মুখে বললেই হবে না মনেপ্রাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করতে হবে ॥ বিচারপতি হাবিবুর রহমান

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা ও প্রধান বিচারপতি হাবিবুর রহমান বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রতিষ্ঠান ক্রমশ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধরে রাখতে হলে আরও সুদক্ষ হতে হবে।


শুধু মুখে মুখে না বলে মানুষের মনে চেতনা যেন প্রভাব বিস্তার করে, সেভাবেই আমাদের কাজ করতে হবে। শনিবার সন্ধ্যায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে আয়োজিত এক আলোচনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অগ্নিযুগের আট বিপ্লবীর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে এই আলোচনাসভার আয়োজন করে বিপ্লবীদের কথা নামে একটি সংগঠন। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রকৌশলী শেখ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিচারপতি হাবিবুর রহমান। আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, কমিউনিস্ট পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হায়দার আকবর খান রনো, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুর রহমান সেলিম, অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিচারপতি হাবিবুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা বিপ্লবীদের চেতনা মুখে মুখে বললেই হবে না। সেটাকে মনেপ্রাণে ধারণ করতে হবে। তবে আমরা এখন সেভাবে চেতনা ধারণ করতে পারছি না। আমাদের মনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রভাব বিস্তার হচ্ছে না। সে কারণে রামুর মতো ঘটনা ঘটছে।
তিনি বলেন, প্রত্যেক দেশেই একটি বিপ্লবী রাজনৈতিক দল থাকা প্রয়োজন। তবে সেই দল যেন বিদেশীদের নির্দেশে ও অর্থ দ্বারা পরিচালিত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাইরে থেকে দল পরিচালিত হলে দেশের কল্যাণ হয় না।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, অগ্নিযুগের বিপ্লবীরা অনেক আত্মত্যাগ করেছিলেন। সে কারণে তাঁরা অবশ্যই আমাদের কাছে নমস্য। তবে বর্তমানে গণবিপ্লবের জন্য প্রতিটি মানুষকেই বিপ্লবী হতে হবে। তা না হলে দেশে মুক্তি আসবে না।
কমিউনিস্ট পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হায়দার আকবর খান রনো বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করি না বলেই রামুতে নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শাণিত হতে হবে। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস রচনা করি ১৯৪৭ সাল থেকে। আসলে ইতিহাস আরও অনেক দূর থেকে রচিত হয়েছে। অগ্নিযুগের বিপ্লবীরা ব্রিটিশ আমল থেকেই স্বাধীনতার ইতিহাস রচনা করে গেছেন।
ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক বলেন, অতীত ভুলে গেলে কোন জাতি দাঁড়াতে পারে না। তাই আমাদের অতীত ইতিহাসকে স্মরণ করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
অগ্নিযুগের যে আট বিপ্লবীর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে এই আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। তাঁরা হলেন বাদল গুপ্ত, প্রভাস বল, অনিল মুখার্জী, রণেশ দাশগুপ্ত, মহম্মদ ইসমাইল, মৃত্যুঞ্জয় বন্দোপাধ্যায়, পরিতোষ চট্টপাধ্যায় ও সুধাংশু দাশগুপ্ত। অনুষ্ঠানে এসব বিপ্লবীর জীবনী পাঠ করে শোনানো হয়। আলোচনাসভার শুরুতে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী সঙ্গীত পরিবেশন করে।

No comments

Powered by Blogger.