প্রধান বাজার সাগরিকা- নগরে বসছে আটটি পশুর হাট

নগরে এবারও কোরবানির ঈদের প্রধান বাজার সাগরিকা। এ ছাড়া নগরের আরও সাতটি স্থানে বসবে কোরবানি পশুর হাট। জিলহজ মাসের প্রথম দিন থেকে শুরু হবে বেচাকেনা। চলবে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত। এরই মধ্যে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন এলাকা থেকে পশু আনার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।


নগরের অন্য বাজারগুলো হচ্ছে, বিবিরহাট, কর্ণফুলী, সল্টগোলা, স্টিলমিল, কমল মহাজন হাট ও পতেঙ্গা উচ্চবিদ্যালয় মাঠ। এ ছাড়া ধনিয়ালাপাড়া আসমা খাতুন উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বসবে নগরের একমাত্র ছাগলের হাট। এসব বাজার থেকে সিটি করপোরেশন প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা আয় করতে পারবে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এ ছাড়া নগরের বাইরে বড় পশুর হাট বসবে হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদ ও সাতকানিয়া উপজেলার কেরানিহাটে।
সিটি করপোরেশনের ভূমি কর্মকর্তা আহমদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘অস্থায়ী এসব বাজার থেকে সিটি করপোরেশন প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা আয় করতে পারবে বলে আমরা আশা করছি। ইতিমধ্যে কর্ণফুলী গরুর বাজার এক কোটি ৪৫ লাখ এবং বিবিরহাট বাজার এক কোটি ২৭ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে।’
জানা গেছে, আইনি জটিলতার কারণে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এ বছর বিবিরহাট গরুর বাজার স্থায়ীভাবে ইজারা দিতে পারেনি। ফলে কোরবান উপলক্ষে সেটি অস্থায়ী ভিত্তিতে ইজারা দেওয়া হয়। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বিবিরহাট ও কর্ণফুলীসহ সড়কের আশপাশের হাটগুলো শুরুর দিকে সাপ্তাহিক দিন মেনে বসবে। তবে শেষদিকে এ ধরনের কোনো বিধি-নিষেধ থাকবে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারের বাজারেও দেশীয় গরুর সরবরাহ বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে কুষ্টিয়া এলাকা থেকে আসবে সবচেয়ে বেশি গরু। ইতিমধ্যে তাদের প্রতিনিধিরা সাগরিকা বাজারে জায়গার চাহিদা দিয়েছে বলে ইজারাদার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা গরুর বেশির ভাগই বিক্রি হয় সাগরিকা বাজারে। এর বাইরে শাহ আমানত সেতুসংলগ্ন কর্ণফুলী বাজারে দক্ষিণ চট্টগ্রামের গরু তুলনামূলকভাবে বেশি পাওয়া যায়। তবে এবার সাগরিকাসহ সব বাজারেই দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও উত্তর চট্টগ্রামের গরুর ভালো সরবরাহ থাকবে বলে গরু ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
পটিয়ার গরু ব্যবসায়ী আবদুস সালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কুষ্টিয়া থেকে বড় আকারের গরু আসে প্রতিবছর। তা দেখে স্থানীয় লোকজনও সেসব প্রজাতির গরু মোটা-তাজা করছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। ফলে এবার বাজারে এসব গরু দেখা যাবে।’ তা ছাড়া স্থানীয় জাতের গরুও বাজারে আসবে বলে জানান তিনি।
নগরের স্টিলমিল বাজারে গত তিন বছর ধরে গরুর সরবরাহ ক্রমশ বাড়ছে। ফলে সিটি করপোরেশনে এসব বাজারের ইজারাও বাড়ছে। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শেষ কয়েক দিন সাগরিকার মতো এ বাজারেও টানা বেচাকেনা হয়। ফলে ক্রেতাদের কাছে বাজারটির চাহিদা বাড়ছে।
এসবের বাইরে এবার প্রথমবারের মতো ধনিয়ালাপাড়া আসমা খাতুন উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ছাগলের হাট বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, এত দিন ধনিয়ালাপাড়া সড়কের পাশে ছাগলের হাট বসত। এতে সাধারণ পথচারীদের পাশাপাশি ভারী যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হতো। এবার বেচাকেনা আরও সাবলীল করতেই আলাদাভাবে ছাগলের বাজার বসানো হচ্ছে বলে জানান সিটি করপোরেশনের ভূমি কর্মকর্তা আহমদুল হক।
চট্টগ্রাম শহরের বাইরে সবচেয়ে বড় পশুর হাটটি বসবে হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদে। চট্টগ্রাম-হাটহাজারী সড়কের দুই পাশ, চৌধুরী হাট রেলস্টেশন এবং ফতেয়াবাদ উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় এ হাট বসছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় গরুর বাজার বসে সাতকানিয়া উপজেলার কেরানিহাটে। এরপর দ্বিতীয় বড় বাজারটির আয়োজন করা হয় পটিয়া আদর্শ স্কুল মাঠে। তবে এসব বাজারের বাইরেও উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসনের উদ্যোগে একাধিক বাজার বসবে বলে জানা গেছে।

No comments

Powered by Blogger.