‘ফরমালিনমুক্ত রাজনীতি’ ও নির্বাচন চান কামাল হোসেন

গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘রাষ্ট্রে বিভিন্ন দলের রাজনীতির মধ্যে ফরমালিন ঢুকে গেছে। আমাদের এবারের আন্দোলন হবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ফরমালিনমুক্ত রাজনীতি ও নির্বাচনের আন্দোলন।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে গতকাল শুক্রবার সকালে সাউথ এশিয়ান লইয়ার্স ফোরাম আয়োজিত ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও পেশাজীবীদের ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় কামাল হোসেন এসব কথা বলেন।
কামাল হোসেন আরও বলেন, ‘হল-মার্ক, পদ্মা সেতু, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির খবর মানুষের সামনে চলে এসেছে। আমাদের প্রশ্ন, সরকার তাদের ভুল স্বীকার করতে চায় না কেন?’
সরকারের ভুলের কারণে দেশের যে ক্ষতি হয়েছে, তা থেকে জাতিকে মুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে কামাল হোসেন বলেন, ‘শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির পেছনে কারা, কার স্বার্থে সে নামগুলো গোপন রাখা হয়েছে। জনগণই সেই মানুষগুলোর নাম জানতে চায়। আমি চ্যালেঞ্জ নিয়ে বলছি, এটা জনগণের দাবি।’
প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মূসা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ, বিএনপির রাজনীতির ফরমালিন ছাড়াও সর্বত্র ফরমালিন ঢুকে গেছে। কী দিন এসেছে, আজ পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্ররাও নকল করে। ড. কামাল হোসেন, অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মতো কিছু লোক দেশে রয়েছেন, তাঁদের ম্যাজিস্ট্রেটের ভূমিকা নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে রাজনীতি থেকে ফরমালিন দূর করতে হবে।’
সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী আবু সাইয়িদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের প্রকৃত ও মূলধারার কোনো রাজনৈতিক দল এখন বাংলাদেশে নেই। জাতীয় সমঝোতার কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। এ জন্য সংবিধানের মূল চার নীতি অনুসরণ করে রাজনীতিকদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি ক্ষমতার স্বাদ পেয়েছে। এ জন্য তারা দলের মধ্যে গণতন্ত্রচর্চা অব্যাহত রাখে না। এ জন্য এবার আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেব। যোগ্য প্রার্থী না পেলে ১০০ আসনে দেব।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি শেখ সালাহ্উদ্দিন আহেমদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পিয়াস করীম, সমকাল-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আবু সাঈদ খান প্রমুখ।
সভা থেকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, স্থানীয় সরকার, অর্থ, প্রতিরক্ষা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত বলে অভিমত প্রকাশ করা হয়। কমিশনকে ঢেলে সাজানোর জন্য দক্ষ, নিরপেক্ষ ও সৎ ব্যক্তিদের নিয়োগ, প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বাধীনতা দেওয়া উচিত বলেও বলা হয়।

No comments

Powered by Blogger.