ক্যাম্পাসের প্রিয় মুখ- সুর আর তালের সঙ্গী by নিজাম সিদ্দিকী

ছোটবেলা থেকেই গান, নাচ, বিতর্কের সঙ্গে পরিচয় উর্মি অতন্দ্রিলার। নিয়মিত অনুশীলন করেই নিজেকে প্রস্তুত করেছেন এসব কিছুতে। ফলে তাঁর দক্ষতার ঝুড়িটাও বেশ ভারী হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে বেগ পেতে হয়নি কোথাও।
স্বীকৃতি মিলেছে প্রচুর। সেই স্কুলজীবন থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত শতাধিক পুরস্কার পেয়েছেন। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস, চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অতন্দ্রিলা। বিতর্ক চর্চার হাতেখড়ি সপ্তম শ্রেণী থেকে। এখনো চর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর একে তিনি মনেপ্রাণে ধারণ করেছেন। বেছে নিয়েছেন সামাজ প্রগতির হাতিয়ার হিসেবে। তাঁর মতে, ‘বিতর্কের প্রসার ঘটাতে চাই তৃণমূল থেকে, যেন আমাদের সমাজে যুক্তিবাদী ও চিন্তাশীল মানসিকতার বিকাশ ঘটে। যার আলোয় আলোকিত হতে পারে আমাদের প্রজন্ম।’
অতন্দ্রিলা নাচ শিখেছেন কৃষ্ণা বিশ্বাসের কাছে। উচ্চাঙ্গসংগীতে তালিম নিয়েছেন ওস্তাদ মিহির লালা ও সুব্রত দাশ অনুজের কাছে। ‘রক্তকরবী’তে শীলা মোমেনের কাছ থেকে রবীন্দ্রসংগীতের তালিম নিচ্ছেন। সংগীত চর্চার পাশাপাশি একধরনের দায়িত্ববোধও জন্মেছে তাঁর মধ্যে। তিনি চান রবীন্দ্র-নজরুলসংগীতের প্রচার ও প্রসারে কাজ করতে। যাতে এসব গান কালের অতলে হারিয়ে না যায়। চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়ে পড়ার কারণ জানাতে গিয়ে অতন্দ্রিলা বলেন, ‘আমার দাদু ছিলেন ডাক্তার। তিনি চাইতেন, তাঁর নাতনিও হোক একজন নামকরা ডাক্তার। তাই যখন বুঝতে শিখলাম তখন থেকেই দাদুর স্বপ্নপূরণের জন্য এগোতে থাকি।’ অতন্দ্রিলা চিকিৎসার ক্ষেত্রে গতানুগতিক পথে হাঁটতে চান না। মেয়েরা বেশির ভাগই গাইনির ওপর বিশেষজ্ঞ হওয়ার আগ্রহ দেখালেও সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চান অতন্দ্রিলা। তিনি সার্জারি অথবা শিশুরোগ নিয়ে কাজ করার কথা ভাবছেন। আরেকটি বিষয় তাঁকে খুব তাড়িত করে। চিকিৎসক হিসেবে শুধু শহরকেন্দ্রিক হয়ে পড়ার প্রবণতা। অতন্দ্রিলা বললেন, ‘এ ধারাকে আমি ভাঙতে চাই। সপ্তাহে এক দিনের জন্য হলেও গ্রামে গিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে আমার।’ বাবা উত্তম কুমার আচার্যের অনুপ্রেরণা আর মা রিন্টু আচার্যের সহযোগিতায় তাঁর এত দূর এগিয়ে আসা। বাবা রেলওয়ে হাসপাতাল কলোনি সিটি করপোরেশন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। মা গৃহিণী। এক ভাই চট্টগ্রাম কলেজে একাদশ শ্রেণীতে পড়ছে।
অতন্দ্রিলা তাঁর শিক্ষাজীবনে সব সময় রেখেছেন মেধার ছাপ। পটিয়ার শশাংকমালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ট্যালেন্টপুলে প্রাথমিক বৃত্তি পান। চট্টগ্রামের ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। চট্টগ্রাম সরকারি হাজী মুহম্মদ মুহসীন কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন।
এ বছরের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে ব্রিটিশ কাউন্সিল আয়োজিত ইংরেজি বই পড়া প্রতিযোগিতায় ঊর্মি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রথম হয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.