তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ড- সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করল ওয়ালমার্ট

তাজরীন ফ্যাশনসের সঙ্গে নিজেদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছে খ্যাতনামা মার্কিন খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্ট। গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ওয়ালমার্ট বলেছে, তাজরীন তাদের অনুমোদিত পোশাক উৎপাদক প্রতিষ্ঠান নয়। ওয়ালমার্টের নীতি লঙ্ঘন করে এক পোশাক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অনুমোদন ছাড়াই তাজরীনকে ‘সাব-কন্ট্রাক্ট’-এ কাজ দিয়েছে।
তবে সেই সরবরাহকারীর নাম প্রকাশ করেনি ওয়ালমার্ট। বিবৃতিতে ওই সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথাও বলেছে বিশ্বখ্যাত এই প্রতিষ্ঠানটি।
গত শনিবার আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শতাধিক পোশাকশ্রমিকের মৃত্যু হয়। এর পরপরই বিশ্বের খ্যাতনামা ক্রেতা প্রতিষ্ঠান, বিশ্বব্যাপী ক্ষমতাশালী ট্রেড ইউনিয়ন ও শ্রম অধিকার সংগঠন ক্লিন ক্লথস ক্যাম্পেইনসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। ক্লিন ক্লথস ক্যাম্পেইন বিশ্বখ্যাত সব ব্র্যান্ড, যারা তাজরীনকে কাজ দিয়েছে, তাদের অভিযুক্ত করে।
সমালোচনার পরপরই গতকাল ওয়ালমার্ট বিবৃতি দেয়। এতে প্রতিষ্ঠানটি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেছে, এ ঘটনা তাদের জন্য চরম অস্বস্তিকর। ভবিষ্যতে তারা বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোতে অগ্নিনিরাপত্তা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ উন্নয়নে কাজ অব্যাহত রাখবে।
গত সোমবার হংকংভিত্তিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান, যারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পোশাক কিনে নিয়ে সরবরাহ করে, সেই লি অ্যান্ড ফাং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমের কাছে বিবৃতি পাঠিয়ে বলেছে, তারা নিজেরা এ ঘটনার তদন্ত করে দেখবে।
ওয়ালমার্টের বিষয়ে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ‘গণমাধ্যমের বিষয়টি শুনেছি। তবে এটা সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না। কারণ, আমরা যেমন ব্যবসা করি, লাভ করি, তারাও করে। বর্তমান পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে উভয়কেই যৌথভাবে কাজ করতে হবে।’
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গতকালও আশুলিয়ার অগ্নিকাণ্ড নানাভাবে শিরোনাম হয়েছে। জাতীয় শোক পালনের পাশাপাশি ওয়ালমার্টের বিবৃতিকে গুরুত্ব সহকারে সংবাদ শিরোনাম করেছে বিবিসি নিউজ, এএফপি, এবিসি নিউজ, ডেইলি নিউজ, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস নিউজ, আরব নিউজসহ অনেক গণমাধ্যম।
এবিসি নিউজের অনলাইনে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের পোশাক কারখানায় দুর্বল নিরাপত্তাব্যবস্থা, অনিরাপদ বৈদ্যুতিক সংযোগ ও অধিক জনসংখ্যাই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।
এএফপি এক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশের শিল্পের ৪০ শতাংশ শ্রমিক পোশাক কারখানায় কাজ করেন। কিন্তু এখানকার নিরাপত্তাব্যবস্থা খুবই দুর্বল।

No comments

Powered by Blogger.