সড়ক দুর্ঘটনা-পথ অনিরাপদই থেকে যাচ্ছে

'সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচ জেলায় নিহত ১৯' শিরোনামে গত মঙ্গলবার সমকালের শেষ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত সংবাদটি বেদনাদায়ক ও আতঙ্কজনক। পত্রিকায় উলি্লখিত পাঁচটি দুর্ঘটনার মধ্যে চারটিতেই সড়কযানের মুখোমুখি সংঘর্ষের বিবরণ রয়েছে। একটি দুর্ঘটনা ঘটে যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে টেম্পোর সংঘর্ষে।


চালকরা সতর্ক হলে চারটি সড়ক দুর্ঘটনাই এড়ানো সম্ভব ছিল। এভাবে প্রতিদিন গণমাধ্যমের কল্যাণে আমরা যেসব সড়ক দুর্ঘটনার বিবরণ পাই তার প্রায় সবগুলোই চালকদের অসতর্কতা, ট্রাফিক আইন অমান্য করা ও কতক ক্ষেত্রে পুরনো গাড়ি বেআইনিভাবে রাস্তায় চলাচলের কারণে ঘটছে। প্রধানমন্ত্রী মিরসরাইয়ে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্রদের নিহত হওয়ার পর সড়ক চলাচল নিরাপদ করার জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের কথা ঘোষণা করেছিলেন। এর আগে পুলিশ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। ঘোষণার পর কিছু পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এটাকে ধারাবাহিক করা হয়নি। ফলে কিছুদিন যেতে না যেতেই সড়ক পরিস্থিতি আগের নৈরাজ্যজনক অবস্থায় চলে যায়। এ কারণে সড়কে মৃত্যুর মিছিল দিনে দিনে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। দূরপাল্লার গাড়িচালকরা মাদাসক্ত কি-না সেটা যাত্রাপথে পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই। অনেক সময় দেখা যায়, ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহার করে হেলপার গাড়ি চালায়। সড়কে চলাচলরত গাড়িগুলোর গতি নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় থাকে কি-না বা মাত্রাতিরিক্ত লোড নিয়ে চলছে কি-না সেটাও নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হয় না। এর ওপর মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি রাস্তায় চলাচল করার বিষয়টি তো ওপেন সিক্রেট। অর্থাৎ সড়কপথে দুর্ঘটনা ঘটার সব উপাদানই এখানে উপস্থিত। অথচ ড্রাইভিং লাইসেন্স থেকে শুরু করে গাড়ি চলাচল পর্যন্ত ট্রাফিক আইন মান্য করা ও তা পর্যবেক্ষণের স্থায়ী ব্যবস্থা থাকলে সড়ক দুর্ঘটনার হার একেবারেই কমে যেত। এতে প্রাণহানির সংখ্যা হ্রাস পেত এবং আহতের সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিবার ও সমাজের বোঝা হয়ে বেঁচে থাকার বিড়ম্বনা সইতে হতো না অনেককেই। আমরা চাই সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কঠোর পদক্ষেপ এবং এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার বাস্তবায়ন।
 

No comments

Powered by Blogger.