সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলার পরিকল্পনা!

মালালাকে নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের ব্যাপক প্রচারে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। তাই এবার গণমাধ্যমের ওপর হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে তারা। মালালার প্রতি সহমর্মিতা এবং তালেবানের নিন্দা প্রকাশের জেরে সংবাদ-সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সাংবাদিকদের 'শায়েস্তা করার'


নির্দেশ জারি করেছেন দলের প্রধান হাকিমুল্লাহ মেহসুদ।
বিবিসি উর্দু জানায়, টিটিপি প্রধান হাকিমুল্লাহ মেহসুদ তাঁর অনুসারীদের পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে অবস্থিত মিডিয়া গ্রুপের ওপর হামলার 'বিশেষ নির্দেশ' দিয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মেহসুদ ও তাঁর অনুসারী নাদিম আব্বাসের টেলিফোন কথোপকথনে আড়ি পেতে জানতে পারেন, আব্বাসকে মিডিয়া সংস্থাগুলোর ওপর হামলার নির্দেশনা দিয়েছেন মেহসুদ। করাচি, লাহোর, রাওয়ালপিণ্ডি, ইসলামাবাদসহ অন্যান্য শহরের স্থাপনাগুলোতে হামলার নির্দেশ দেন মেহসুদ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, মেহসুদের হুমকির পর পাকিস্তানজুড়ে গণমাধ্যমের দপ্তরগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এসব স্থানে পুলিশের সংখ্যা বাড়িয়েছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রয়োজনে অতিরিক্ত বাহিনীও মোতায়েন করা হবে। ইসলামাবাদের চিফ কমিশনার ও চার প্রদেশের প্রধান সচিবদের মিডিয়া গ্রুপের প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে নিরাপত্তা উদ্বেগের বিষয়টিই জানানো হবে। এ ছাড়া তালেবানের প্রকাশ্যে নিন্দাকারী ধর্মীয় নেতাদেরও সতর্ক করা হয়েছে।
সোয়াত উপত্যকার মিংগোরায় গত মঙ্গলবার স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে মালালাকে গুলি করে টিটিপির জঙ্গিরা। এ ঘটনায় পাকিস্তানজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হয় গণমাধ্যমগুলোতে। মালালার শারীরিক অবস্থা, গত বছরই তার শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্তি, নারীশিক্ষার পক্ষে সোচ্চার ব্লগার হিসেবে তার আন্তর্জাতিক খ্যাতি, ২০০৭-২০০৯ সাল পর্যন্ত তালেবানদের নিয়ন্ত্রণে অবরুদ্ধ সোয়াতে তার সাহসী ভূমিকা_সবই উঠে আসে গণমাধ্যমের খবরে। তালেবানের নিন্দায় রাস্তায় নেমে আসে মানুষ। এসবই টিটিপিকে ক্ষিপ্ত করে।
মালালার হত্যাচেষ্টার ঘটনায় তদন্ত চলছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কাছে টিটিপি সদস্যরাও বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেছেন। নিউ ইয়র্ক ডেইলি নিউজ টিটিপি মুখপাত্র সিরাজুদ্দিন আহমদের বরাত দিয়ে জানায়, কয়েক মাস আগে মালালাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দুই মাস ধরে তারা মালালার স্কুলে যাওয়া-আসার পথের ওপর নজরদারি করে। এর মধ্যেই তিন দফা তাকে হুঁশিয়ার করা হয়। শেষবার মালালাকে সতর্ক করা হয় ঘটনার এক সপ্তাহ আগে। মালালা ছাড়া তার শিক্ষক বাবা জিয়াউদ্দিন ইউসুফজাইও ২০০৭ সাল থেকেই তালেবানের হিটলিস্টে আছেন। জিয়াউদ্দিন তালেবানবিরোধী শান্তি জিরগার সদস্য ছিলেন। সূত্র : দ্য নিউজ, হিন্দুস্তান টাইমস।

No comments

Powered by Blogger.