কারজাইয়ের ঘুম কেড়ে নিয়েছে মালালা

হাক্কানি সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু বা সোয়াত উপত্যকায় তালেবানের মেশিনগানের তাণ্ডব; এরকম কোনো কিছু কী এভাবে রাতের ঘুম কেড়ে নিতে পেরেছিল আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের? যেভাবে ইদানীং কেড়ে নিচ্ছে ছোট্ট মালালা, হামিদ কারজাইয়ের আট মাসের শিশুকন্যা।


সম্প্রতি ভারতে পাঁচ দিনের সফরে এসে সবার মন কেড়ে নেয় ভারতের কনিষ্ঠতম এ রাষ্ট্রীয় অতিথি। এভাবেই পাকিস্তানের সাহসীকন্যা মালালার পাশাপাশি আফগান প্রেসিডেন্টকন্যা গণমাধ্যমের খবর হলো।
ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা গতকাল শুক্রবার সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, দিনে ঘুমালেও রাতে দুষ্টুমির কমতি নেই মালালার। চেনা জায়গা পরিবর্তনে (দিলি্ল ও মুম্বাইয়ে এসে) তা আরো বেড়ে যায়। ফলে গোটা দিনের কূটনৈতিক বৈঠকের পরে পালা করে রাত জাগতে হয় কারজাই দম্পতিকে। মুম্বাইয়ে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক এবং দিলি্লতে প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা- সব কিছুর মধ্যেও শিশুকন্যাকে যথেষ্ট সময় দিয়েছেন কারজাই। মেয়ে কোলে হোটেলের ঘরে পায়চারি করেছেন দায়িত্বশীল পিতার মতোই!
১৩২ বছর আগে মালালা নামে এক বীরাঙ্গনা আফগানিস্তানের মাইওয়ান্দ গ্রামে হিজাব খুলে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছিলেন। কালক্রমে এই নামটি সে দেশে কিংবদন্তি হয়ে ওঠে। সম্প্রতি তালেবানের হুমকি অগ্রাহ্য করে পড়াশোনার অধিকারে সরব হওয়ায় তালেবানের গুলি খেতে হয়েছে পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাইকে। আফগানিস্তানেও রয়েছেন এমন অনেক মালালা, যাঁরা আজ নারীশক্তির প্রতীক। মৌলবাদী ফতোয়ার বিরুদ্ধে লড়ছেন লেখিকা, সমাজকর্মী, ছাত্রীরূপী অনেক মালালা-ই। তাই হামিদ কারজাই-জিনাত কুরেশি দম্পতির দ্বিতীয় সন্তানের নাম খুঁজতে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি।
৫৫ বছর বয়সী হামিদ কারজাই বিয়ে করেন ১৯৯৯ সালে। ২০০৭ সালে হয় প্রথম পুত্র সন্তান, নাম মিরওয়াইজ। আট মাস আগে তাঁদের ঘরে আসে মালালা। দুজনের জন্মই নয়াদিলি্লতে।
ভারতে নিযুক্ত আফগান দূতাবাস সূত্র জানায়, হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ছাত্রাবস্থা থেকেই। ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৩ পর্যন্ত তিনি শিমলায় কাটিয়েছেন। হিমাচল প্রদেশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। হিন্দি বলতে পারেন মাতৃভাষার মতোই। ফলে তাঁর পরিবারের যেকোনো ঘটনাতেই জড়িয়ে থাকে ভারত। সেই জন্মভিটেতেই প্রথম বিদেশ সফর হয়ে গেলে ছোট্ট মালালার। সূত্র : আনন্দবাজার।

No comments

Powered by Blogger.