রাজ্যসভায় শপথ নিলেন টেন্ডুলকার

তাজমহল। বলা হয়ে গেছে। এভারেস্ট, আইফেল টাওয়ার- এসবও পুরনো শচীন টেন্ডুলকারের জন্য। এত দিন পর নতুন একটা বিশেষণ যোগ হলো সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যানের নামের পাশে- নেতা! আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শততম সেঞ্চুরির প্রথম নজির গড়ার কিছুদিন পরই রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন।


তবে ব্যস্ততার কারণে শপথ নেওয়া হয়ে ওঠেনি। সেই মাহেন্দ্রক্ষণটিও এলো গতকাল। রাজ্যসভার প্রধান ও ভাইস প্রেসিডেন্ট হামিদ আনসারির কক্ষে শপথ নিয়েছেন তিনি। এভাবেও টেন্ডুলকার গড়েছেন নতুন ইতিহাস। ক্রীড়াঙ্গনে খেলোয়াড় হিসেবে সক্রিয় থাকা প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ভারতের রাজ্যসভার সদস্য হলেন তিনি।
শপথ নেওয়ার পর থেকে টেন্ডুলকারের জীবনধারা কিছুটা হলেও বদলাবে নিশ্চয়ই। এখন থেকে চাইলেই তাঁর সামনে-পেছনে থাকবে দেহরক্ষী। গাড়িতে জাতীয় পতাকা। রাজ্যসভার সদস্য বলে কথা! টেন্ডুলকারও কি বদলে যাবেন? এপ্রিলে রাজ্যসভার সদস্য মনোনীত হওয়ার পর অবশ্য জানিয়েছিলেন, 'রাজনীতির মাঠে নামার ইচ্ছে নেই, ক্রিকেট মাঠেই ভালো আছি।' গতকালের সংবাদ সম্মেলনেও বললেন একই কথা, 'বর্ণাঢ্য ক্রিকেট ক্যারিয়ারের জন্যই আজ আমি এখানে। তাই ক্রিকেটটা ছাড়ছি না।'
রাজ্যসভার ২৫০ জন সদস্যের মধ্যে ২৩৮ জনই নির্বাচিত। ভোটযুদ্ধে জিতেই তাঁরা রাজ্যসভায় আসেন ছয় বছরের জন্য। তবে ১২টি পদ থাকে সংরক্ষিত। বিভিন্ন অঙ্গন থেকে ভারতের জন্য সম্মান বয়ে আনা ব্যক্তিদের মনোনীত করা হয় এই ১২টি পদে। গত এপ্রিলে টেন্ডুলকারের সঙ্গে মনোনীত হয়েছিলেন বলিউড তারকা রেখা আর শিল্পপতি আনু আগাও। তাঁরা গত মাসে শপথ নিলেও আইপিএল নিয়ে ব্যস্ত থাকায় সময় করে উঠতে পারেননি টেন্ডুলকার। অবশেষে সেই প্রতীক্ষার ক্ষণটা শেষ হলো গতকাল। স্ত্রী অঞ্জলি আর আইপিএল চেয়ারম্যান রাজিব শুক্লাকে সঙ্গে নিয়ে এসে শপথটা নিয়েই ফেললেন এই কিংবদন্তি।
পদটা অবশ্য একেবারেই আলংকারিক। তবে শপথ নিয়েই টেন্ডুলকার জানালেন ক্রীড়াঙ্গনের উন্নতি নিয়ে রাজ্যসভায় আলোচনা করার ইচ্ছের কথা, 'ক্রীড়াঙ্গনের ইস্যুগুলো সংসদে তুলব আমি। ভারতীয় ক্রীড়াঙ্গনের উন্নতিতে নিজেকে নিবেদিত করা একজন মানুষ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকতে পারলে খুশিই হব আমি।'
বিরোধীদলীয় সদস্যরা অবশ্য মেনে নিতে পারছেন না শচীনের এই মনোনয়ন। তাঁদের অভিযোগ, দেশের হাজারো সমস্যা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিতেই সরকার তাঁকে রাজ্যসভার সদস্য করেছে। তবে ক্রীড়াঙ্গন থেকে ইতিবাচক সাড়াই পেয়েছেন টেস্ট ও ওয়ানডে ইতিহাসের সফলতম ব্যাটসম্যান। মহেন্দ্র সিং ধোনি মনে করেন, রাজ্যসভার সদস্য হিসেবেও ভালো করবেন টেন্ডুলকার। কয়েক দিন আগে পঞ্চমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া দাবাড়ু বিশ্বনাথন আনন্দও গতকাল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শচীন রমেশ টেন্ডুলকারকে। সূত্র : বিভিন্ন ওয়েবসাইট।

No comments

Powered by Blogger.