আয়ারাই চিকিৎসক! by মাছুম চৌধুরী

বালাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানাবিধ সমস্যা বিদ্যমান। সরকারি হাসপাতালটি এখন অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে টিকে আছে। তাছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়নভিত্তিক ৬টি সরকারি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জনবলশূন্যতা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহের অভাবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এখানে আয়ারাই চিকিৎসক। ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ৩১ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে বর্তমানে কর্মকর্তা-কর্মচারী, নার্স, স্টাফ ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্রসহ ওষুধ সামগ্রীর অভাবে স্বাস্থ্যসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। সব মিলিয়ে পাহাড় সমান সমস্যা নিয়ে কোনরকম টিকে আছে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। হাসপাতালের অন্যতম প্রধান সমস্যা জনবল। সরজমিন হাসপাতাল পরিদর্শনকালে জানা যায়, হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবাদান ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করারড়জন্য প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর মোট ১২৮টি পদ রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণীর গুরুত্বপূর্ণ পদসহ মোট ৪৩টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, সমপ্রতি প্রথম শ্রেণীর ৯টি পদের বিপরীতে চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ১ জনড়জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি) থাকলেও তিনি নিয়মিত আসেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।ড়দ্বিতীয় শ্রেণীর ১০০টি পদের মধ্যে ৩২টি ও তৃতীয় শ্রেণীর ১৯টি পদের বিপরীতে ৭টিড়পদ শূন্য রয়েছে। তাছাড়া সিনিয়র স্টাফ নার্স ও সহকারী নার্সের মঞ্জুরকৃত ১১টি পদ থাকলেও মাত্র ৩ জন নার্স কর্মরত আছেন। হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্স সঙ্কটে রোগীরা কাঙিক্ষত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. পদ্মমোহন সিনহা বলেন, হাসপাতালে অনেক সমস্যা রয়েছে।ড় তবে কোন রোগী হাসপাতালে যেন ভোগান্তির শিকার না হয় এ ব্যাপারে আমি ডাক্তারদের আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা দেয়ার কথা বলে দিয়েছি। অপরদিকে হাসপাতালের মূল্যবান যন্ত্রপাতিগুলো দীর্ঘদিন যাবৎ অকেজো হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ পদে যাদেরকে পোস্টিং দেয়া হয় তারা যোগদান করতে চাননি। এর মধ্যে যাদেরকে এখানে বদলি করা হয় তারা অনেকেই সিলেট শহরে বাসা নিয়ে থাকেন। শহর থেকে এসে দায়িত্ব পালন করেই চলে যান। ফলে, জরুরি বিভাগে ডাক্তার পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়। হাসপাতালের আয়ারা জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। বালাগঞ্জের প্রতি ডাক্তারদের অনীহার কারণ হলো, এখানে প্রাইভেট রোগী দেখে ভাল টাকা আয় করা যায় না। নার্সদের বিরুদ্ধেও অভিযোগের শেষ নেই। গত বছর এক গর্ভবতী মহিলা হাসপাতালে নার্সদের অবহেলার কারণে টয়লেটে সন্তান প্রসব করেন। অপরদিকে, হাসপাতালের ডাক্তাররা ঠিকমত চিকিৎসা সেবা না দিয়ে চেম্বারে বসে প্রাইভেট রোগী দেখাটাকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। হাসপাতালে গরিব রোগীরা এলে ডাক্তাররা শুধু একটা ব্যবস্থাপত্র দিয়ে তাদের বিদায় করে দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ আবদাল মিয়া বলেন, আমি উপজেলা পরিষদের দায়িত্ব গ্রহণের দিন হাসপাতালের সমস্যার কথা প্রস্তাবনার মাধ্যমে উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় আলোচনা করেছি। হাসপাতালের সমস্যা কর্তৃপক্ষের নজরে আছে কিনা জানতে সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. আজহারুল ইসলামের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি অফিসে গিয়ে সরাসরি আলাপ করার কথা বলেন।

No comments

Powered by Blogger.