রামু উখিয়া টেকনাফের বিহার পুনর্নির্মাণে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ- সেনা তত্ত্বাবধানে কাজ শুরু by মোয়াজ্জেমুল হক ও এইচএম এরশাদ

আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আযহা, দুর্গাপুজো ও প্রবারণা পূর্ণিমার প্রাক্কালে দেশজুড়ে বিশেষ করে কক্সবাজার অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সহাবস্থান পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সরকারের শীর্ষ মহল ব্যাপকভাবে তৎপরতা শুরু করেছে।


যে কোন ধর্ম ও অনুসারীদের বিরুদ্ধে যে কোন ধরনের অপতৎপরতা রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এসব ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
কক্সবাজারের রামু, উখিয়া ও টেকনাফের ক্ষতিগ্রস্ত ১৭ বিহার-মন্দিরের জন্য সরকার ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। বরাদ্দের এই অর্থ প্রদান করা হচ্ছে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরকে। তাদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে এসব বিহার-মন্দির পুনর্নির্মিত হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী। সরকারী মঞ্জুরির অর্থ প্রাপ্তির আগে সেনাবাহিনীর নিজস্ব ফান্ড থেকে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। যা পরে সমন্বয় করা হবে। এদিকে গত ৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী রামু সফরকালে ক্ষতিগ্রস্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের জন্য যে প্রায় ৪ কোটি টাকা আর্থিক অনুদান দিয়েছিলেন, সেই অর্থে নতুন করে বাড়ি-ঘর নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে গেছে। এছাড়া রামুর ক্ষতিগ্রস্ত সবচেয়ে বড় বিহার সীমা বিহারের অধ্যক্ষ সত্যপ্রিয় মহাথের আগামী ২ থেকে ৭ নবেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে লাওস, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামে সফর সঙ্গী হবেন। সর্ব শেষ তথ্য অনুয়ায়ী রামুতে সহিংসতার ঘটনায় পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ ইন্ধনদাতা, অংশগ্রহণকারী জামায়াত-বিএনপির বহু নেতা-কর্মী গত কয়েকদিনের মধ্যে গা ঢাকা দিয়েছে। শুক্রবার রাতে ঈদগাঁওর চৌফলদন্ডি থেকে দুই শিবির কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে ঐ দিনের ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার কারণে।
অপরদিকে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার সিরাজুল হক খান ও পুলিশের রেঞ্জ ডিআইজি নওশের আলী শনিবার আবারও রামুর ক্ষতিগ্রস্ত জনপদ পরিদর্শনে আসেন। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইতোপূর্বে প্রদত্ত অনুদানের টাকায় ক্ষতিগ্রস্তরা আবার কিভাবে নিজেদের দাঁড় করাচ্ছেন, নতুন কোন সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে কিনা তা অবহিত হওয়ার জন্য তাদের এই সরেজমিন পুনঃসফর।
জামায়াত-শিবির নেতাদের গা-ঢাকা ॥ কক্সবাজার জেলা জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের বেশির ভাগ নেতাকর্মী বৌদ্ধদের উপর হামলা ঘটনায় গ্রেফতার এড়াতে গা-ঢাকা দিয়েছে। তন্মধ্যে অনেক নেতা-কর্মী থানায় রুজুকৃত মামলার তালিকাভুক্ত আসামি। অনেকে আবার ঘটনায় সম্পৃক্ত অথচ এজাহারে নাম উল্লেখ নেই, এমন ক্যাডাররাও গা-ঢাকা দিয়েছে। অন্তত ১৫দিন আগে সৌদি যাওয়ার প্রচারণা চালিয়ে কক্সবাজার ছেড়ে গেলেও জেলা জামায়াতের প্রচার সেক্রেটারি আবু হেনা মোস্তফা কামালের নামে সংবাদপত্রে এক বিবৃতি উৎসুকদের মাঝে ‘ধোঁকাবাজি আর কাকে বলে’-মর্মে হাসির খোরাকের জন্ম দিয়েছে।
দুই শিবির কর্মী গ্রেফতার ॥ রামুর সহিংস ঘটনায় জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে সদর থানা পুলিশ শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে চৌফলদন্ডি এলাকার মৃত কালু মিয়ার পুত্র মোঃ এমরান ও ছৈয়দ আলমের পুত্র জিয়াউর রহমানকে গ্রেফতার করেছে। তারা রামুর বৌদ্ধ বিহারের বেশ কয়েকটিতে অগ্নিসংযোগ করার কাজে সম্পৃক্ত ছিল বলে পুলিশী তদন্তে উদঘাটিত হয়েছে।
ঈদের পর রামু আসছেন খালেদা জিয়া ॥ রামুর ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ বিহার ও বড়ুয়াপল্লী সরেজমিন দেখতে বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া ঈদ-উল-আযহার পরে কক্সবাজারে আসছেন বলে জানা গেছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমদ শনিবার জনকণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উল্লেখ্য, চীন সফর শেষে বেগম খালেদা জিয়া ২২ অক্টোবর রামু পরিদর্শনে আসার কর্মসূচী নেয়া হলেও তা বাতিল করা হয়েছে। ঈদের পর পর নতুন সময়সূচী ঘোষণা করা হবে বলে সালাহ উদ্দিন আহমদ জানান।
পুনর্নির্মাণ কার্যক্রম ॥ রামুর সংখ্যালঘু বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ চরম ক্ষতির ক্ষত না শুকালেও বেদনা ভুলে গিয়ে, সম্প্রীতিতে বসবাসের লক্ষ্যে তাদের ভস্মীভূত ও ভাংচুর হওয়া বসত বাড়ি-ঘর পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী রামু সফরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে যে অনুদান প্রদান করেছেন তা নগদায়ন হওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্তদের নতুন এ কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। সিভিল প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবির পক্ষ থেকেও সর্বক্ষণিক তদারকি চলছে। শনিবার তদারকিতে আসেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার সিরাজুল হক খান ও পুলিশের রেঞ্জ ডিআইজি নওশের অলী খান। দুপুরে রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারে বিভাগীয় কমিশনার ও ডিআইজি পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের জানানো হয়, প্রতিটি ধর্মের মানুষ যাতে আনন্দঘন পরিবেশে স্ব-স্ব ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করতে পারে সে লক্ষ্যে সরকারী তৎপরতা ইতোপূর্বেকার যে কোন সময়ের চেয়ে ব্যাপকতর করা হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনার সিরাজুল হক জানান, ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্তদের আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের এই সফরকালে কেন্দ্রীয় সীমা বিহারে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পুলিশ সুপার সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, ১৭ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোঃ খালেকুজ্জামান পিএসসি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ নুরুল আলম বাসির, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবী চন্দ্র দে, উখিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ, ১৭ ইসিবির মেজর আনোয়ার, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মুসরাত জাহান মুন্নী, রামু থানার ওসি গাজী শাখাওয়াৎ হোসেন, কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের আবাসিক ভিক্ষু শীলপ্রিয় থের, পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তরুণ বড়ুয়া, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এ্যাডভোকেট রনজিত দাশ, সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা, রামু প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক সুনীল বড়ুয়া, রামু যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক নীতিশ বড়ুয়া, সর্বজনীন কেন্দ্রীয় কালী মন্দির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি রতন মল্লিক, সাধারণ সম্পাদক চন্দন দাশগুপ্ত প্রমুখ।
সেনা তত্ত্বাবধানে নির্মাণ কাজ শুরু প্রক্রিয়া ॥ রামু, উখিয়া, টেকনাফের ক্ষতিগ্রস্ত ও সম্পূর্ণ ভস্মীভূত বিহার-মন্দিরের জন্য সরকার যে ২০ কোটি টাকা অনুদান ঘোষণা করেছে তার প্রাথমিক প্রক্রিয়া সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিরিয়ারিং কোরের তত্ত্বাবধানে শুরু হয়ে গেছে। ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি বিহার-মন্দিরের নকশা প্রণীত হয়েছে। বিহার-মন্দির পরিচালনায় জড়িতদের পক্ষ থেকে প্রণীত নকশায় মতামত পাওয়া গেলে নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে প্রশাসনের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে শনিবার জানানো হয়েছে। ঐ সূত্রে জানানো হয়, সরকারী ২০ কোটি টাকা অনুদানের অর্থ পাওয়ার আগেই সেনাবাহিনীর নিজস্ব ফান্ড থেকে ৫ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে, যা পরবর্তীতে সমন্বয় করে নেয়া হবে। সরকারী এহেন দ্রুত ও কার্যকর প্রক্রিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত জনপদে নতুন করে শক্তি সঞ্চারিত হয়েছে, প্রত্যয় সৃষ্টি হয়েছে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর। উল্লেখ্য, যে সব বিহার-মন্দির সরকারী অর্থে পুনর্নির্মিত হবে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, রামুতে ১২ ও উখিয়ায় ৭টি।
২০ মামলা ও গ্রেফতার ২২৭ ॥ এদিকে কক্সবাজার সদর, রামু, উখিয়া ও টেকনাফ থানায় রুজুকৃত ২০টি মামলায় পুলিশ এ পর্যন্ত ২২৭ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের মধ্যে ৯ জন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে আদালতে। গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টে ও বিভিন্নভাবে রামু, উখিয়া ও টেকনাফে বৌদ্ধ জনপদে সহিংসতায় রোহিঙ্গা জঙ্গীদের সঙ্গে কতিপয় জামায়াত নেতা জড়িত থাকার সত্যতা বেরিয়ে এলেও কক্সবাজার জেলা জামায়াতের নেতা আবু হেনা মোস্তফা কামাল আত্মগোপন অবস্থায় দোষীদের রক্ষা করতে তাদের পক্ষে সাফাই গেয়ে চলছেন প্রতিনিয়ত। স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় জেলা জামায়াতের প্রচার সেক্রেটারি আবু হেনা মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত বলে প্রদত্ত বিবৃতিতে দাবি করা হলেও এটা তাদের আরেকটি প্রতারণা ও ধোঁকাবাজি বলে দাবি করেছেন সচেতন মহলের অনেকে। সূত্র জানায়, রামুতে নারকীয় ঘটনার পরিকল্পনা নিতে জুলাই মাসে সৌদি আরবে অবস্থানকারী জঙ্গীরা যখন জরুরী ভিত্তিতে বাংলাদেশ থেকে কিছু সংখ্যক জামায়াত নেতা এবং জঙ্গীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ঐ সময় তাড়াহুড়ো করে জামায়াত নেতা জাফর উল্লাহ নূরীর সঙ্গে, তার আগে বা পরে কারা সৌদিয়ায় গমন করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে দায়িত্বশীল একটি সূত্রে জানা গেছে। পাশাপাশি নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা তোফাইল আহমদ, জঙ্গী কলিমুল্লাহ, টেকনাফের কেফায়েত উল্লাহসহ যারা দুবাই গিয়ে এ জাতীয় অপকর্মের সঙ্গে লিপ্ত হয়েছিল, তাদের কাউকে পুলিশ এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি।
সরকারী তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি ॥ বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ দাবি করেছে, রামুর সহিংসতায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন ‘যথার্থ ও বস্তুনিষ্ট।’ পরিষদের নেতৃবৃন্দ ‘রামুর ঘটনার ব্যাপারে সরকারী তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনতিবিলম্বে জনসমক্ষে প্রকাশ ও প্রচারের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন। শনিবার দুপুরে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। ১৯ অক্টোবর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিষদের ৩০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রামু, উখিয়া ও টেকনাফের বৌদ্ধ বসতিতে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি ‘প্রশাসনের ভেতরে আরেকটি প্রশাসন লুকায়িত অবস্থায় কাজ করছে কিনা’ তাও খতিয়ে দেখার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এই প্রসিকিউটর এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘একতরফা সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকবলিত বাংলাদেশে যারা ধর্মীয় সংখ্যালঘু নিঃস্ব করার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে চায়, তাদের হাতে এই দেশকে ছেড়ে দেয়া ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্টীর জন্য নিরাপদ নয়। তারা যেভাবে অপতৎপরতা শুরু করেছে, তাতে এ দেশের সংখ্যালঘুদের হার শূন্যের কোঠায় নেমে আসতে আর বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না। সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়েছে, রামু-উখিয়া-টেকনাফ-পটিয়ার সহিংস ঘটনার সংখ্যালঘুদের মধ্যে দেশত্যাগের প্রবণতা বেড়েছে শতকরা ৩৮ ভাগ। আর বাংলাদেশের সব স্থানেই সংখ্যালঘুদের স্বার্থ হুমকিতে রয়েছে বলে দাবি করা হয়।
এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত তাঁর লিখিত বক্তব্যে দাবি করেন, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ২শ’ মানুষের মাঝে একটি জরিপ চালানো হয়।
ঐ জরিপের ভিত্তিতেই তিনি দাবি করেন, শতকরা ৯৭.৪৬ ভাগ মনে করেন, ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বরের হামলা পরিকল্পিত। আর এ হামলা মোকাবেলায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যর্থ হয়েছে চরমভাবে।

ট্রাকচালকের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী
২৯ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে রামু বৌদ্ধ বিহার ও বড়ুয়াপল্লীতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ কাজে অংশ নিতে নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে আসা দুর্বৃত্তদের বহনকারী ট্রাকচালক লাতু বড়ুয়া শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। ছুটির দিনে বিশেষ আদালতে ট্রাক(নং-কক্সবাজার-জ-১১-০০৫৯) চালক লাতু বড়ুয়া জানিয়েছে, তাকে এক হাজার টাকা দিয়ে যারা রিজার্ভ করে রামুতে এসেছিল, তাদের ৩২ জন ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে। সে জানায়, ঐ দিন রাত মাড়ে ১১টায় রামুতে এসে ঐ দুর্বৃত্তরা বিহার, মন্দির ও বসতবাড়িতে হামলা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে রাত আড়াইটায় নাইক্ষ্যংছড়ি ফিরে যায়। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, নাইক্ষ্যংছড়ির জামায়াত নেতা তোফাইলের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে এরা লাতু বড়ুয়াকে ১ হাজার টাকায় রিজার্ভ ভাড়া দিয়ে তার চালিত ট্রাকযোগে রামুতে আসা এ দুর্বৃত্তদের প্রায় সকলে জামায়াত-শিবিরকর্মী ও রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী।

No comments

Powered by Blogger.