‘সাঁইজির রূপক কথার আমরা অনেক কিছুই বুঝি না’ by মাজেদুল নয়ন

কুষ্টিয়ার ছেউরিয়ায় ফকির লালন শাহর মাজারে অবস্থিত লালন একাডেমিতেই লালন চর্চা ও গবেষণা কেন্দ্র করার দাবি জানিয়েছেন মাজারের খাদেম ফকির মোহাম্মদ আলী শাহ।

লালনের কণিষ্ঠ ভক্ত ফকির ভোলাই সাঁইজির মুরিদ ফকির গোলাম-এ আছিন শাহ’র সন্তান ও মুরিদ হিসেবে গত ৫ বছর ধরে ‍সাঁইজি বারামখানার সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন মোহাম্মদ আলী শাহ্‌। বাংলানিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, সাইজির বিচরণের কথা, লালন ভক্তদের দাবির কথা, নিরাপত্তার কথা, সাঁইজির তরিকা গ্রহণের কথা, সাঁইজির দেখানো মানবাত্মার মুক্তি পথের কথা।
ফকির মোহাম্মদ আলী শাহ বাংলানিউজকে জানান, এখানে প্রতিষ্ঠিত লালন একাডেমি গবেষণা কাজে ব্যবহারের কথা ছিল। কিন্তু এখন এখানে গবেষণা হয় না।

তিনি বলেন, “গবেষণা বাইরেই হয়। সাঁইজিকে নিয়ে যে গবেষণা হয়, তার বেশিরভাগ বিদেশেই হয়। বাংলাদেশেও হচ্ছে। কিন্তু এখানে হয় না। আমরা লালন ভক্তরা চাই, লালন একাডেমি কেন্দ্রিক গবেষণা হোক।”

তিনি বলেন, ‘‘যেহেতু এখানে একটি একাডেমি হয়েছে, একটি অডিটোরিয়ামও হয়েছে। আর বাউল এবং লালন সাঁইজির মূল কেন্দ্র, শেকড় এখানে। তাই এখানে একটি গবেষণাগার হওয়া উচিত।’’

সাঁইজির চিন্তা-চেতনা আর দর্শনকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে তার মতে, “এখানে একটা স্কুল, একটা কলেজ, একটা বিশ্ববিদ্যালয় হলে আরো ভালো হতো। মানুষের চাওয়ার তো শেষ নেই। তবে মনে হয়, এসব চাওয়া অমূলকও নয়। এসব হলে মনে করি, সাঁইজির বিচরণটা আরো বেড়ে যেত।”

গত পাঁচ বছর ধরে এ মাজারের খাদেম মোহাম্মদ আলী শাহ। সাঁইজির তরিকা গ্রহণের ব্যাপারে তিনি বলেন, “৩০ বছর বয়সেই সাঁইজির তরিকা গ্রহণ করি। আমার বাবাও ছিলেন সাঁইজির তরিকার অনুসারী। বাবার কথা-বার্তা চালচলন, সাধুত্ব, ভাব দেখে আমি মুগ্ধ হই এবং উদ্বুদ্ধও হই। সেই সুবাদে আমার এ লাইনে আসা।”

“আমাদের বাড়িতে বাবার জীবোদ্দশায় এবং এখনো সাধুসঙ্গ হয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে সাধুর আগমন হয়। তাদের কথা-বার্তা ভাব এবং লালন সাঁইজির যে ভাবধারায় তারা উদ্বুদ্ধ সেখান থেকেই আমি সাঁইজির তরিকায় উদ্বুদ্ধ হই এবং তরিকা গ্রহণ করি।”

মোহাম্মদ আলী শাহ জানান, তার বাবার নাম ফকির গোলাম-এ আছিন শাহ। বলেন, “বাবা ছিলেন সাঁইজির পালিত পুত্র ও সর্বকনিষ্ঠ ভক্ত ভোলাই সাঁইজির হাতে তৈরি মুরিদ। এ গ্রামে তার যথেষ্ট সুনাম ছিল। বাউল গবেষক ও সাধক নামেই পরিচিত ছিলেন। আজ থেকে একুশ বছর আগেই চলে গেছেন। তার সমাধি বা রওজা এ মাজারেই রয়েছে।”

সাঁইজির মাজারের অনুষ্ঠান সর্ম্পকে বলেন, ‍“উৎসব বলতে এখানে বছরে দু’বার অনুষ্ঠান হয়। একটা হয় তার মৃত্যুবার্ষিকী, পহেলা কার্তিক। আসলে সাধুরা তো মারা যান না, পর্দা রাখেন।’’

‘‘আরেকটা হয় স্মরণোৎসব। ফাল্গুণের দোল পূর্নিমাতে। এর একটা বিশেষত্ব আছে। এ দিনেই স্থানীয় কালিগঙ্গা তীরে তাঁকে ভাসমান অবস্থায় পেয়েছিলেন তার পালক মা, যার সমাধি লালন সমাধির পাশেই বিদ্যমান।’’

‘‘তাকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধারের পর সেবা-সুশ্রূশায় সুস্থ হন। সাঁইজি তখন বসন্ত রোগে আক্রান্ত ছিলেন।”

এখানে প্রসঙ্গত উল্লেখ করা দরকার যে, লালন স্মরণোৎসব আর মৃত্যুবার্ষিকী নিয়ে সাধারণ্যে কিছুটা বিভ্রান্তি রয়েছে। কার্ত্তিকে যে অনুষ্ঠানটা হয়, সেটা তার মৃত্যুবার্ষিকী আর ফাল্গুণের দোল পূর্ণিমায় যেটা হয় তা স্মরণোৎসব। তবে দু’টি উৎসবকেই বিভিন্ন মহল এমনকি মিডিয়ায়ও স্মরণোৎসব নামে অভিহিত করা হচ্ছে— যার চর্চা এবারও প্রায় সব মিডিয়াতেই দেখা গেছে।

তবে আগের তুলনায় লালনের মৃত্যুবার্ষিকী পালন ও স্মরণোৎসবের ব্যাপকতা আর পরিধি দুই-ই বেড়েছে। খাদেম বলেন, ‘‘আগে মানুষের সমাগম ও সাধুবৃন্দের আগমন কম হতো। এখন মানুষের সংখ্যাটা বেড়ে গেছে। লালন সাঁইজির এমন প্রচারণাও ছিল না। সেজন্য মানুষের আসা কম হতো। এতো সাধুগুরু তখন পাওয়া যায়নি।’’

‘‘এখন সাঁইজির প্রচারণা সারা বিশ্বে চলছে। সবাই যে তার অনুসারী তা আমি বলবো না। অনুরাগীও বলবো না। তবে তার যে বাণী প্রচার হচ্ছে, প্রকাশ হচ্ছে, সে বাণীতে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষের আসা-যাওয়া বেড়ে গিয়েছে এবং অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আগে সেবা-শান্তি যেমনটি হতো, এখন তারচেয়ে বেশি হয়।”

মোহাম্মদ আলী বলেন, “সেবা-শান্তি বলতে আহারের কথা বলছি। যেহেতু ভক্তদের আনাগোনা কম ছিল, সংখ্যা কম ছিল, তাই খরচও কম ছিল। এখন খরচ বেশি। সে সময় ধরেন স্থানীয় সাধু-বাউলরা আর স্থানীয়রা অনেক বাধা-বিপত্তির মাঝে সাঁইয়ের অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন।’’

‘‘এখন বাধা-বিপত্তি এলেও সরকারের হস্তক্ষেপে তা নিয়ন্ত্রণ হয়। তাই এখন আর বাধা-বিপত্তি আসে না। মানুষের সমাগমও বেশি হয়। তার ফলে খরচের পরিমাণটা অনেক বেড়ে গেছে।’’

উৎসবের খরচের ব্যাপারে তিনি বলেন, “সরকার সাহায্য করছে।”

এরপর কিছুটা মজার ছলে বলেন, “তারপরে বর্তমানে বাংলাদেশে কয়েকটা মহাশক্তি বিচরণ করছে। যেমন বাংলালিংক, রবি, গ্রামীণফোন।”

এবারের অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে বলেন, “পয়লা কার্তিকের এ মৃত্যুবার্ষিকীটা বাংলালিংক স্পন্সর করছে। শুনেছি এবার নাকি ৩০ লাখ টাকা বাজেট। আগেতো ৩০ লাখ টাকা খরচ হতো না। দশ/বিশ হাজার টাকা খরচ হতো। এ টাকাতেই অনুষ্ঠান হতো। এখনতো আর সম্ভব নয়। এখনতো জিনিসপত্রের দামও বেশি। খরচের পরিমাণ বাড়ছে।”

সাঁইজির দর্শন প্রচারণার ব্যাপারে তিনি বলেন, “প্রায় অর্ধশত বছর আগে ১৯৬৩’তে সাঁইজির সমাধি সংস্কার করা হয়। তখন থেকেই মোটামুটি অনুষ্ঠান বড় হতে থাকে। এখন আরো বড় করে হয়। তবে বিজ্ঞাপন বা স্পন্সর ৫ বছর ধরে হচ্ছে, আরো বড় হচ্ছে।

এ্যাতো প্রচারণা পাওয়ার আগে ভক্ত ও পর্যটকরা হয়তো শুধু শহর থেকে আসতো, বিদেশ থেকে আসতো না। এখন জাপান, আমেরিকা, জার্মান থেকে গবেষকদের আসতে দেখা যায়।”

‘তবে এবারের মৃত্যুবার্ষিকীতে মানুষের সমাগম অনেক কম’ উল্লেখ করে খাদেম বলেন, “সামনে আমাদের দু’টি পরব। কোরবানের ঈদ এবং দুর্গা পূজা। খরচ অনেক। এবার এ কারণেই মানুষের সমাগম কম।”

তবে দেশের প্রবীণ বাউলরা না এলেও তাদের মনটা এখানে চলে আসে বলে জানান তিনি।

মাজারে আসা বিভিন্ন তরিকতের মানুষ রয়েছে। সাধু-সন্ন্যাসী, বাউল যেমন রয়েছে তেমনি পাগলদের সমাগমও বিরাট। খাদেম এ ব্যাপারে বলেন, “মাজার পাগলদেরইতো স্থান। আগে অনুষ্ঠানটা মূল মাজারেই হতো। এখন প্রচারণা বেড়েছে। দর্শক বেড়েছে।”

তিনি বলেন, “মাজারের ওপর খুব অত্যাচার হতো। তাই অনুষ্ঠানটা ওদিকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। মূল অনুষ্ঠান ওখানেই হয়। সাঁইজি নিজেও পাগলের কথা বলেছেন, ‘তিন পাগলের হলো মেলা নদে এসে।’ আবার বলেছেন, ‘তোরা কেউ যাসনে ও পাগলের দেশে।’ সাঁইজিরও পাগল নিয়েই কারবার ছিল। তবে সাঁইজি অনেক কথাই বলেছেন রূপকভাবে। যে কথা বিশ্লেষণ করতে অনেক কষ্ট বোধ হয়। আমরা অনেক কিছুই বুঝি না সাঁইজির কথা।”

সাঁইজি বারবার বলেছেন আত্মার মুক্তির কথা। এ প্রসঙ্গে সাঁইজির এ ভক্ত বলেন, “আত্মার মুক্তি বলতে সাঁইজির একটা ধর্মেরই থিম আছে। কিন্তু আত্মা মুক্তির আগেই আমরা খণ্ডন করে ফেলি।’’

‘‘সাঁইজি বলেছেন সৃষ্টির জগতে যাওয়া যাবে না। এটা সাঁইজির ধর্মেরই একটা থিম। সৃষ্টির জগতে যদি যাওয়া যায়, তাহলে আত্মার খণ্ডন হয়ে যাচ্ছে। আত্মা যদি খণ্ডন হয়ে যায়, মুক্তি মিলবে?”

ফকির মোহাম্মদ আলী এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, “আত্মার মুক্তি তখনই হবে যখন আমরা সৃষ্টির জগতে যাবো না। আত্মাটা আমাদের ঠিক বহাল থাকবে। তারপরও সাধনা-ভজনা আছে। গুরুপতি, গুরুবাদী, ভজন-সাধনার কথাতো প্রকাশ করা যাবে না। এটা গোপন রয়েছে, মারফতের কথা। এটা গুরু-শিষ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।”

বাউল ও লালন দর্শনে রয়েছে যোগাযোগ। তিনি বলেন, “সাঁইজির গানের তো দর্শন আছেই। বাউলতো এক প্রকার দর্শনই বলা যায়। যেখানে বায়ুর সাধনা হয়। ‘বা’ মানে বাতাস, উল মানে সন্ধান (বা+উল=বাউল)। যেখানে বাউলকে বাতাসের সন্ধান করতে হয়, সেখানে তো আলাদা দর্শন থাকেই।”

সাঁইজিকে ভক্তদের শ্রদ্ধা জানানোর ব্যাপারে নিয়ম-কানুন রয়েছে। ফকির বলেন, “সব তরিকাতেই নিয়ম শ্রদ্ধার ব্যাপার থাকে। বিশ্বে বর্তমানে ১২০০ তরিকা বিদ্যমান। এখানে ভক্তি শ্রদ্ধার ব্যাপার-স্যাপার আছে। ভাত খাওয়ারও একটি নিয়ম-কানুন আছে।’’

‘‘আপনি হাত ধোবেন, প্লেটে খাবেন নাকি কলাপাতায় খাবেন, সবকিছুই নিয়ম। এখানেও নিয়ম-কানুন আছে। মাজারে-মসজিদে সবখানে একটি নিয়ম আছে।”

তিনি বলেন, “সাঁইজির মানবতার ধর্ম। বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, হিন্দু, মুসলিম, জৈন, মেথর, মুচি সবাই আসতে পারেন এখানে। এটা মানবতার ধর্ম। মানব সেবাই তার কাজ।”

সাঁইজির তরিকা সর্ম্পকে তিনি জানান, ‘‘১২০০ তরিকার মধ্যে কয়েকটা তরিকাই প্রচলিত, চিশতিয়া, কাদেরিয়া, মোজাদ্দেদিয়া, দশবন্দি প্রভৃতি। সাঁইজির তরিকা ওহাদানিয়া। ওহাদানিয়া আল্লাহ্‌র খাস তরিকা। এটাই সাঁইজির তরিকা।”

দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক সময় বাউল সাধকদের ওপর নির্যাতন হয়। এসব নির্যাতন মোকাবিলায় সরকারি পদক্ষেপ দাবি করেছেন তিনি।

মোহাম্মদ আলী বলেন, “বাউল সাধকদের ‘দাড়ি-চুল কেটে দেওয়া’ এটা আপেক্ষিক ব্যাপার, মসজিদ থেকেও জুতা চুরি হয়।’’

‘‘আমাদের দেশে একটি দল আছেন, যারা লালন সাঁইজিকে মোটেই সহ্য করতে পারেন না। তাদের সংখ্যাগুরুই বলা যায়। আর সাধক বাউল সমাজ সংখ্যালঘু, তো পেরে ওঠেন না। পেশীশক্তিতেও পেরে ওঠেন না। পেশীশক্তি যারা ব্যবহার করে তারা লালন সাঁইজিকে ঠিকমতো বুঝতেও হয়তো পারেননি। যার ফলে এ ঘটনাগুলো ঘটান। এ ক্ষেত্রে, এ পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি পদক্ষেপ অবশ্যই নেওয়া উচিৎ।’’

তিনি বলেন, “সরকারি পদক্ষেপ যদি নেওয়া যেতো, আমার মনে হয় বিভিন্ন জায়গায় যে সাধুসঙ্গ হয়, এর ওপর কোনো ধরনের অত্যাচার-নীপিড়ন হতো না।”

“তবে এ ব্যপারে সাঁইজির কোনো ভাষ্য নেই। সাঁইজি নীরব, নিশ্চুপ। কারণ সাঁইজি তার বাণীতে বলেছেন, ‘যার যার ধর্ম সেই সেই করে, তোমার বলা অকারণ। ভবে সবাই কি হবে ধর্মপরায়ন’...!”

তিনি আরো বলেন, “আসলে সবাইতো আর অবুঝ না। ভালো মানুষও আছেন। রাজবাড়ীর ঘটনায় জ্ঞানী-গুণীরা পথসভা করলেন। যার ফলে সরকারি পর্যায়েই আবার সে বাড়িতে অনুষ্ঠান হয়। যদি আমাদের মানুষের মধ্যে একটা জোট হতো। তাহলে হয়তো তারা ভয় পেতেন।’’

১৯৬৯ সালে গ্রাজুয়েশন করেন মোহাম্মদ আলী শাহ্। কিন্তু বাবার মতানুযায়ী আর চাকরি করা হয় না। বাংলানিউজকে বলেন, “আমি চাকরি পেয়েছি। কিন্তু করতে ভালো লাগেনি। শরীর ভালো ছিল বলে পুলিশ, আর্মি, নেভিতে চাকরি পেয়েছিলাম। সাঁইজির কৃপা আমি যেখানে ইন্টারভিউ দিয়েছি, সেখানেই সফল হয়েছি।”

আগের কথার খেই ধরে মোহাম্মদ আলী শাহ্ বলেন, “পুলিশের এসআই পদে নিয়োগ হলেও বাবাই করতে দিলেন না। বললেন, আমি ফকির মানুষ, তুমি মাত্র তরিকা গ্রহণ করেছো। এ সুবাদে তুমি যদি পুলিশের চাকরি নেও, ধরো কোনদিন ভুলে কাউকে ধরে আনলে, জনগণ কিন্তু থেমে থাকবে না।’’

‘‘বলবে, ওসি ভালো না। একটা ভুল মানুষকে ধরে এনে পিটাপিটি করছেন। তাহলে আমিও দোষী হয়ে গেলাম, তুমিও দোষী হবে। তাই পরে আর চাকরি করা হলো না। যাই হোক কোনো যোগ্যতায় হয়তো এখানে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি।”

‘সংসারে এক মেয়ে, দুই ছেলে’ জানিয়ে মোহাম্মদ আলী শাহ্ বলেন, “তাদেরকে ঠিকমতো বড় করতে পারছি কিনা জানিনা। মেয়ে সরকারি চাকরি করে। মেয়ের জামাই একটা স্কুলের প্রধান শিক্ষক। বড় ছেলে স্থানীয় একটি এনজিওতে চাকরি করে। বৌমা গৃহিণী। আরেক ছেলে, বিদেশে রয়েছে এমবিএ করতে। ছোট বৌমা একটি ইংরেজি স্কুলের শিক্ষিকা। এসব কিছুই সাঁইজির কৃপা। ”

আপনার ভবিষ্যত বংশধররা সাঁইজির মতকে কতোটুকু লালন করতে পারবেন- জানতে চাইলে বলেন, “সমস্যা নেই, সমস্যা বোধ করি না। দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সকলকেই সাঁইজির চরণেই আসতে হবে। তাদের এখন পর্যন্ত সাঁইজির প্রতি ভক্তি আছে। ছোট ছেলে এরই মধ্যে সাঁইজির মুরিদও হয়ে গেছে।”

প্রতিদিন সকাল ৬টায় মাজারে আসেন খাদেম ফকির মোহাম্মদ আলী শাহ্‌। দুপুরে বাড়ি থেকে খেয়ে এসে আবার রাত দশটা পর্যন্ত থাকেন। বিশ্বাস করেন, সাঁইজির প্রচারণা আরো বাড়বে, অনুরাগী-অনুসারীও বাড়বে। মানবাত্মার মুক্তির দিশা পাবে মানুষ। পৃথিবীতে বইবে শান্তি।

No comments

Powered by Blogger.