কৌতূহল, কদিন পরেই খোলাসা হয়ে যাবে by কাফি কামাল

Add caption
শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দলীয় সব পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সমশের মবিন চৌধুরী বীরবিক্রম। একই সঙ্গে রাজনীতি থেকেও অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। বুধবার রাতে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি অবসরের সিদ্ধান্ত জানিয়ে চেয়ারপারসনকে লেখা চিঠিটি হস্তান্তর করেছেন। কয়েক বছর ধরে বিএনপির কূটনীতিক উইংয়ের নেতৃত্বদানকারী এ নেতার আকস্মিক অবসরের সিদ্ধান্তে নানা গুঞ্জন তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। চাপের মুখে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- নেতাকর্মীদের মুখে মুখে দিনভর ছিল এমন আলোচনা। তবে সাংবাদিকদের তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, রাজনীতি থেকে তার অবসরের মূল কারণ শারীরিক অসুস্থতা। অবসরের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর গতকাল বিকালে তার বাননী ডিওএইচএসের বাসভবনে তিনি দৈনিক মানবজমিনের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন।
হঠাৎ কেন রাজনীতি থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিলেন জানতে চাইলে যুদ্ধাহত এ মুক্তিযোদ্ধা নেতা বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধের সময় আহত হওয়ার পর থেকে শারীরিকভাবে অসুস্থ। এখন বয়স হয়েছে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শরীরে নানা রোগ বাসা বেঁধেছে। তারপরও বয়সের তুলনায় আমি অনেক সক্রিয় ছিলাম। কিন্তু ইদানিং শরীর কুলোচ্ছে না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আমার বাম চোখটি প্রায় অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে। প্রস্টেট বেড়েছে। মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব বেশ কিছুদিন ধরে ভোগাচ্ছে। ডান পায়ের সমস্যাটাও বেশ ভোগাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা অভিমত দিয়েছেন, আমার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন।
বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজনীতি অবসরের কি প্রয়োজন জানতে চাইলে সমশের মবিন চৌধুরী বলেন, সর্বশেষ কোরবানির ঈদের সময় চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে ছিলাম। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই আবারও চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়া দরকার। এতদিন আমি ব্যবহার করেছি আমার অ্যানালগ পাসপোর্ট। সেটার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তাই আমি এমআরপির জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আমাকে পাসপোর্ট দেয়া হচ্ছে না। আমি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ পাসপোর্ট অফিসে একাধিকবার যোগাযোগ করেছি। তারা বলছে, দেরি হবে। কেন সেটা বলছে না। 
কোন ধরনের চাপের কারণে তার এ আকস্মিক সিদ্ধান্ত কিনা জানতে চাইলে সমশের মবিন চৌধুরী বলেন, আমি কোনদিন চাপের কাছে নতি স্বীকার করিনি। আমার ওপর আলাদা কোন চাপ নেই। মুক্তিযুদ্ধের সময় গ্রেপ্তারের পর আমাকে বলা হয়েছিল, রাজসাক্ষী না হলে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে। আমি সেদিনও মৃত্যুর ভয়ে দেশের সঙ্গে গাদ্দারি করিনি। চাপ-টাপ কিছু নয়, আমি যুদ্ধাহত একজন মুক্তিযোদ্ধা। শারীরিকভাবে এখন আর রাজনীতি করার মতো অবস্থায় নেই। শারীরিক অসুস্থতার কারণেই আমি আর সক্রিয় রাজনীতিতে থাকতে চাইছি না।
অবসরের ব্যাপারে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলাপ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সমশের মবিন চৌধুরী বলেন, আমার আলাপ হয়নি। অন্য কারও সঙ্গেও আলাপ হয়নি। আমি আমার চিকিৎসকদের সঙ্গে আলাপ করেই রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছি। এ ব্যাপারে আমার রাজনৈতিক সহকর্মীদের সঙ্গে কোন আলোচনা হয়নি। এমনকি সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরও কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তিনি বলেন, রাজনীতি থেকে অবসরের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার পর বুধবার রাতে আমি দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাসায় গিয়ে তার কাছে পদত্যাগের চিঠি দিয়েছি। এ সময় আমাদের মধ্যে প্রায় দেড় ঘণ্টা আলাপ হয়েছে। মির্জা আলমগীর আমাকে বলেছেন, ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমি এ চিঠি গ্রহণ করছি।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিনের একটি সম্পর্ক রয়েছে যুদ্ধাহত এ মুক্তিযোদ্ধার। এছাড়া বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এবং দলের চেয়ারপারসন যখন যুক্তরাজ্যে চিকিৎসাধীন তখন রাজনীতি থেকে তার এ অবসরের সিদ্ধান্তে খালেদা জিয়া মানসিকভাবে আহত হতে পারেন কিনা জানতে চাইলে সমশের মবিন চৌধুরী বলেন, হতেই পারেন। কিন্তু আমি শারীরিকভাবে সুস্থ না। তবে চেয়ারপারসনকে লেখা সংক্ষিপ্ত চিঠিতে মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে সামনে রেখে সক্রিয় থাকার ঘোষণা দিয়ে শমসের মবিন লিখেছেন, ‘একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার স্বাস্থ্যগত সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকে মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে সামনে রেখে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার প্রয়াস আমার চিরকাল থাকবে।’
রাজনৈতিক মহলে আলোচনা রয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কিছু নেতাকে নিয়ে তৃতীয় একটি রাজনৈতিক ফোর্স গঠন এবং তারা শিগগিরই দৃশ্যপটে আবির্ভূত হতে পারেন- সে ধরনের কোন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে সমশের মবিন চৌধুরী স্মিতহাস্যে বলেন, আমার জানা নেই। তবে জনগণের কাছে যে রাজনীতি গ্রহণযোগ্য সেটাই হবে সঠিক রাজনীতি। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধকে সামনে রেখে একটি জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন বলে আমি করি করি।
শারীরিকভাবে সুস্থ হলে তিনি রাজনীতিতে ফিরবেন কিনা এবং সেটা বিএনপিতে কিনা জানতে চাইলে সমশের মবিন চৌধুরী বলেন, আগে শরীর ভাল হোক। শরীর ভাল হলে জনগণের কল্যাণে সব সময় কাজ করতে চেষ্টা করবো। আদর্শ তো মানুষের একটাই থাকে। আমি দল বদলের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। পছন্দও করি না। তবে আমার মনে হয় না, শারীরিক কারণে সক্রিয় রাজনীতি করার মতো সুযোগ আর হবে।
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এবং চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে রাজনীতি থেকে তার অবসরের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক মহলে যে রহস্য ও কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে সে ব্যাপারে সমশের মবিন চৌধুরী বলেন, অদূর ভবিষ্যতে এ কৌতূহল পরিষ্কার হয়ে যাবে।
দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর ধরে দলের কূটনীতিক উইংয়ের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন সাবেক এ পেশাদার কূটনীতিক। কাজ করতে গিয়ে দলের অভ্যন্তরে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছেন কিনা বা দলে তার শূন্যতার ব্যাপারে সমশের মবিন চৌধুরী বলেন, কাজ করতে গিয়ে আমি দলের অভ্যন্তরে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়িনি। সবসময় সক্রিয়ভাবেই দায়িত্ব পালন করেছি। আমি মনে করি, আমার অনুপস্থিতিতে দলের নতুন প্রজন্মের অন্য নেতারা সেটা এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
সম্প্রতি দুই বিদেশী নাগরিক হত্যার ঘটনায় কূটনীতিকদের অসন্তোষ এবং বিরোধী দলের ওপর সরকারের দায় চাপানোর ব্যাপারে অভিমত জানতে চাইলে সমশের মবিন চৌধুরী বলেন, এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। কিছু বলতে পারবো না।
অবসরের সিদ্ধান্তের পর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফের অভিনন্দন প্রসঙ্গে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, আশ্চর্য। কদিন আগেও তারা আমাকে যাচ্ছেতাই গালি দিয়েছে। রাজনীতি ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অভিনন্দন জানালেন। প্রতিপক্ষ দলের রাজনীতি করলে খারাপ, না করলে ভালো- এটা কেমন কথা। এটা আমি বিশ্বাস করি না।
চিঠিতে যা লিখেছেন সমশের মবিন
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বরাবর পাঠানো চিঠিতে সমশের মবিন চৌধুরী লিখেছেন- মাননীয় চেয়ারপারসন, আমার সালাম ও শুভেচ্ছা গ্রহণ করিবেন। আপনি নিশ্চয় অবগত আছেন, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমি গুরুতরভাবে আহত হয়েছিলাম। সে কারণে আমাকে বিভিন্ন সময় দেশে-বিদেশে নানাবিধ চিকিৎসা নিতে হয়েছে। বর্তমানে আমার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটেছে। আমার বর্তমান স্বাস্থ্যগত অবস্থার কারণে আমি অনতিবিলম্বে রাজনীতি থেকে অবসর নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অবসর গ্রহণের প্রেক্ষিতে আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সকল পদ থেকেও পদত্যাগ করলাম। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার স্বাস্থ্যগত সীমাবদ্ধতার মধ্য থেকে মুক্তিযোদ্ধার মূল্যবোধকে সামনে রেখে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার প্রয়াস আমার চিরকাল থাকবে। আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। ধন্যবাদন্তে, সমশের এম চৌধুরী, বীর বিক্রম।
উল্লেখ্য, বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা সমশের মবিন একাত্তরে সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট পদে কর্মরত ছিলেন। মেজর পদে থাকা অবস্থায় তার চাকরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে সমশের মবিন চৌধুরীকে পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়। ২০০৫ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নিয়োগ পান। সেখানে দুই বছর দায়িত্ব পালন শেষে ২০০৭ সালে তিনি অবসরে যান। ২০০৮ সালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমশের মবিন চৌধুরী বিএনপিতে যোগ দেন। প্রথমে চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ও ২০০৯ সালে বিএনপির কাউন্সিলে দলের ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়। সামরিক কর্মকর্তা থেকে আমলা ও পরে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা সমশের মবিন বিএনপির রাজনীতিতে প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয়টি দেখভাল করা নেতাদের মধ্যে প্রধানতম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। গত বছরের শুরুতে তাকে আটকের পর দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে তার একটি মোবাইল ফোনের কথোপকথন ফাঁস হয়। এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তাকে ঘিরে একটি গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল। চলতি বছরের শুরুতে বিএনপি ও শরিকদের টানা অবরোধ-হরতালের মধ্যে নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার হন সমশের মবিন। গত মে মাসে জামিনে মুক্তি পেলেও তারপর অনেকটা আড়ালেই চলে যান তিনি।
‘খালেদা-তারেকের প্রতি অনাস্থায় সমশের মবিনের পদত্যাগ’
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ও তার পুত্র তারেক রহমানের প্রতি অনাস্থার কারণেই সমশের মবিন চৌধুরী বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে এক যৌথ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে আগামী ২রা নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত জনসভাকে সফল করার লক্ষ্যে এ যৌথসভার আয়োজন করা হয়। হানিফ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সহিংসতামূলক কর্মকাণ্ড বিএনপির অনেক নেতাই পছন্দ করেন না। এ সকল কর্মকাণ্ড মেনে না নিয়ে  তারা অস্বস্তিও প্রকাশ করেছেন। তিনি আরও বলেন, বিএনপির অনেক নেতাই মনে করছেন, তারেক রহমান ও খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে বিএনপিকে ঢেলে সাজাতে হবে। এদের দ্বারা আর কখনও বাংলাদেশে কল্যাণমূলক কাজ হবে না। বিএনপির এ সকল কর্মকাণ্ডের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করেই সমশের মবিন চৌধুরী পদত্যাগ করেছেন। তিনি বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলামের ‘ব্যক্তির হত্যাকাণ্ডের দায় বিএনপি নেবে না’ এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা বলেন, জাতি বোঝে, জানে। এটা কাইয়ুমের ব্যক্তিগত লাভের জন্য নয়। এটা ছিল রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। এই রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের জন্য কাইয়ুমকে কে নির্দেশ দিয়েছিল তাকে খুঁজে বের করা দরকার। তিনি বলেন, বিদেশী হত্যাকাণ্ড লন্ডন ষড়যন্ত্র হিসেবে পরিচিত। এটা এখানকার কোন নির্দেশে হয় নাই। লন্ডন থেকে নির্দেশনা আশার কারণেই কাইয়ুম সাহেব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলবো এই ঘটনার বিস্তারিত খুঁজে বের করুন। হানিফ বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার বানচাল ও দেশ বিরোধী প্রচারণা চালানোর জন্য বিএনপি-জামায়াত আন্তর্জাতিক লবিস্ট নিয়োগ করেছে। আমেরিকার ‘একিন ক্যাম্প’ নামক একটি লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করেছে। মাসিক ৪০ হাজার ডলার হিসেবে ৬ মাসের জন্য এই লবিস্ট তারা নিয়োগ করেছে। ৬ মাস পর তাদের কাজের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে এই অর্থ বাড়বে। যৌথ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কর্নেল (অব.) ফারুক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক প্রমুখ।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন গুরুতর অসুস্থ
সিলেট, রবিবার, ২৮ জুন ২০১৫ :: সদ্য কারামুক্ত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী গুরুতর অসুস্থ। মূত্রথলি ও কিডনি জটিলতার পাশাপাশি ডান পায়ের হাড়ের ক্ষয় রোগে ভুগছেন তিনি। চিকিৎসকরা বনানীর বাসায় তার চিকিৎসা দিচ্ছেন।
গত ২২ মে কাশিমপুর কারাগার থেকে অসুস্থ অবস্থায় শমসের মবিন মুক্তি পান। বিকালে অসুস্থ শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, আমি ভীষণ অসুস্থ। পুরোপুরি বিছানায় আছি। ডান পায়ে ব্যথা ও মূত্রথলিতে প্রচণ্ড সমস্যা হচ্ছে। অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ আমিনুল হাসান ও মো. জাহিদের তত্ত্বাবধায়নে বনানী ডিওএইচএস’র বাসায় শমসের মবিনের চিকিৎসা চলছে বলে পরিবারের সদস্যরা জানান।
সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময়ে গত ৮ জানুয়ারি বনানীর বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ শমসের মবিনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। এরপর গাড়ি পোড়ানোসহ একাধিক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
কারাগারে অসুস্থ অবস্থায় সম্প্রতি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়া পর থেকে শমসের মবিন দলের কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারেননি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান অসুস্থ নেতাকে দেখে এসে বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন শমসের মবিন চৌধুরী। বর্তমানে আহত সেই স্থানে হাড়ে ক্ষয় হচ্ছে। এজন্য তিনি ভীষণ ব্যথায় প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছেন।
১৯৯২ সালে সুইজারল্যান্ডের যে হাসপাতালে তার ডান পায়ের অস্ত্রোপচার হয়েছিলো, সেই হাসপাতালে দ্রুত যোগাযোগের জন্য বাংলাদেশের চিকিৎসকরা তাকে পরামর্শ দিয়েছেন।
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা শমসের মবিন বর্তমান সরকারের আমলে দুই দফা কারাভোগ করেন। সর্বশেষ এই বছরের ৭ জানুয়ারি ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট গিবসন গুলশানের কার্যালয়ে অবরুদ্ধ বিএনপি চেয়ারপারসনের সাথে সাক্ষাতের পরদিন রাতে শমসের মবিনকে বনানীর বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন।
সিলেটভিউ২৪ডটকম

No comments

Powered by Blogger.