শুরু হচ্ছে আরেক ভুট্টোর পথচলা

ব্যক্তিত্ব আর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দিয়ে রাজনীতিতে অনন্য অবস্থান সৃষ্টি করেছিলেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রতিষ্ঠাতা জুলফিকার আলী ভুট্টো। তিন দশক পরও তাঁর সেই অবস্থান পুঁজি করে জাতীয় রাজনীতি ও দল নিয়ন্ত্রণ করছে ভুট্টো পরিবার।
সেই ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানের রাজনীতিতে এবার প্রত্যক্ষভাবে সামনের সারিতে উঠে আসছেন জুলফিকার আলী ভুট্টোর নাতি বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি।
২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর বেনজির ভুট্টো নিহত হওয়ার পর বিলাওয়ালকে পিপিপির চেয়ারম্যান করা হয়। পাকিস্তানের সামাজিক রেওয়াজ অনুযায়ী, বিলাওয়ালের নামের শেষে বাবা আসিফ আলী জারদারির পদবি যুক্ত হওয়ার কথা ছিল। শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিলাওয়ালের নামের শেষে ‘জারদারি’ না বসিয়ে ‘ভুট্টো’ যোগ করা হয়।
২০০৮ সালের শুরুতে বিলাওয়ালকে পিপিপির চেয়ারম্যান বানানো হলেও কার্যত তিনি ছিলেন প্রত্যক্ষ রাজনীতির বাইরে। ব্যস্ত ছিলেন পড়াশোনা নিয়ে। তবে আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে এবার তিনি ‘সশরীরে’ রাজনীতিতে আসতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পিপিপির শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে ২৫-এ পা দেবেন বিলাওয়াল ভুট্টো। কিন্তু তাঁর বাবা প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি চাইছেন, মে মাসেই বিলাওয়াল আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিক জীবন শুরু করুক। কেননা, ওই মাসেই সাধারণ নির্বাচন।
সিন্ধু থেকে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদের পিপিপির একজন সদস্য ডন-এর সঙ্গে এক আলোচনায় বলেছেন, পাকিস্তানের রাজনীতি অনেকটা ভারতের মতো। কোনো গান্ধীর নেতৃত্ব ছাড়া কংগ্রেস যেমন নির্বাচনে যাওয়ার চিন্তা করতে পারে না, তেমনি ভুট্টো পরিবারের উপস্থিতি ছাড়াও নির্বাচনের কথা ভাবতে পারে না পিপিপি। আসলে পিপিপির নেতারা এই পরিবারটির বাইরে চিন্তাই করতে পারেন না। তিনি বলেন, ‘কেউ পছন্দ করুক আর না-ই করুক, দলের মুখ হচ্ছেন বিলাওয়াল, আসিফা ও বখতাওয়ার। পিপিপি আর ভুট্টো এখন সমার্থক। বেনজির ভুট্টোর অকালমৃত্যুর পর দলের স্বার্থেই তাঁর সন্তানদের টেনে নিতে হয়েছে। কোনো সমাবেশে ভুট্টো পরিবারের কেউ বক্তব্য দিলে তা ভোটারদের মধ্যে বাড়তি প্রেরণা সৃষ্টি করে।’
ওই নেতা আরও বলেন, বখতওয়ারের (২২) রাজনীতির প্রতি তেমন আগ্রহ নেই। মিছিল সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার মতো বয়স হয়নি আসিফারও (১৯)। তাই পিপিপির সামনে বিলাওয়ালকে সমর্থন দেওয়া ছাড়া কোনো গত্যন্তর নেই। আগামী নির্বাচনে তাঁর দুই বোনকেও ময়দানে দেখা যাবে। তিনি বলেন, দলের কয়েকজন ত্যাগী নেতা বিলাওয়ালকে সার্বক্ষণিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন এবং দলীয় কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবহিত করছেন।
গত মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে ‘পাকিস্তান: ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ভাষণ দেন বিলাওয়াল। সেখানে বক্তব্যে তিনি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সব ইস্যু নিয়েই আলোচনা করেন।
আরেকজন এমপি বলেছেন, পাকিস্তানের রাজনীতিতে ঘাপটি মেরে আছে পরিবারতন্ত্র। এটা আরও দীর্ঘ সময় ধরে টিকে থাকবে। ফলে নতুন কারও সামনে এসে যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ নেই। ডন।

No comments

Powered by Blogger.