হেফাজত থেকে মুক্ত হয়ে যা বললেন সারজিস আলম
আপনারা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর আঘাত করেছেন। সারাদেশে আমার স্কুল কলেজের ভাইবোনদের উপর লাঠিচার্জ করেছেন। যাকে ইচ্ছা তাকে জেলে পাঠিয়েছেন। আন্দোলনকারীকে খুঁজে না পেলে বাসা থেকে ভাইকে তুলে নিয়েছেন, বাবা'কে হুমকি দিয়েছেন ! মাশরুর তার উদাহরণ।
যারা একটিবারের জন্যও এই আন্দোলনে এসেছে তারা শান্তিতে ঘুমাতে পারে না, গ্রেপ্তারের ভয়ে থাকে। এমন অনেকে আছে যাদের পরিবার এখনো তাদের খোঁজ পায়নি। এমন তো হওয়া উচিৎ ছিল না!
কোথায় মহাখালীর সেতু ভবন আর কোথায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ! অথচ আপনারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আরিফ সোহেলকে মহাখালীর সেতুভবনে হামলার জন্য গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিলেন। সাথে আছে আসিফ মাহতাব স্যার, মাশরুরসহ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অসংখ্য শিক্ষার্থী।
রিক্সা থেকে নামিয়ে প্রিজন ভ্যানে তুলছেন, বাসা থেকে তুলে নিয়ে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন। আমার বোনদের রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছেন। কি ভাবছেন? এভাবেই সবকিছু শেষ হয়ে যাবে?
৬ দিনের ডিবি হেফাজত দিয়ে ৬ জনকে আটকে রাখা যায় কিন্তু এই বাংলাদেশের পুরো তরুণ প্রজন্মকে কিভাবে আটকে রাখবেন? দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছেন প্রতিনিয়ত সেগুলো কিভাবে নিবৃত করবেন ?
পুলিশ ভাইদের উদ্দেশ্যে একটা বলি, এ দেশের মানুষের ক্ষোভ আপনাদের উপর নয়, পুলিশের উপর নয়। এই ক্ষোভ আপনার গায়ের ওই পোশাকটার উপর। যে পোশাকটাকে ইউজ করে বছরের পর বছর আপনাদের দিয়ে এ দেশের অসংখ্য মানুষকে দমন-পীড়ন করা হয়েছে, অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে, জেল আর আদালতের প্রাঙ্গণে চক্কর কাটানো হয়েছে, সেই পোশাকটার উপর। ওই পোশাকটা ছেড়ে আসুন আমাদের সাথে, বুকে টেনে নিব।
এ পথ যেহেতু সত্যের পথ, ন্যায়ের পথ, তাই যেকোনো কিছু মোকাবেলা করতে আমরা বিন্দুমাত্র বিচলিত নই। যতদিন না এ বাংলাদেশ আন্দোলনকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে ; গণগ্রেপ্তার, জুলুম, নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে ; ততদিন এ লড়াই চলবে।’
No comments