যারা রক্ষা করবে তারাই জনগণের ওপর বন্দুক চালাচ্ছে: জিএম কাদের

বিরোধীদলীয় নেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি বলেছেন, অত্যন্ত দুঃখজনক কথা হলো সরকারি দল রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও কর্মকর্তাদের ব্যবহার করে জনগণের ওপর গুলিবর্ষণ করেছে। ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে দমন-নিপীড়নের মাধ্যমে তাদের মতামত চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। যারা দেশের জনগণ ও রাষ্ট্রকে রক্ষা করবে, তারা জনগণের উপর বন্দুক তাক করে রয়েছে। হেলিকপ্টার থেকে নির্বিচারে গুলিবর্ষণে দেশের নিরীহ জনগণ, শিশু, গৃহিণী, পথচারী মারা গেছে। রংপুরে দু’দিনের সফরে এসে সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

জিএম কাদের বলেন, সরকার যাদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছে তাদের কাউকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করার সুযোগ পায়নি। আমার প্রশ্ন হলো তাহলে কেন নির্বিচারে এমন গণহত্যা করা হলো। হেলিকপ্টার থেকে, বাড়ির ছাদ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কীভাবে বুঝলো কে সন্ত্রাসী, কে ভালো, কে শিশু। সরকারের এমন  কর্মকাণ্ডে আজ দেশের অর্থনীতি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহির্বিশ্বে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন্ন হয়েছে। দেশে অর্থনৈতিক সমস্যা দেখা দিলে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়বে।

আবারো জনগণ মাঠে নামবে, মানুষ মারা যাবে। একসময় বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে সন্ত্রাসী জাতি হিসেবে চিহ্নিত হবে। আমি মনে করি এ থেকে উত্তরণে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা গণতান্ত্রিক পরিবেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু দেশে একনায়কতন্ত্র ও চরমভাবে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু হয়েছে। নাশকতার দায় বিএনপি-জামায়াতের ঘাড়ে চাপানো নিয়ে জিএম কাদের বলেন, সংঘর্ষের শুরু থেকে বিএনপি-জামায়াত বলে বলে যতবার সরকার যেভাবে প্রচার করুক না কেন, আমি ঢাকায় দেখেছি, মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। জনগণ সরকারের একথা গ্রহণ করেনি। এটি জনগণের সংগ্রাম। বিএনপি-জামায়াত-জাতীয় পার্টির কেউ থাকলে তারা ব্যক্তিগতভাবে আন্দোলনে গিয়েছিল। আন্দোলন নিয়ে বিএনপি-জামায়াত এজেন্ডা দিয়েছিল সরকার এটিকেও প্রমাণ করতে পারেনি। মানুষও গ্রহণযোগ্যভাবে এটিকে গ্রহণ করেনি।
জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি বন্ধ নিয়ে জিএম কাদের বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। কোনো রাজনৈতিক দলকে প্রশাসনিক অর্ডারে বন্ধ করা ঠিক নয়। জনগণ তাদের জন্য কোনো রাজনৈতিক দলকে ক্ষতিকারক মনে করলে তারা বয়কট করবে। এক সময় সেই রাজনৈতিক দল বিলীন হয়ে যাবে।  সরকার এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে কেন জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করলো, তাদের কি উদ্দেশ্য রয়েছে এসব প্রশ্ন আমাদের মনে। সেই সঙ্গে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সুযোগে সরকার বড় ধরনের নির্যাতনে যাবে কিনা এটি নিয়েও আমাদের সংশয় রয়েছে।  
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান, সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এসএম ইয়াসিরসহ জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।

No comments

Powered by Blogger.