এক গুচ্ছ খবর, শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ- ৫৯৫মালয়েশিয়াগামী আটক- সার্কে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের আহ্বান- পুড়ল গৃহবধু

দাবি পূরণ ছাড়াই অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
১২৫ ঘণ্টা অনশনের পর দাবি আদায় ছাড়াই ‘আমরণ অনশন’ ভেঙেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগের দাবিতে আন্দোলনরত ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক আজ সোমবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে আন্দোলনকারীদের অনশন ভাঙান। এ সময় শিক্ষকেরা তাঁদের বলেন, অনশন ভাঙা মানেই আন্দোলনের পরিসমাপ্তি নয়, এখন থেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকেরাও এই ‘যৌক্তিক’ আন্দোলনে পাশে থাকবেন। অনশনের ষষ্ঠ দিনে আজ বিকেলে আন্দোলনকারীদের পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ জন শিক্ষক উপাচার্যের কাছে একটি বিবৃতি দেন। পরে সন্ধ্যায় ওই শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিদল শহীদ মিনারে আসেন। এঁদের মধ্যে ছিলেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা ও অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের মোসাহিদা সুলতানা। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিনেট সদস্য এ এন রাশেদা অনশন ভাঙানোর সময় উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যা পৌনে ছয়টা থেকে প্রায় আধঘণ্টার মতো শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন, তাঁদের কথা শোনেন। তাঁরা শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে বলেন, অনশন করেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে যেহেতু টলানো যাচ্ছে না, তাঁদের আন্দোলনের কৌশল পরিবর্তন করা প্রয়োজন। এ আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা আনতে হবে। তাঁরা আইনি প্রক্রিয়ায় যাবেন।
এ সময় অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ‘অনশন স্থগিত করা মানেই আন্দোলনে পরাজিত হওয়া নয়। আমরা আন্দোলনের কৌশল পরিবর্তন করব। জনসম্পৃক্তির চেষ্টা করব। আন্দোলনে নানা চড়াই-উতরাই থাকে। সব সময় এক “স্ট্রাইকে” বিজয় অর্জন হয় না। তোমরা তোমাদের সাধ্য অনুযায়ী করেছ, “সাধ্যাতিরিক্ত” কিছু করে দুর্ঘটনা ডেকে এনো না।’

>>ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের জুস খাইয়ে ‘আমরণ অনশন’ ভাঙান অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। ছবি: প্রথম আলো
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্দেশে এম এম আকাশ বলেন, ‘প্রশাসনের কোনো মানবিকতা দেখলাম না। তাঁদের মধ্যে যদি নীতি না থাকে, তবু মানবিকতার খাতিরে তাদের আসা উচিত ছিল। তারা কেন এ বছর থেকেই এ সিদ্ধান্তে অটল, সেটা শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে বলতে পারত।’
শিক্ষাবিদ এ এন রাশেদা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় শিক্ষার্থীদের বক্তব্য নিচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের বলার পথও বন্ধ করে রেখেছে ডাকসু নির্বাচন না দিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়টাই বেআইনিভাবে চলছে। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ, জাতি তোমাদের চায়। অনশন ভঙ্গ করো।’
শিক্ষার্থীদের পক্ষে সালমান খান বলেন, তাঁরা শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ও তাঁদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি পেয়ে অনশন ভাঙছেন। তবে এটাই তাঁদের শেষ নয়। তাঁরা আন্দোলনের কৌশল পরিবর্তন করবেন। পরে শিক্ষকেরা অসুস্থ শিক্ষার্থীদের ফলের ‘জুস’ খাইয়ে অনশন ভাঙান।
মালয়েশিয়াগামী ট্রলার থেকে ৫৯৫ জন আটক
সেন্ট মার্টিনের অদূরে বঙ্গোপসাগর থেকে আজ সোমবার দুপুরে সমুদ্রপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টাকালে একটি ট্রলার থেকে ৫৯৫ জনকে আটক করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। আটক লোকজনের মধ্যে ১৪ জন মাঝি-মাল্লা এবং ২০ জন নারী ও শিশু। ট্রলারটি জব্দ করা হয়েছে।
নৌবাহিনীর চট্টগ্রাম চোরাচালান প্রতিরোধের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমান্ডার জসীম উর জামান জানান, বেলা দুইটার দিকে তাঁদের টহল জাহাজ বিএন দুর্জয় সেন্ট মার্টিন দ্বীপের অদূরে প্রায় ১০০ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ -পশ্চিম বঙ্গোপসাগর দিয়ে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টাকালে ট্রলারটিকে আটক করে। তিনি বলেন, ট্রলারটি থাইল্যান্ডের বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন।
নৌবাহিনীর সেন্ট মার্টিন স্টেশনের লে. কমান্ডার মোস্তফা কামাল জানান, জব্দ করা ট্রলারসহ যাত্রীদের নিয়ে নৌবাহিনীর টহল জাহাজটি সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। তাদের টেকনাফ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হবে। তিনি আরও বলেন, আটক লোকজনের মধ্যে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের নাগরিক রয়েছে।
সার্কে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান টিআইবির
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও কার্যকর দুর্নীতি প্রতিরোধকে আঞ্চলিক সহযোগিতার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিতে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনের প্রাক্কালে টিআইবি এ আহ্বান জানায়। আজ সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি এ কথা জানিয়েছে।
৫ নভেম্বর এক চিঠিতে টিআইবি দুর্নীতিকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য সার্কের নেতাদের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে আঞ্চলিক সহযোগিতামূলক উদ্যোগ গ্রহণে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানায়। সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানের সই করা সেই চিঠির অনুলিপি পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রসচিবকে দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলকে আঞ্চলিক সহযোগিতা কর্মসূচি প্রণয়নকালে কিছু বিষয়ে গুরুত্ব দিতে বলছে টিআইবি। যেমন-সার্ক সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে দুর্নীতিকে সর্বোচ্চ অধিকারভুক্ত চ্যালেঞ্জ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলছে টিআইবি।
পুড়ল গৃহবধু, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
কুমিল্লার লাকসামের বড়বাম গ্রামে নূপুর আক্তার (২২) নামের এক গৃহবধূ আগুনে দগ্ধ হয়েছেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নূপুরের স্বামী ইসমাইলের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
গুরুতর অবস্থায় তাঁকে আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। নূপুর আক্তারের পরিবারের দাবি, ইসমাইল তাঁর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। অন্যদিকে, ইসমাইলের পরিবারের দাবি, ইসমাইলের বিদেশ যাওয়াকে কেন্দ্র করে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে নূপুর নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিত্সক পার্থ শংকর পাল জানান, আগুনে নূপুরের দেহের প্রায় ৪৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।
নূপুরের সঙ্গে থাকা তাঁর ফুফু ইসমত আরা বলেছেন, তিন বছর আগে ইসমাইল ও নূপুরের বিয়ে হয়। এর পর থেকে বিদেশে যাওয়ার জন্য নূপুরের কাছে বিভিন্ন সময় টাকা দাবি করতে থাকেন ইসমাইল। কিছুদিন আগে নূপুরের বাবা ইসমাইলকে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা দেন। ইসমাইল আরও টাকার দাবি করে নূপুরের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেন। গতকাল তিনি নূপুরের গায়ে আগুন দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ইসমাইলের চাচাতো ভাই মো. মহিম প্রথম আলোকে বলেন, ইসমাইলের আজ বাহারাইনে যাওয়ার কথা। রাত নয়টায় তাঁর ফ্লাইট। এ নিয়ে ইসমাইলের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন নূপুর।
নূপুরের বাবা কাজী আবদুর রহিম অভিযোগ করেন, ইসমাইল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বিয়ের তিন মাস পর থেকেই নূপুরের ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন। এরই অংশ হিসেবে তাঁরা আগুনে পুড়িয়ে নূপুরকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেন।

No comments

Powered by Blogger.