অপরাধীদের খুঁজে বের করা হোক-এমপি হোস্টেলে তরুণীর লাশ

এমপি হোস্টেলে তরুণীর গলিত লাশও দেশবাসীকে দেখতে হলো। এই লাশ নৃশংস খুন এবং খুনের আগের বর্বরতার কথা বলে। জাতীয় সংসদ চত্বরের এই ভবনটি জাতীয় সংসদ স্থাপত্যের অংশ। সেখানে সাংসদেরা থাকেন। এই লাশ সেখানে কীভাবে গেল? মেয়েটি কি জীবিত অবস্থায় সেখানে গিয়েছিল? তার ওপর কি নির্যাতন করা হয়েছিল? সব থেকে বড় প্রশ্ন, এটা কার কাজ?


অতীতে এমপি হোস্টেল অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্ম দিয়েছে। অস্ত্র ও অপরাধীও আটক করা হয়েছে সেখান থেকে। এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার সারিতে যোগ হলো এক তরুণীর গলিত লাশ। এমপি হোস্টেল দেশের অন্যতম সুরক্ষিত স্থান। আর এমপি বা জনপ্রতিনিধিরা জনগণের আদর্শ চরিত্রই হওয়ার কথা। এ ঘটনা নিরাপত্তার আস্থা ও নৈতিকতার বিশ্বাস—দুটোকেই ভেঙে দিয়েছে।
এমপি হোস্টেল এলাকায় ঢোকার সময় ফটকে নাম-পরিচয়, ঠিকানা, ফোন নম্বর, কার কাছে কী উদ্দেশ্যে যাওয়া হচ্ছে, এর সবই লিখতে হয়। অথচ, ফটকে কর্তব্যরত পুলিশ কিছুই জানে না বলে দাবি করেছে। ভবনের তত্ত্বাবধায়কও ছুটিতে ছিলেন বলে জানিয়েছেন। রাতে সেখানে কেউ থাকে না বলেও জানানো হয়েছে। তাহলে কে তাকে নিয়ে গেল? কীভাবে নিয়ে গেল? জীবিত বা মৃত যে অবস্থাতেই মেয়েটি সেখানে প্রবেশ করুক না কেন, ভবনের নিরাপত্তাকর্মী ও কর্মচারীদের সহযোগিতা লাগবেই। কিংবা কোনো সাংসদ বা তাঁর সহযোগীরা যদি জড়িত থাকেন, তাঁদের পক্ষেও সম্পূর্ণ ‘অদৃশ্য’ থেকে ঘটনাটি ঘটানো সম্ভব নয়।
ঘটনাটি বহু কারণেই উদ্বেগের। এটি জাতীয় সংসদ ভবনকে কলঙ্কিত করেছে। এমপি হোস্টেল কোনোভাবেই অপরাধীদের আশ্রয়স্থল হতে পারে না। এ ঘটনা আইনশৃঙ্খলা-পরিস্থিতির ভয়াবহতারও সূচক। কিন্তু প্রশ্ন হলো, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত হবে কি? নাকি আরও সব নাড়া দেওয়া হত্যাকাণ্ডের মতো এটাও রহস্য হয়ে থাকবে, হয়ে থাকবে অমীমাংসিত? এই প্রশ্নই এখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা যতই ক্ষমতাবান হোক, তাঁদের খুঁজে বের করতে হবে। শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.