গভীর সমুদ্রবন্দর ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণে চীনের সহযোগিতা চাইলেন খালেদা

বঙ্গোপসাগরের সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ব্যাপারে বাংলাদেশকে কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে চীন। পদ্মা নদীর ওপর দ্বিতীয় সেতু নির্মাণেও সহায়তা দেবে দেশটি। বাংলাদেশ সফররত চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি) পলিটব্যুরো সদস্য লি চ্যাং চুন  আজ বিকেলে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠককালে এ কথা জানান।

সিপিসির পঞ্চম সর্বোচ্চ এ নেতা দলের প্রচার বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন। বৈঠক শেষে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী জানান, সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ব্যাপারে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে চীন। সেই সঙ্গে পদ্মার ওপর দ্বিতীয় সেতু নির্মাণে সহায়তা ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়নেও সহযোগিতা করবে আশ্বাস দিয়েছে চীন। এজন্য মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ওই রেল ও সড়ক যোগাযোগ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে বলে জানিয়েছেন চীনা প্রতিনিধি দল। এছাড়া বৈঠকে আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য চট্টগ্রাম থেকে চীনের কুনমিং পর্যন্ত রেল ও সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারেও আলোচনা হয়। বৈঠকে সিপিসি নেতা লি চ্যাং জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের গভীর সম্পর্ক। সে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতেই সম্প্রতি চীন সফর করেন খালেদা জিয়া। খালেদাকে ফের চীন সফরের আমন্ত্রণ জানান চীনের প্রভাবশালী এ নেতা। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় চীনা কমিউনিস্ট পার্টির অষ্টম কংগ্রেস সফল হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের উন্নয়নে অব্যাহত সহযোগিতার জন্য চীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বৈঠকে বিরোধী নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সমিতির সভাপতি ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মোবিন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, সাবিহউদ্দিন আহমেদ ও বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান এবং চীনের পক্ষে লি চ্যাংয়ের সঙ্গে শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেন। উল্লেখ্য, লি চ্যাং চুনের নেতৃত্বে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধি দলটি শনিবার ঢাকা সফরে এসেছে। একই দিন চীন থেকে ব্যাংকক হয়ে দেশে ফিরেছেন খালেদা জিয়া। এদিকে সফরে প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও দেখা করেন লি চ্যাং চুন। সফর শেষে বিকালেই দেশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রতিনিধি দলটি। এর আগে শনিবার রাতে সফররত চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নিয়েছেন আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। রাজধানীর রূপসী বাংলা হোটেলে আয়োজিত এ নৈশভোজে বিরোধী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সরকারি দল আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী সাহারা খাতুন, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়–য়া, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, শ্রম ও জনশক্তিবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ অংশ নেন।

No comments

Powered by Blogger.