করাচি ও কোয়েটায় সহিংসতায় নিহত ৪১

পাকিস্তানের করাচি ও কোয়েটা নগরীতে গত কয়েক দিনের সহিংসতায় ৪১ জন নিহত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধারণা, পাকিস্তানি তালেবানই এসব হামলা চালিয়েছে। এ নিয়ে শহর দুটিতে তালেবানপন্থী ও বিরোধীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।


মহররম মাসের প্রথম দিন গতকাল শুক্রবারে যাতে কোনো ধরনের সহিংসতা না ঘটে, সে লক্ষ্যে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিন্ধু প্রদেশের রাজধানী করাচি এবং বেলুচিন্তানের কোয়েটা নগরীতে রাস্তায় মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। একই সঙ্গে শহর দুটিতে সন্ধ্যা ৭টা থেকে সারা রাত মোবাইল ফোনের সংযোগ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সহিংসতায় নিহতদের মধ্যে সংখ্যালঘু আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকও রয়েছে। এ প্রসঙ্গে আদিবাসী পাখতুন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বকারী আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির (এএনপি) প্রধান শাহি সৈয়দ বলেন, 'চরমপন্থীরা আমাদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে।' তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তালেবানের হামলার লক্ষ্য মূলত এএনপি নয়, করাচিভিত্তিক রাজনৈতিক দল মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট দল (এমকিউএম)।
নারী শিক্ষার পক্ষে সোচ্চার কিশোরী মালালার ওপর হামলার জন্য তালেবানের কড়া সামালোচনা করে এমকিউএম। দলটির প্রধান আলতাফ হোসেন বলেছেন, তালেবান পাকিস্তানকে গুহা যুগের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। জনগণ জিন্নাহ প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান চায়, নাকি তালেবানের আদর্শের পাকিস্তান চায়_এ বিষয়ে দলটি একটি গণভোট আয়োজনেরও প্রস্তাব দেয়। এর পরই তালেবান করাচিকে এমকিউএম 'মুক্ত' করার ঘোষণা দেয়। মূলত সেখান থেকেই সহিংসতার শুরু।
এদিকে গতকাল শুক্রবার ছিল মহররম মাসের প্রথম দিন। এ দিনটিতে যে কোনো ধরনের সহিংসতা এড়াতে করাচি ও কোয়েটায় দিনের বেলায় মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সিন্ধু হাইকোর্টের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, করাচির রাস্তায় যেসব মোটরসাইকেল চলে এর ৯৯ শতাংশই অনিবন্ধিত। এসব মোটরসাইকেলের বেশির ভাগই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়। তবে সিন্ধু হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মুশির আলম বলেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণায়ের এ সিদ্ধান্তে অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ অনেকের চলাচলের জন্য প্রধান বাহন মোটরসাইকেল। মুশির আলমের নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার সিন্ধু হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার মানসুর খান আদালতে সরকারি আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে একটি আবেদন করেন। গতকাল শুক্রবার ওই আবেদনের শুনানি হয়। সরকারি আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে বেলুচিস্তান হাইকোর্টেও একটি আবেদন করা হয়েছে। সূত্র : ডন, হিন্দুস্তান টাইমস।

No comments

Powered by Blogger.