পানিবাহিত নাকের রোগ by ডা. মিরাজ আহমেদ

নাক কান গলা বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, ঢাকা স্ট্রবেরির মতো মাংসের দলা ঝুলে আছে নাক থেকে। ছত্রাকটির নাম রাইনোস্পোরিডিয়াম সিবেরি। বাসা বাঁধে নাকের ঝিল্লিতে। তৈরি হয় গ্রানুলোমা।
গ্রানুলোমা বহিরাগত ক্ষতিকর উপাদানকে আটকে রাখার জন্য শরীরের প্রতিরোধ কোষ বাহিনী দিয়ে তৈরি হয়। তার মধ্যে থাকে এপিথেলয়েড সেল, লিম্ফোসাইট, এসব। রাইনোস্পোরিডিওসিস রোগটি হলো এই ছত্রাকজনিত গ্রানুলোমা।
কোন দেশে হয়: ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশে।
কেমন করে হয়: দূষিত জলবাহিত হয়ে স্পোরগুলো আসে মানবদেহে। যে পুকুরে গরু-বাছুর অথবা ঘোড়াকে গোসল করানো হয়, সেই পুকুরেই যদি গোসল করে মানুষ, তখন ছড়ায় রোগ। কোনো একটা জায়গায় আগে থেকে ক্ষতস্থান থাকলে সেখানে ঢুকে পড়ে স্পোর।
কোথায় কোথায় হতে পারে:
 নাক ও ন্যাসোফ্যারিংস  ঠোঁট  মুখের তালু  চোখের কনজাংকটিভা  গ্লটিস  ল্যারিংস  ট্রাকিয়া  ত্বক  যোনি
উপসর্গ:  মাংসল উপবৃদ্ধি, যার বর্ণ গোলাপি থেকে বেগুনি।  লাগানো থাকে নাসারন্ধ্রের মাঝখানের পর্দায় বা পাশের দেয়ালে।  পিণ্ডটিতে রক্তনালি থাকে বেশি সংখ্যায়।  স্পর্শ করলে এ থেকে রক্তপাত হয়।
 এর পৃষ্ঠে যে সাদা ডট থাকে, সেগুলো ছত্রাকের স্পোরাঞ্জিয়া থেকে আসে।  নাক বন্ধ থাকা  নাক থেকে রক্তমিশ্রিত নিঃসরণ বা রক্তক্ষরণ।
রোগ নির্ণয়: বায়োপসি ও হিস্টোপ্যাথলজি করলে স্পোরভর্তি কিছু স্পোরাঞ্জিয়া পাওয়া যায়। স্পোরগুলো হয়তো কাঁটাযুক্ত দেয়াল ভেদ করে ফুটে বের হচ্ছে।
চিকিৎসা: পুরো পিণ্ডটিকে কেটে বাদ দেওয়া এবং এর ভিত্তিমূলের চারদিকের অনেকটা অংশ ডায়াথারমির মাধ্যমে পুড়িয়ে বা কটারি করে দেওয়া।
 রোগটির রেকারেন্স বা পুনরাবির্ভাব হতে পারে।
 ড্যাপসোন ওষুধটি ব্যবহার করা যায়, যেটি আবার লেপ্রসি বা কুষ্ঠ রোগে ব্যবহূত হয়।
প্রত্যাশা: ভালো স্যানিটেশন একদিন অদূর ভবিষ্যতে আমাদের করায়ত্ত হবে। সব নাগরিক নিরাপদ পানি ব্যবহারের সুযোগ লাভ করবে। না জেনে যারা নোংরা পানিতে স্নান করে, তারা অচিরেই বদলে নেবে নিজেদের। জানিয়ে দেবে অন্য সবাইকে।

No comments

Powered by Blogger.