নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস-মালির উত্তরাঞ্চল পুনরুদ্ধারে সামরিক হামলার পক্ষে জাতিসংঘ-৬০০ ডলারে শিশু কেনাবেচা!

ইসলামপন্থী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত মালির উত্তরাঞ্চলে সামরিক অভিযান চালানোর ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছে জাতিসংঘ। গত শুক্রবার নিরাপত্তা পরিষদে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাস হয়েছে। অভিযানের বিস্তারিত পরিকল্পনা তৈরি করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ৪৫ দিন সময় দিয়েছে পরিষদ।


সামরিক অভিযানের বিস্তারিত পরিকল্পনা তৈরির জন্য পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর অর্থনৈতিক জোট (ইকোয়াস), আফ্রিকান ইউনিয়নের (এইউ) সঙ্গে কাজ করতে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদ। ৪৫ দিন পর অভিযানের বিস্তারিত পরিকল্পানটি জমা দেওয়ার পর নিরাপত্তা পরিষদে সেনা অভিযানের অনুমতি-সংক্রান্ত আরেকটি প্রস্তাব তোলা হবে। পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে চলতি বছরের শেষ নাগাদ সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শুক্রবার পাস হওয়া প্রস্তাবে সামরিক অভিযান চালানোর কথা ছাড়াও মালির বর্তমান সরকার ও দেশের উত্তরাঞ্চল নিয়ন্ত্রণকারী তুয়ারেগ এবং আল-কায়েদা সমর্থিত ইসলামপন্থী বিদ্রোহীদের মধ্যে আলোচনা শুরুর কথা বলা হয়েছে। ওই এলাকায় আল-কায়েদা ইন দি ইসলামিক মাগরেব (একিউআইএম) ও অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীর অনুপ্রবেশ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাবটির খসড়া তৈরি করেছে ফ্রান্স।
ইসলামপন্থী বিদ্রোহীদের দমন করতে চলতি বছর মার্চে মালির সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। কিন্তু বিদ্রোহীদের দখলে থাকা উত্তরাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি তারা। বিশ্ব সম্প্রদায় অনেক দিন ধরেই ওই এলাকায় সামরিক অভিযান চালানোর অনুমতি দিতে জাতিসংঘকে অনুরোধ করছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত গুয়াতেমালার দূত এবং নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান প্রেসিডেন্ট গার্ট রোসেনথাল বলেন, 'মালির উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। ইসলামপন্থীরা সেখানে শরিয়া আইন জারি করেছে। জরুরি ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো প্রয়োজন।'
এদিকে মালি থেকে ঘুরে আসার পর জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিভাগের সহকারী মহাসচিব ইভান সিমোনোভিচ জানিয়েছেন, সেখানে বিদ্রোহীরা ৬০০ মার্কিন ডলার দিয়ে শিশু কেনাবেচা করছে। বিদ্রোহীরা ওই সব শিশুকে যুদ্ধে ব্যবহার করছে।
এক সপ্তাহ আগে মালি থেকে ফিরেছেন সিমোনোভিচ। তাঁর ভাষ্যমতে, যুদ্ধের জন্য ইসলামপন্থী বিদ্রোহীরা শিশু যোদ্ধাদের ব্যবহার করছে। ৬০০ ডলার দিয়ে তারা একেকটি শিশু কিনে যুদ্ধে ব্যবহার করে। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, উগ্রপন্থীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় জোরপূর্বক বিয়ে, পতিতাবৃত্তিকে বাধ্য করা এবং ধর্ষণের ঘটনাও বাড়ছে। এ ছাড়া এক হাজার ডলারেরও কম মূল্যে নারীদের বিক্রি করা হয়। সূত্র : বিবিসি, এএফপি, টেলিগ্রাফ।

No comments

Powered by Blogger.