অনুদানের চেক দিলেন প্রধানমন্ত্রী-আগুনের এই ধ্বংসাত্মক খেলা দুর্ভাগ্যজনক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গার্মেন্টে অগ্নিকাণ্ডে প্ররোচনাকারীদের খুঁজে বের করতে হবে। এ জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এ ধরনের ধ্বংসাত্মক খেলা দুর্ভাগ্যজনক।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার তাঁর কার্যালয়ে তাজরীন গার্মেন্টে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের কাছে চেক হস্তান্তরকালে এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, 'যারা টাকার বিনিময়ে গার্মেন্ট কারখানায় আগুন দিতে শ্রমিকদের প্ররোচিত করছে, তাদের খুঁজে বের করতে হবে।' তিনি আশুলিয়ার তাজরীন গার্মেন্টের মতো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ভবিষ্যতে আর যেন না ঘটে, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
তাজরীন গার্মেন্টে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের হাতে শেখ হাসিনা চেক তুলে দেওয়ার সময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়লে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত ১১০টি পরিবারের মধ্যে ৪৩টি পরিবারের সদস্যদের প্রত্যেকের হাতে ছয় লাখ টাকা করে চেক প্রদান করেন। গত ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার তাজরীন গার্মেন্টে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এসব শ্রমিক নিহত হয়।
স্বজনহারাদের সান্ত্বনা দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, 'আশুলিয়ায় অগ্নিকাণ্ড ও চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে গার্ডার ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকার সাধ্যমতো সহায়তা করবে। আপনাদের জীবন ধারণে যেন কোনো সমস্যা না হয়, এ জন্য সরকার প্রয়োজনীয় সব কিছু করবে। আমি জানি, যারা জীবন হারিয়েছে তাদের ফেরত দেওয়া সম্ভব নয়; তবে আমরা আপনাদের পাশে আছি এবং সাহায্য অব্যাহত থাকবে।'
শেখ হাসিনা আর্থিক সহায়তা প্রদানে তাঁর আগের ঘোষণা অনুযায়ী আজ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বিজিএমইএ, ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএবি) এবং তৈরি পোশাক আমদানিকারক, হংকংভিত্তিক প্রতিষ্ঠান লি অ্যান্ড ফাঙ্গের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ৪৩টি পরিবারের মধ্যে দুই কোটি ৫৮ লাখ টাকার চেক বিতরণ করা হয়। যারা গতকালের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেনি জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সেসব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ছয় লাখ টাকা করে পৌঁছে দেওয়া হবে।
সূত্র আরো জানায়, অগ্নিকাণ্ডে যারা আহত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামে ফ্লাইওভারের গার্ডার ধসের পড়ার পর পুলিশ ক্যাম্পে আগুন দিয়ে ভাঙচুর চালিয়ে যারা সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়েছে, তাদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ঘটনায় আহত আরো অনেক লোককে উদ্ধার করা যেত যদি বিক্ষোভকারীরা উদ্ধার অভিযানে যোগ দিত। এটা সাধারণ মানুষের কাজ নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড যারা ঘটিয়েছে তাদের সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে।
শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এম ইস্রাফিল আলম, সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভঁূইয়া, এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট কাজী আকরাম আহমেদ, বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট এম শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিএবি প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলাম মজুমদার, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব শেখ মো. ওয়াহিদ-উজ-জামান ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.