ডেসটিনির সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ

অর্থপাচারের দুটি মামলায় ডেসটিনি গ্রুপের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও তাঁর স্ত্রীসহ ডেসটিনির ৩৫টি প্রতিষ্ঠানের সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের (বাজেয়াপ্ত করার) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জহুরুল হক দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
দুদকের আইনজীবী মীর আবদুস সালাম জানান, গত ২১ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা ডেসটিনি গ্রুপের ৩৫টি প্রতিষ্ঠান এবং ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন, তাঁর স্ত্রী ফারাহ দীবা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইনের ব্যক্তিগত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের এ আবেদন করেন।
আদালত ডেসটিনির ট্রি প্লান্টেশন কম্পানির নামে থাকা ৭৭টি ও মাল্টিপারপাসের নামে থাকা ৩২টি গাড়ি যাতে কোনোভাবেই বিক্রি না করতে পারে, সে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাযথ নজরদারি রাখতে আদেশ দিয়েছেন।
এর আগে গত ২ অক্টোবর তদন্ত কর্মকর্তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি ও ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশনের কর্মকর্তাদের ৫৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন একই আদালত। গত ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় ডেসটিনির ২২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের পর পাচারের অভিযোগে মামলা দুটি দায়ের করে দুদক। ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেশন (এমএলএম) ও ট্রি প্লানটেশন প্রকল্পের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা অর্থ পাচারের অভিযোগে মানিলন্ডারিং (মুদ্রা পাচার) প্রতিরোধ আইনে মামলা দুটি করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড কর্তৃপক্ষ ডেসটিনি ট্রি প্লানটেশন ও ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মাধ্যমে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করে। কিন্তু বর্তমানে তাদের পৃথক দুটি অ্যাকাউন্টে ৫৬ লাখ ও চার কোটি ৮৭ লাখ টাকা আছে। বাকি তিন হাজার ২৮৫ কোটি টাকা তারা মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছে।
মামলা দুটিতে গ্রেপ্তার হওয়া ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন, চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন ও পরিচালক লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম কারাগারে আছেন। অপর আসামি সাবেক সেনাপ্রধান ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট লে. জেনারেল (অব.) হারুন-অর-রশিদ হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছেন। ডেসটিনির এক হাজার ১০০ কোটি টাকা হস্তান্তর করার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতের কাছে জবানবন্দি দেন রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসাইন। এ ছাড়া ডেসটিনি গ্রুপভুক্ত ডায়মন্ড বিল্ডার্সের প্রধান কর্মকর্তা দিদারুল আলমও ২৪৩ কোটি টাকা হস্তান্তর করার কথা স্বীকার করেন।
এদিকে গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ডেসটিনি উইমেন্স ডিস্ট্রিবিউটর ফোরাম আয়োজিত মানববন্ধনে ফোরামের সদস্যরা ডেসটিনির সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়াসহ এর সব কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে অব্যাহত রাখতে সরকারের ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.