বাজারদর- শীতের সবজির সরবরাহ ভালো, দাম কমছে না

সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে—শীতের সবজি নিয়ে বিক্রেতাদের এমন কথার প্রতিফলন নেই রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে গতকাল শুক্রবার বিভিন্ন বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ ভালো থাকলেও দাম ছিল আগের মতোই। অর্থাৎ সরবরাহ বাড়লেও দাম কমেনি।


মাছ ও মাংসের দামেও তেমন হেরফের হয়নি। তবে পেঁয়াজের দাম বাজারভেদে বেড়েছে। সবজির দামেও বাজারভেদে পার্থক্য দেখা গেছে।
মিরপুরের কাজীপাড়া বাজারে শীতের সবজি প্রতিটি ফুলকপির দাম ছিল ২৫ টাকা। অথচ অল্প দূরত্বের শেওড়াপাড়া বাজারে প্রতিটি ফুলকপির দাম ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। কাছাকাছি দুই বাজারে দামের এই তারতম্যের কারণ জানতে চাইলে শেওড়াপাড়া বাজারের ৫ নম্বর দোকানের বিক্রেতা মোহাম্মদ মনির বললেন, ‘মান ও আকারের তারতম্যের কারণে দামের এই ব্যবধান।’
বড় কাঁচাবাজার হিসেবে পরিচিত কারওয়ান বাজারে দেখা গেল, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া বাজারের মতো একই আকারের প্রতিটি ফুলকপির দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা।
এই তিন বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শীতের সবজির মধ্যে চলতি সপ্তাহে ফুলকপি ও টমেটোর দাম কিছুটা চড়া। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি টমেটো ছিল ৭০ টাকা বা এর কম। গতকাল এর দাম ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। দাম বাড়ার কারণ সম্পর্কে কয়েকজন বিক্রেতা বলেন, টমেটো দ্রুত পচনশীল পণ্য। তবে বাজারে সবজির চাহিদা ও জোগানের মধ্যে বড় ঘাটতি নেই।
কাজীপাড়া বাজারের বিক্রেতা আল আমিন বলেন, ‘গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত নির্ঘুম কাটিয়ে কারওয়ান বাজার থেকে শীতের টাটকা সবজি কিনে আনি। কিন্তু দিন শেষে অনেক সবজিই অবিক্রীত থাকে। তবে শুক্রবার ক্রেতা বেশি থাকে।’
তিন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি শিম ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা, বেগুন প্রকারভেদে ৪০ থেকে ৫০ , পেঁপে ২০ থেকে ২৫, পটল ৩০ থেকে ৪০, মুলা ৩০ থেকে ৪০, বরবটি ৯০ থেকে ১০০, বাঁধাকপি প্রতিটি ৩০ থেকে ৩৫, আলু প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজের দাম বাজার ও মানভেদে খুচরা পর্যায়ে কেজিতে আরও এক থেকে তিন টাকা বেড়েছে। কোনো কোনো বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম হয়েছে ৫০ টাকা। কোথাও এর দাম ৪৫ টাকা আবার কোথাও ৪৮ টাকা। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম প্রায় ৩১ শতাংশ বেড়েছে।
টিসিবি জানায়, মূল্য বৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে খোলা সয়াবিন তেল, পাম অয়েল। দাম কমার তালিকায় রয়েছে কেবল ডিম। হালিপ্রতি ডিমের দাম পাঁচ-ছয় টাকা কমেছে।
মাছ ও মাংস
বাজার ও মাছের আকারভেদে গতকাল প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, কাতলা মাছ ২৫০ থেকে ৩৫০, চিংড়ি ৩৫০ থেকে ৫০০, ইলিশ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত মাসের শেষ সপ্তাহে গেল কোরবানির ঈদ। তাই অনেকের ঘরে কোরবানির মজুদ মাংস এখনো শেষ না হলেও মাংসের বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.