কিষেণজির মৃত্যুর এক বছর-নেতৃত্বে আনন্দ, না কোসা?

ভারতের মাওবাদী নেতা কটেশ্বর রাও ওরফে কিষেণজির মৃত্যুর এক বছর পর তাঁর জায়গায় কাতাকাম সুদর্শন ওরফে আনন্দকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে এ নিয়ে বিতর্ক আছে। কোনো কোনো সূত্রের দাবি, আনন্দ নয়, আসলে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কাদরি সত্যনারায়ণ রাও ওরফে কোসাকে।
গতকাল ২৪ নভেম্বর ছিল কিষেণজির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। গত বছর এই দিনে পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বুড়িশোল জঙ্গলে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি।
ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা অঞ্চলের মাওবাদীদের সর্বোচ্চ নেতা করা হয়েছে আনন্দকে। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি বা সিপিআইয়ের (মাওবাদী) পলিটব্যুরোর সদস্য আনন্দ অত্যন্ত কৌশলী ও আপসহীন হিসেবে পরিচিত। তিনি কিষেণজির মৃত্যুর পর মাওবাদীদের সুসংগঠিত করার ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করেছেন। তাঁকে ধরিয়ে দিতে ১২ লাখ রুপির পুরস্কার ঘোষণা করেছে সরকার। তবে কিষেণজি হত্যার প্রতিশোধ নিতে এবং মাওবাদীদের চাঙ্গা করতে কিষেণজির জায়গায় আসছেন কোসা- এমন খবরও বেরিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, কিষেণজির মৃত্যুর পর তাঁর জায়গায় সব্যসাচী পান্ডাকে বসিয়ে শূন্যস্থান পূরণের চেষ্টা হয়েছিল। তবে নীতির প্রশ্নে দলের সঙ্গে তাঁর ব্যাপক মতভেদ তৈরি হওয়ায় পান্ডাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার পর থেকে এ অঞ্চলের মাওবাদীরা নেতৃত্বশূন্য ছিল।
পশ্চিমবঙ্গ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, 'আমাদের কাছে তথ্য আছে, মাওবাদীদের অন্যতম শীর্ষ নেতা আনন্দকে কিষেণজির জায়গায় বসানো হচ্ছে অথবা ইতিমধ্যে বসানো হয়েছে। তিনি এখন পূর্বাঞ্চলীয় ব্যুরোর প্রধান।' এ ব্যাপারে নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
অন্ধ্র প্রদেশের আদিলাবাদ জেলার বাসিন্দা আনন্দ আশির দশকে মাওবাদীদের দলে ভেড়েন। তিনি একজন প্রকৌশলী। আনন্দ ছাড়াও তাঁর আরো কয়েকটি ডাকনাম আছে। যেমন বীরেন্দ্রজি, মোহন। পুলিশের নথি অনুযায়ী, 'মৃদুভাষী আনন্দের উচ্চতা ৫ ফুট ২ ইঞ্চি। কথা কম বললেও কালো গাত্রবর্ণের মানুষটির নেতৃত্বের গুণ আছে।'
পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১০ সালের এপ্রিলে দান্তেওয়াড়ায় সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) ৮০ জন জওয়ানকে হত্যার পরিকল্পনাকারী ছিলেন আনন্দ। তখন তিনি উত্তর তেলেঙ্গানা বিশেষ আঞ্চলিক কমিটির সচিব ছিলেন। তবে এ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী হিসেবে কোসাকেও ভাবা হয়। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস, আনন্দবাজার পত্রিকা।

No comments

Powered by Blogger.