বাস পুড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে রাজশাহী নাটোরে ধর্মঘট

রাজশাহী নগরের ভদ্রা এলাকায় গতকাল রোববার নাটোরের এক পরিবহন-নেতার বাস পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় রাজশাহী ও নাটোরে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস ধর্মঘট ডেকেছেন পরিবহন-নেতারা। গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে রাজশাহী ও নাটোরের সব পথে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।


পরিবহন-শ্রমিক ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত হর্ন বাজানো নিয়ে ভদ্রা মোড়ে বাসশ্রমিকদের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। এ ঘটনায় শ্রমিকেরা প্রায় দেড় ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বাস চলাচল বন্ধ রাখেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সড়কবিষয়ক সম্পাদক আলিম উদ্দিন বলেন, ওই সংঘর্ষের ঘটনায় নগরের নওদাপাড়া এলাকায় আন্তজেলা বাস টার্মিনালের চেইন মাস্টার আসাদুজ্জামান ভদ্রা এলাকার সাতজনের বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া থানায় মামলা করেন। ওই দিনই পুলিশ হবি নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে।
আলিম উদ্দিন বলেন, ওই ঘটনা ও মামলার জের ধরে আসামিদের নেতৃত্বে ভদ্রা এলাকার ২০ থেকে ৩০ জন লোক বিকেল পাঁচটার দিকে পদ্মা পরিবহনের একটি বাস পুড়িয়ে দেয়। বাসটি নগরের নওদাপাড়া টার্মিনাল থেকে ছেড়ে ভদ্রা আবাসিক এলাকা দিয়ে নাটোরে যাচ্ছিল। আগুনে বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। তবে কোনো যাত্রী আহত হননি।
বাস পোড়ানোর প্রতিবাদে শ্রমিকেরা কিছুক্ষণের জন্য নগরের শিরোইল এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন। পরে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন শ্রমিকনেতারা। তখনই মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের নেতারা রাজশাহীর সব যাত্রাপথে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত নেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর রহমান বলেন, ‘রাস্তায় নিরাপত্তা, ক্ষতিপূরণ ও মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আমরা ধর্মঘট ডেকেছি।’
এদিকে সন্ধ্যায় নাটোর জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে পরিবহন-নেতারা জরুরি সভা করে আজ সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেন। তবে রাত আটটা থেকে নাটোরের পরিবহন-শ্রমিকেরা নাটোরের ওপর দিয়ে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন।
আগুনে পোড়ানো পদ্মা পরিবহনের মালিক নাটোর জেলা বাস মালিক সমিতির আহ্বায়ক জামিলুর রহমান খান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজশাহীর কোনো ঘটনার জন্য আমাদের বাস কেন পোড়াবে। এটা অন্যায়। আমাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে হবে। তবেই ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে।’

No comments

Powered by Blogger.