয় নিয়ে তাদের মাঝে এ বিচ্ছেদ।
ইমরানের কাছের আরো একজন ডনকে জানান, ইমরানের পরিবার থেকে রেহামকে ডিভোর্স দেয়ার জন্য যথেষ্ট চাপ ছিল। তবে এ বিষয়ে রেহাম কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি একটি টুইট করেন। যেখানে তিনি লেখেন, আমরা আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে টিভি সাংবাদিক রেহামকে বিয়ে করেন ইমারন খান। এর আগে ২০০৪ সালে ইংলিশ সাংবাদিক জেমিমার সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় ইমরানের। ইমরানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আগে রেহাম ইজাজ নামে এক মনোবিজ্ঞানীকে বিয়ে করেছিলেন। তাদের ঘরে তিন সন্তান আছে।
যুগান্তর

No comments

Powered by Blogger.