জোর করে বাড়ি দখল করলেন আ.লীগ নেতা

মাগুরার মহমঞ্চদপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী প্রয়াত এক শিক্ষকের বসতবাড়ির জমি দখলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের ছেলে সঞ্জয় দত্ত থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহমঞ্চদপুর আরএসকেএইচ ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সুকুমার দত্ত চার বছর আগে মারা যান। উপজেলা পরিষদ-সংলগ্ন নিজ বাড়িতে তিনি সস্ত্রীক বসবাস করতেন। এক ছেলে ও দুই মেয়ে প্রায় দুই দশক ধরে ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। ছোট ছেলে সঞ্জয় দত্ত মস্কোতে চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়ালেখা শেষ করে দেশে ফেরার পর কয়েক বছর ধরে তিনি মাগুরা শহরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কাজ করছেন। সুকুমার দত্ত মারা যাওয়ার আগে তাঁর বন্ধু গোলাম রাব্বানীর কাছে বসতবাড়ির ৫৪ শতাংশ জমির ২২ শতাংশ বিক্রি করে যান। গত ৩০ নভেম্বর গোলাম রাব্বানী রাতের আঁধারে জমির ৮-১০ শতাংশ রেখে বাকিটুকুতে সীমান প্রাচীর তুলে দখল করে নেন।
গত সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, সুকুমার দত্তের একটি আধা পাকা ঘর বাকি রেখে অবশিষ্ট জমির চারপাশে সীমানা প্রাচীর তোলা হয়েছে। বাড়ির আঙিনার পাশের পুকুরটি বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। কিছু গাছপালাও কাটা হয়েছে।
জমি দখলে নেওয়ার কথা স্বীকার করে গোলাম রাব্বানী জানান, সুকুমার তাঁর ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত বন্ধু ছিলেন। সুকুমারের কাছ থেকে তিনি ২২ শতাংশ জমি কেনেন। পরে সুকুমার মারা যাওয়ার পর তাঁর বড় ছেলে সমীর ভারত থেকে এসে তাঁকে বাকি জমি কিনে নিতে অনুরোধ করেন। তিনি কয়েক কিস্তিতে ১০ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু হঠাৎ জমি নিবন্ধন না দিয়ে সমীর ভারতে চলে যান। টাকা পরিশোধের সব প্রমাণপত্র তাঁর কাছে রয়েছে। তবে এর মধ্যে যদি সঞ্জয়ের জায়গা থাকলে তিনি ছেড়ে দেবেন।
সঞ্জয় দত্ত বলেন, ‘এ দেশে ওই বাড়ি ছাড়া আমার কিছুই নেই। আমার বৃদ্ধ মা আরতী দত্ত ওই বাড়িতেই থাকেন। দাদাকে টাকা দেওয়ার অজুহাতে দুই-তিন বছর ধরে আমাদের সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করছিলেন চেয়ারম্যান। দাদা তাঁকে জমি লিখে দিয়েছেন, এমন দলিলও তিনি দেখাতে পারেননি।’ সঞ্জয় আরও বলেন, তিনি তাঁর বাবার সম্পত্তির অর্ধেক মালিক। ভাই জমি বিক্রি করলেও তিনি অর্ধেক পাবেন। অথচ তাঁর সম্পত্তিও দখল করে নেওয়া হয়েছে। থানায় অভিযোগ করার পরও পুলিশ দখল-প্রক্রিয়া বন্ধ করেনি।
ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মহমঞ্চদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, তাঁরা জানেন চেয়ারম্যান তাঁর বন্ধুর কাছ থেকে ২২ শতাংশ জমি কিনেছিলেন। অথচ এখন সব জায়গাই দখল করে নিয়েছেন।
মহমঞ্চদপুর থানার ওসি ছগির মিঞা বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে বলেন।

No comments

Powered by Blogger.