ঢাকায় পাতালরেল হবে, অর্থ দেবে বিশ্বব্যাংক!

ঢাকায় মেট্রোরেলের পাশাপাশি পাতালরেল নির্মাণ করা হবে। শিগগিরই এর সমীক্ষা চালানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য দেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সমীক্ষার ভিত্তিতে প্রকল্প তৈরি হবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্পে অর্থায়নের আশ্বাস দিয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পের মতো এটিও একটি স্বপ্নের প্রকল্প হবে। এতে করে বিদ্যমান যানজট একেবারেই কমে আসবে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পরিকল্পনামন্ত্রীর সঙ্গে সভা করেন সফররত বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট কাইল পিটারস। সাক্ষাতের আগে দীর্ঘ যানজট পেরিয়ে তিনি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে পৌঁছান। এ সময় তিনি জানতে চান, এ অতিথি ভবনের অবস্থান রাজধানীর এক প্রান্তে কি না। এর উত্তরে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, এটি শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। এ সময় বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ঢাকার বিশ্বব্যাংক কার্যালয়ও শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। একই শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত দুটি স্থানে যেতে দীর্ঘ যানজট পেরোতে হয়। যানজট নিরসনে পাতালরেল নির্মাণের পরামর্শ দেন তিনি। এ প্রকল্পে সরকার চাইলে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করতে পারে।
এরপর গতকালের একনেক সভায় বিষয়টি তোলেন পরিকল্পনামন্ত্রী। এতে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়ে সমীক্ষা চালানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে গতকালের একনেক সভায় মোট ৬ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকার আটটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৪ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২৫ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ২ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা। পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর সীমিত আকারে চালুর জন্য গতকালের একনেক সভায় ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকার প্রকল্প পাস করা হয়। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এ বছরের ডিসেম্বর থেকে পায়রা বন্দর দিয়ে সীমিত আকারে পণ্য খালাস শুরু করতে চায় সরকার। পায়রা বন্দরব্যবস্থা পূর্ণাঙ্গ আকারে গড়ে না ওঠা পর্যন্ত বহির্নোঙরে বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানো-নামানোর এ কাজটি সম্পন্ন হবে।
জানা গেছে, বর্তমানে ১৬ একর জায়গার ওপর সীমিত ভৌত অবকাঠামো যেমন—পন্টুন, ক্রেন, নিরাপত্তা ভবন নির্মিত হয়েছে। বড় আকারের জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে লাইটারিং করার জন্য প্রয়োজনীয় কাজ শেষ হয়েছে। ২০২৩ সাল নাগাদ পূর্ণাঙ্গভাবে পায়রা বন্দরের কার্যক্রম শুরু হবে। এ বন্দরে তখন সাড়ে সাত হাজার কনটেইনারের স্থান সংকুলান হবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে দেড় হাজার কনটেইনারের স্থান সংকুলান হয়। এর ফলে কার্গো হ্যান্ডেলিং তিন গুণ কমবে।
একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্প হলো: চট্টগ্রাম ও খুলনায় বিএসটিআইয়ের আঞ্চলিক অফিস স্থাপন ও আধুনিকীকরণ; বৃহত্তর পাবনা ও বগুড়া জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, ডাল ও তেলবীজ উৎপাদনের মাধ্যমে টেকসই পুষ্টি নিরাপত্তা জোরদারকরণ, পরিকল্পনা বিভাগ ও কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবন নির্মাণ, ঢাকার মিরপুরের পাইকপাড়ায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৬০৮টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিপ মডেল টেস্টিং সেন্টার স্থাপন এবং সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম।

No comments

Powered by Blogger.