বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য-চুক্তি নবায়ন হচ্ছে by ফখরুল ইসলাম

ভারতের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি আর হচ্ছে না। বিদ্যমান চুক্তিই নবায়ন করা হচ্ছে আরও তিন বছরের জন্য। আগামী ৩১ মার্চ এ চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। ভারত প্রস্তাব দিয়েছিল, বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য চুক্তি হবে অনির্দিষ্ট মেয়াদকালের জন্য এবং তার নবায়ন হবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। বাংলাদেশ এতে রাজি না হয়ে ভারতকে জানিয়ে দেয়, বাংলাদেশ চায় নতুন বাণিজ্য চুক্তি।


শেষ পর্যন্ত নতুন বাণিজ্য চুক্তি করার পথে যায়নি সরকার। আবার ভারতের প্রস্তাবও হুবহু মেনে নেয়নি। বরং বিদ্যমান চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদনের পর চুক্তি নবায়ন হবে।
যোগাযোগ করলে বাণিজ্যসচিব মো. গোলাম হোসেন প্রথম আলোকে জানান, ‘মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেলে বাংলাদেশ থেকে উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল আগামী ২৩ ও ২৪ মার্চ দুই দিনের জন্য নয়াদিল্লি যাবে। সেখানেই চুক্তি নবায়ন-প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।’
১৯৮০ সালের ৪ অক্টোবর ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা তিন বছর পরপর নবায়ন হয়ে আসছে। ২০০৯ সালে সর্বশেষ নবায়নপত্রে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশের তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান ও ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি।
সূত্র জানায়, এ দফায় চুক্তির মেয়াদ প্রথমে ছয় মাস থেকে এক বছর বাড়ানোর চিন্তা করা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল পরে নতুন চুক্তি করা। কারণ, ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়ন নিয়ে সরকার যে কাজ করছে, বিদ্যমান বাণিজ্য চুক্তির আওতায় সেগুলো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ কম।
এদিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে, বাণিজ্য চুক্তির ৮ নম্বর অনুচ্ছেদের সংশোধন না করে এর নবায়ন করা যুক্তিযুক্ত হবে না। ৮ নম্বর অনুচ্ছেদে সড়ক, নৌ ও রেলপথে ট্রানজিট দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাণিজ্য চুক্তির মতো বাংলাদেশ ও ভারতের নৌ প্রটোকলের মেয়াদও শেষ হচ্ছে আগামী ৩১ মার্চ। নৌ প্রটোকল বর্তমানে বাণিজ্য চুক্তির আওতায় সম্পাদিত।
বাণিজ্যসচিব গোলাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ট্রানজিটকে জড়িয়ে কথা বলতে গেলে বিদ্যমান বাণিজ্য চুক্তিটি অনেক ক্ষেত্রেই অসম্পূর্ণ। তাই আমরা নতুন বাণিজ্য চুক্তির পক্ষে চিন্তা করেছিলাম। বলা যায়, সময়ের অভাবেই সেটি আর হচ্ছে না।’
যোগাযোগ করলে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) উপদেষ্টা মনজুর আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, নবায়ন না করে ভারতের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি করা গেলেই ভালো হতো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাদের কারণে সরকার সে পথে এগোতে পারবে না বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
মনজুর আহমেদ আরও জানান, ‘কয়েক বছর আগে ভারতের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করবে না বলে বেঁকে বসেছিল নেপাল। ভারত তখন বাধ্য হয়েছিল দেশটির সঙ্গে নতুন চুক্তি করতে। নেপালের উদাহরণ কাজে লাগাতে পারত বাংলাদেশ।’

No comments

Powered by Blogger.