রিপাবলিকান নেতাদের বিতর্ক- আক্রমণের মুখে তথ্যমাধ্যম

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও টেড ক্রুজ
কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হলো ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তৃতীয় বিতর্ক। জনমত জরিপে সবচেয়ে এগিয়ে এমন ১০ জন প্রার্থী এতে অংশ নেন। বিতর্কের পূর্বনির্ধারিত বিষয় ছিল ‘আপনার অর্থ, আপনার ভোট’। কিন্তু অর্থনীতির বদলে যে প্রসঙ্গটি মুখ্য হয়ে ওঠে, তা হলো তথ্যমাধ্যমের ভূমিকা।
টেক্সাস থেকে নির্বাচিত সিনেটর টেড ক্রুজ সরাসরি অভিযোগ তোলেন, বিতর্ক পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়া সিএনবিসি টিভি নেটওয়ার্কের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল রিপাবলিকান প্রার্থীদের খাঁচার ভেতর ঢুকিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে মজা দেখা। ফ্লোরিডার সিনেটর মার্কো রুবিও ফোড়ন কেটে বলেন, ডেমোক্রেটিক দলের পক্ষে রয়েছে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রচারণা কমিটি (বা সুপারপ্যাক), যার নাম হলো যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার তথ্যব্যবস্থা।
বিতর্ক শেষে রিপাবলিকান পার্টির চেয়ারম্যান রিন্স প্রিবাসও তীব্র ভাষায় সিএনবিসিকে আক্রমণ করেন। এগিয়ে থাকা মনোনয়নপ্রত্যাশী বেন কার্সন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পও প্রশ্নকর্তাদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সম্ভাব্য প্রার্থীদের উত্থাপিত প্রস্তাবের মধ্যে ছিল: প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে সরকারের আয়তন কমানো হবে, মেডিকেইড ও মেডিকেয়ার নামে সরকার পরিচালিত স্বাস্থ্যব্যবস্থা আগাপাছতলা বদলে ফেলা হবে। ডোনাল্ড ট্রাম্প এক কোটি অবৈধ অভিবাসীকে দেশ থেকে তাড়ানো এবং মেক্সিকোর সঙ্গে হাজার মাইল দীর্ঘ দেয়াল তোলার আশ্বাসের পুনরাবৃত্তি করেন। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন ওহাইওর গভর্নর জন কেইশিচ। মেডিকেইড ও মেডিকেয়ার বাতিল করার ব্যাপারে বেন কার্সনের প্রস্তাব অথবা এক কোটি অবৈধ অভিবাসীকে তাড়াতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবের কঠোর সমালোচনা করেন তিনি।
প্রায় ছয় সপ্তাহ জনমত জরিপের শীর্ষে থাকার পর ক্যাসিনো মালিক ও বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী ট্রাম্প এখন দুই নম্বরে। তাঁর স্থান দখল করে নিয়েছেন শল্যচিকিৎসক বেন কার্সন। আগে এঁরা দুজন একে অপরকে নিয়ে ব্যঙ্গ করলেও গতকাল একধরনের সন্ধি ঘোষণা করে খুবই সতর্কতার সঙ্গে কথা বলেন।
বিতর্কের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত ছিল ফ্লোরিডার সাবেক গভর্নর জেব বুশ ও একই রাজ্য থেকে নির্বাচিত সিনেটর মার্কো রুবিওর মধ্যে তপ্ত বাক্যবিনিময়। পাল্লায় এই মুহূর্তে ট্রাম্প ও কার্সনের পরেই রয়েছেন রুবিও। রুবিও সম্প্রতি জানিয়েছেন, তিনি সিনেটর পদে পুনর্নির্বাচনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না, কারণ মার্কিন আইন পরিষদ এখন সম্পূর্ণ অকেজো। সে কথা উল্লেখ করে বুশ খোঁচা দিয়ে বলেন, সিনেট এতই অপছন্দ হলে রুবিওর উচিত হবে অবিলম্বে পদত্যাগ করা। জবাবে রুবিও বলেন, ‘আমাকে আক্রমণ করলে আপনার জনপ্রিয়তা বাড়বে—এ কথা কেউ বলেছে, তাই আপনি আমাকে আক্রমণ করছেন।’
অধিকাংশ পর্যবেক্ষকই একমত, এই তৃতীয় বিতর্কে সরাসরি জিতেছেন এমন কোনো প্রার্থী চিহ্নিত করা যাবে না। রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থীরা মোট ১২টি বিতর্কে অংশ নেবেন। পরবর্তী বিতর্ক হবে উইসকনসিনে, আগামী ১০ নভেম্বর।

No comments

Powered by Blogger.