মুঠোফোনে শিক্ষা নিচ্ছেন আফগান নারীরা

আফগানিস্তানে শিক্ষাবঞ্চিত নারীদের জন্য একটি নতুন কার্যক্রম চালু হয়েছে। যুদ্ধের কারণে মৌলিক শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত নারীরা এই কার্যক্রমের আওতায় মুঠোফোন ব্যবহারের মাধ্যমে পড়াশোনা করতে পারবেন। আর যে মুঠোফোনের মাধ্যমে নারীরা শিক্ষা নেবেন, তাকে বলা হচ্ছে উস্তাদ বা মুঠোফোন শিক্ষক।


ওই কার্যক্রমে আফগানিস্তানের দারি ও পশতু উভয় ভাষাতেই পাঠ্যসূচি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি এতে গণিতও রাখা হয়েছে। উস্তাদ মুঠোফোনে লেখা, উচ্চারণ ও বাক্য গঠনের মতো পাঠগুলো অডিও-ভিডিওর মাধ্যমে শেখানো হচ্ছে। ছাত্রীদের মধ্যে এগুলো বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে। কাবুলের একটি শ্রেণীকক্ষের মেঝেতে গালিচার ওপর বসে নারীরা লেখাপড়া শিখছেন।
মুজগান নাজারি (১৮) নামের এক নারী বলেন, তালেবান শাসনামলে ছাত্রীদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সে সময় তার স্কুলে ভর্তির বয়স হয়েছিল। তার বাবাও মেয়েদের স্কুলে পাঠানোর বিরুদ্ধে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘নারীদের জন্য এই মৌলিক শিক্ষাকেন্দ্রের কথা জানতে পেরে আমি আমার বাবাকে বুঝিয়ে রাজি করালাম এবং তিনি আমাকে প্রতিদিন ক্লাস করার অনুমতি দিয়েছেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সহযোগিতায় এই কার্যক্রম যৌথভাবে পরিচালনা করছে একটি বাণিজ্যিক সংস্থা ও আফগান শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আফগান আইটি (তথ্যপ্রযুক্তি) কোম্পানি পাইওয়াসটুন উস্তাদ মুঠোফোন সফটওয়্যারটি তৈরি করেছে। এটি তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্র ৮০ হাজার ডলার সহায়তা দিয়েছে।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হাজার হাজার মেয়ে এখন বিদ্যালয়ে যাওয়া সত্ত্বেও আফগানিস্তানে নারী সাক্ষরতার হার মাত্র ১২ দশমিক ৫ শতাংশই রয়ে গেছে। অথচ দেশটিতে পুরুষ সাক্ষরতার হার ৩৯ দশমিক ৩ শতাংশ।
পাইওয়াসটুন কোম্পানি এর আগে ‘প্রতিটি শিশুর জন্য একটি ল্যাপটপ’ কর্মসূচির আওতায় কাবুল, কান্দাহার, হেরাত, বাগলান ও জালালাবাদের নারী ও শিশুদের মধ্যে তিন হাজার ল্যাপটপ বিতরণ করেছে।
পাইওয়াসটুনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাইক ডওসন বলেন, ‘ভিডিও ও অডিও ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা শিক্ষাদানের বিষয়টিকে সহজ করতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘যেকোনো কম্পিউটারের চেয়ে মুঠোফোন সস্তা এবং মানুষ এর সঙ্গে পরিচিত। এ ছাড়া এর রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা পদ্ধতিও অনেক সহজ। আমরা যত বেশি সম্ভব মানুষকে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছি।’ এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.