ইউক্রেনের সংঘাত জোরদার হবে?

ভ্লাদিমির পুতিন
জি-২০ সম্মেলন শেষ হওয়ার আগেই অস্ট্রেলিয়া ছেড়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেন সংকটের জন্য পুতিনকে দায়ী করা বিশ্বনেতাদের কাছ থেকে তেমন সাড়া না পেয়েই রুশ প্রেসিডেন্ট আগাম অস্ট্রেলিয়া ছাড়েন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। সম্মেলন থেকে পুতিনের এভাবে চলে যাওয়া ইউক্রেনে দুই পক্ষের লড়াইয়ের আগুনে ঘি ঢালবে বলে আশঙ্কা করেছেন কোনো কোনো বিশ্লেষক। পুতিন আগেভাগে সম্মেলনস্থল ছেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে বলেছেন, তাঁর ‘ঘুমানো প্রয়োজন’। কিন্তু এ কথা বিশ্বাস করার লোক খুব কমই পাওয়া যাবে। নিজের পরিশ্রম করার ক্ষমতা নিয়ে গর্ববোধ করে থাকেন লৌহমানব হিসেবে পরিচিত পুতিন। ক্রেমলিনপন্থী সাময়িকী এক্সপার্ট অনলাইনে লেখা হয়েছে, ‘জি-২০ সম্মেলনের আয়োজক অস্ট্রেলিয়া সম্ভব সব উপায়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে অপমান করেছে।’ নিরপেক্ষ বিশ্লেষক বলে পরিচিত স্তানিস্লাভ বেলকোভস্কি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বিরক্ত হয়ে সম্মেলনস্থল ত্যাগ করে থাকলে ইউক্রেনে রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর লড়াই আরও তীব্র হবে।’ জি-২০ সম্মেলনে যোগদান যে রুশ প্রেসিডেন্টের জন্য কঠিন হবে, সেটা আগেই বোঝা গিয়েছিল। বিশ্বনেতাদের চাপের আশঙ্কায়ই সম্ভবত পুতিন কয়েক দিন আগে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর জোটের (অ্যাপেক) সম্মেলনে যোগ দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন।
জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার অবস্থানকে ‘বিশ্বের প্রতি হুমকি’ বলে উল্লেখ করেন। ইউক্রেনে মালয়েশিয়ার যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ গুলি করে ভূপাতিত করার জন্যও রাশিয়াকে দায়ী করেছিলেন ওবামা। সম্মেলনেও ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার সমালোচনা করা অব্যাহত রাখেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ব্রিসবেনে কানাডার প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হার্পারও রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে হাত মেলানোর সময় বলেন, ‘আমি আপনাকে একটি কথাই বলতে চাই, তা হলো ইউক্রেন থেকে বেরিয়ে যান।’ সম্মেলনে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও রুশ প্রেসিডেন্টের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, পুতিন রাশিয়ার স্বার্থের কথাও বিবেচনা করছেন না। রুশ নেতার উদ্দেশে ক্যামেরন বলেন, ‘দিনের শেষে যদি অর্থনীতি গতিশীল না থাকে, ব্যাংকে অর্থ না থাকে, শেয়ারবাজার গতি হারায়, তাহলে আপনি দেশ চালাতে পারবেন না।’ ক্রেমলিনের সঙ্গে যুক্ত সংস্থা প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতি পরিষদের চেয়ারম্যান ফিওদোর লুকাইয়ানোভ সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ইউক্রেন প্রশ্নে রাশিয়াকে নিয়ে পশ্চিমাদের সমালোচনা পুতিনকে কঠোর অবস্থান নিতে বাধ্য করতে পারে। রুশ বেতারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লুকাইয়ানোভ বলেন, ‘আমরা দেখছি কিছু পশ্চিমা দেশ, বিশেষ করে উত্তর আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া কট্টর অবস্থান নিয়েছে। নরম হওয়ার কোনো ইঙ্গিতই তারা দেখাচ্ছে না...এমনটা হলে রাশিয়াও কঠোর অবস্থান নেবে।’

No comments

Powered by Blogger.