একচ্ছত্র ক্ষমতা ঘোষণা-বিচারকদের সঙ্গে মুরসির বৈঠক ব্যর্থ, বিক্ষোভ চলছে

ক্ষমতা গ্রহণের পর সবচেয়ে বড় সংকটের মধ্যে পড়েছেন মিসরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি। একদিকে তাঁর জারি করা অধ্যাদেশের প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে, অন্যদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে গত সোমবার তিনি বিচারকদের সঙ্গে যে বৈঠক করেছেন তা-ও সফল হয়নি।
অধ্যাদেশ বহাল রেখে এর পরিধি সীমিত করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। তবে বিচারকরা মনে করেন, এভাবে বিচার বিভাগ ও প্রেসিডেন্সির মধ্যে চলমান সংকট কাটবে না।
ইতিমধ্যে ওই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে ১২টি মামলা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে স্থানীয় একটি আদালতে এ সব মামলার শুনানি হবে।
মুরসি ক্ষমতা একচ্ছত্র করার ঘোষণা দিয়ে গত বৃহস্পতিবার একটি অধ্যাদেশ জারি করেন। এতে বলা হয়, দেশের কোনো আদালত, প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি তাঁর নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত, অধ্যাদেশ বা আইন চ্যালেঞ্জ করতে পারবে না। এরপর থেকেই বিরোধীরা বিক্ষোভ শুরু করে। গতকালও দেশজুড়ে বিক্ষোভ হয়েছে। দিনভর রাজধানী কায়রোর তাহরির স্কয়ারে পুলিশের সঙ্গে বিরোধীদের বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয়। মুরসির ঘোষণার পর থেকেই বিরোধীরা স্কয়ারে তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান করছে। কায়রো ছাড়াও আলেকজান্দ্রিয়া, নীল ব-দ্বীপ ও মিসরের মধ্যাঞ্চলে বিক্ষোভ হয়েছে।
গত সোমবার চলমান সংকট নিয়ে বিচারকদের সর্বোচ্চ সংস্থা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন মুরসি। অধ্যাদেশ জারির পর বিচারক, আইনজীবী ও সাংবাদিকরা ধর্মঘটের ডাক দেন। গত সোমবারের বৈঠকের পর প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইয়াসির আলী বলেন, অধ্যাদেশে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। পরে এক বিবৃতিতে মুসলিম ব্রাদাহুডের রাজনৈতিক শাখা ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি জানায়, বৈঠক সফল হয়েছে। তবে এ বিবৃতির সঙ্গে একমত নন বিচারকরা। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী বিচারক আবদেল রহমান বাহলুল বলেন, 'বৈঠক ব্যর্থ হয়েছে।' আরেক বিচারক আহমেদ আবদেল রাহমান বলেন, 'বিচার বিভাগ ও প্রেসিডেন্সির মধ্যে সংকট মিটেছে_এমন বলা যায় না।' পাঁচ ঘণ্টার এ বৈঠকে মুরসি অধ্যাদেশের পরিধি কিছুটা সীমিত করার প্রস্তাব দেন। জানান, বিচার বিভাগের কাজে তিনি হস্তক্ষেপ করবেন না। তবে বিচার বিভাগীয় একটি সূত্র মতে, অধ্যাদেশ বহাল রেখে এর পরিধি কিছুটা কমালেও উদ্বেগ রয়েই যাবে। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.