১৪ মার্চ ১৪ দলের মহাসমাবেশ, ১১ মার্চ মানববন্ধন-মার্চ ঘিরে রাজনীতি কঠোর অবস্থানে আ.লীগ

পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে না যাওয়ার কথা বললেও বিরোধী দলের কর্মসূচি সামনে রেখে আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত কঠোর অবস্থানের দিকেই যাচ্ছে। বিরোধী দলের ১২ মার্চের কর্মসূচির আগে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের পূর্বঘোষিত গণমিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পেছানোর যে চিন্তা ছিল, তা থেকে সরে এসেছে ক্ষমতাসীন দলটি।


এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ১৪ মার্চ ঢাকায় মহাসমাবেশ কর্মসূচি।
গতকাল বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট বৈঠক করে ১৪ মার্চের কর্মসূচি ঘোষণা করে। এই সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলীয় একাধিক সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দল ও জোটগতভাবে নতুন কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে কর্তৃত্ব ধরে রাখা ও বিরোধী দলকে রাজনৈতিকভাবে চাপে রাখতে তাদের কর্মসূচির আগে-পরে ক্ষমতাসীন জোট এসব কর্মসূচি দিয়েছে।
সূত্রগুলো জানায়, সরকার আশঙ্কা করছে, বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ১২ মার্চ মহাসমাবেশ শেষে রাজধানীতে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করতে পারে। সেটা মিসরের আদলে টানা অবস্থানের দিকে মোড় নিতে পারে। এ রকম পরিস্থিতির উদ্ভব হলে যাতে তা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা যায়, সে জন্য ১৪ মার্চ ঢাকায় মহাসমাবেশ কর্মসূচি দিয়েছে ক্ষমতাসীন জোটটি।
এই রাজনৈতিক অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, ‘ধীরে ধীরে নির্বাচনের সময় এগিয়ে আসছে। স্বাভাবিকভাবেই দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি বাড়তে থাকবে।’
অবশ্য অপর এক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘বিরোধী দল সরকারকে অচল করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এ অবস্থায় আমরা বসে থাকতে পারি না।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ১৪ দলের ব্যানারে ১৪ মার্চের কর্মসূচি দেওয়া হলেও এটা মূলত আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রতিফলন। বিরোধী দলের কর্মসূচির আগে-পরে দল ও জোটগতভাবে রাজপথে থাকার এ সিদ্ধান্ত এসেছে সরকারি দলের উচ্চপর্যায় থেকে। এ কারণে জোটের শরিকদের মান-অভিমান দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ১৪ দলের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী জেলা পর্যায়ে জোটের সমন্বয় কমিটি গঠন করতে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘বিরোধী দলের কর্মসূচির দিন আমরা কোনো কর্মসূচি দিইনি। তবে স্বাভাবিকভাবেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে আমরা মাঠে নেমেছি।’
১৪ দলের বৈঠক: গতকাল সকালে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয়ে ১৪ দলের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ সংবাদ ব্রিফিং করে ১৪ মার্চ ঢাকায় মহাসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গতকালের বৈঠকে আমির হোসেন আমু, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, তোফায়েল আহমেদ, আব্দুল জলিল, রাশেদ খান মেননসহ ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ৯ মার্চ জেলা পর্যায়ে ও ১১ মার্চ ঢাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে ১৪ দল।
আর ৭ মার্চ ঢাকায় আওয়ামী লীগের গণশোভাযাত্রা কর্মসূচিও বহাল রয়েছে। গণশোভাযাত্রা কর্মসূচিতে বড় রকমের জমায়েতের প্রস্তুতি হিসেবে এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

No comments

Powered by Blogger.