কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় প্রতিবাদ জানাতে ও তাদের দেয়া ৯ দফা দাবির পক্ষে একাত্মতা ঘোষণা করে রাজপথে নেমেছেন শিল্পীরা। বৃহত্তর চলচ্চিত্র, আলোকচিত্র, থিয়েটার, গণমাধ্যমসহ দৃশ্যমাধ্যমের নানা শাখার কর্মীরা ‘দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজ’-এর ব্যানারে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশে হত্যা-সহিংসতা-গণগ্রেপ্তার হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়েছে গতকাল সকালে। মামুনুর রশীদ, মোশাররফ করিম, আজমেরি হক বাঁধন, সিয়াম আহমেদ, জাকিয়া বারী মম, রোবেনা রেজা জুঁই, মিথিলা, অর্ষা, নির্মাতা অমিতাভ রেজা, আশফাক নিপুণসহ অনেক শিল্পীই বৃষ্টি উপেক্ষা করে নানা ব্যানার নিয়ে সমবেত হন ফার্মগেটে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক- এমন স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সেখানকার চারপাশ। তাছাড়া বিভিন্ন গান গেয়েও নিজেদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা। এ সময় মামুনুর রশীদ বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর এভাবে আক্রমণ এটা গণতন্ত্র হতে পারে না। আমরা এসবের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি। সিয়াম আহমেদ বলেন, আমার পক্ষ থেকে আলাদা কিছু বলার নাই। সারা দেশের মানুষের যে দাবি সেটাই আমার দাবি।
যখন এত মানুষ একটা দাবি নিয়ে এক হয় তখন একটু হলেও মাথায় আনা দরকার সেটা। আমাদের ভাইবোনরা মারা যাচ্ছে। আপনি যদি সুস্থ সবল মানুষ হন তবে রাতে ঘুমাতে পারবেন না। আমার কানে এখনো মুগ্ধর ‘পানি লাগবে’ কানে বাজে। আমরা সারা জীবন মানুষের জন্য কাজ করি। দেশের মানুষের জন্য কাজ করি। ছাত্ররা আমাদের প্রধান দর্শক। তাদের পাশে যদি না থাকি তবে কাজ করার দরকার নেই। কেন কাজ করবো। আমার ছেলেও আজ থেকে ১৫ বছর পর বলবে তুমি তখন কী করেছো! কী জবাব দেবো। তাই অবশ্যই আমি শিক্ষার্থীদের পক্ষে। যারা মারা গেছেন আন্দোলন করতে গিয়ে তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো মানুষ শান্তি পাবে না। এটা আমার বিশ্বাস। আজমেরী হক বাঁধন বলেন, আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আসলে আমার যদি বিবেক থেকে থাকে তবে মানসিকভাবে সুস্থ থাকার কোনো কারণ দেখছি না। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, যেদিন থেকে গুলি চলেছে, সেদিন থেকেই আমরা সবাই মানসিকভাবে ভালো নেই। একটুও শান্তিতে নেই। আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্ম। যারা মারা গেছেন তাদের হত্যার বিচার চাই। এ শিক্ষার্থীদের মাঝে আমার সন্তান থাকতে পারতো।
No comments