আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে নিহত এক

ঢাকার আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের ধনাইদ এলাকায় গতকাল শনিবার পুলিশের গুলিতে রনি (৩৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ সময় রিপন (৩৩) নামের আরেক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ঘটনাটি নিয়ে পুলিশ ও হতাহত ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।


ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দাবি, গাজীপুরের কাশিমপুরের বাগবাড়ী এলাকা থেকে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী মাইক্রোবাসযোগে ঢাকায় ফিরছে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবির একটি দল ধনাইদ এলাকায় অবস্থান নেয়। বিকেল পাঁচটার দিকে দুটি মাইক্রোবাসযোগে সন্ত্রাসীরা ফেরার পথে গতিরোধ করা হয়। এ সময় মাইক্রোবাস থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করা হলে পুলিশও পাল্টা গুলি করে। এ সময় সন্ত্রাসীরা মাইক্রোবাস নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ পিছু ধাওয়া করে আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ী এলাকায় গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় নয়জনকে আটক করে। তাদের মধ্যে রনি ও রিপনকে গুরুতর আহত অবস্থায় এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক রনিকে মৃত ঘোষণা করেন। রিপনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি রিভলবার, ১৬টি গুলি, একটি চাপাতি ও তিনটি ছোরা উদ্ধার করেছে। এ সময় সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের কাউন্দিয়া গ্রামের মোহামঞ্চদ হোসেন (২০), মো. মামুন (২৫), আলামিন (২০), রুবেল মিয়া (২২), রিপন (৩৩), রনি মিয়া (১৯), মেহেদি হাসান (২৬) এবং শেরপুরের মো. হারুনকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে কাশিমপুরের বাগবাড়ী এলাকার নুরুন্নাহার নামের এক নারী দাবি করেন, বাগবাড়ী এলাকায় তাঁদের ৮২ শতাংশ জমি রয়েছে। স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তাঁর আত্মীয়স্বজন ওই জমি দখল করে রেখেছিলেন। ২০০৯ সালে অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে ওই জমি উদ্ধার করা হয়। মাঝেমধ্যে আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে তিনি সেই জমি দেখাশোনা করতে যেতেন। তিনি বলেন, ‘গতকাল সকালে আমার ভাগনে নয়ন ও তার বন্ধুদের নিয়ে বাগবাড়ী যাই। সেখান থেকে ফেরার পথে ধনাইদ এলাকায় সাদা পোশাকধারী পুলিশ আমাদের ওপর গুলি চালায়।’ নুরুন্নাহারের দাবি, তাঁদের কাছে কোনো ধরনের অস্ত্র ছিল না।
অন্যদিকে খলিলুর রহমান নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, ধনাইদ এলাকায় তাঁর চার একর জমি আছে। নুরুন্নাহার একদল সন্ত্রাসীকে ভাড়া করে এনে ওই জমি দখল করে তিন দিন ধরে সীমানাপ্রাচীর দিচ্ছিলেন।
ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক শাহীন শাহ্ পারভেজ দাবি করেন, সন্ত্রাসীরা পুলিশের ওপর প্রথম গুলি চালায়। পুলিশ পাল্টা গুলি চালালে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, ‘ওই ব্যক্তিরা ঠিক কী ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য কাশিমপুরে গিয়েছিলেন, তা আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে তাঁদের কাছে অবৈধ অস্ত্র আছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হয়।’

No comments

Powered by Blogger.