সর্বোচ্চ বরাদ্দ রেলে-৮৮৮০ কোটি টাকার সম্পূরক বাজেট পাস

বিরোধী দলের অংশগ্রহণ ছাড়াই সংসদে গতকাল সোমবার চলতি ২০১১-১২ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট পাস হয়েছে। স্পিকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত 'নির্দিষ্টকরণ (সম্পূরক) বিল-২০১২' উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।


আট হাজার ৮৮০ কোটি ৪৭ লাখ ২৯ লাখ টাকার এই সম্পূরক বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রেলপথ মন্ত্রণালয়ে তিন হাজার ৮৯০ কোটি ৫০ লাখ ৫৯ হাজার টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনা শেষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর ২২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অনুকূলে মোট আট হাজার ৮৮০ কোটি ৪৭ লাখ ২৯ লাখ টাকা মঞ্জুরি দাবি কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিরোধী দল সংসদে না থাকায় তাদের দেওয়া ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপিত হয়নি। তবে একমাত্র স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. ফজলুল আজিম ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন করলেও তা কণ্ঠভোটে নাকচ হয়।
সম্পূরক বাজেটে কৃষি মন্ত্রণালয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এক হাজার ৮৫৩ কোটি ৮৫ লাখ পাঁচ হাজার টাকা এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ তৃতীয় সর্বোচ্চ এক হাজার ২৯২ কোটি ৬৯ লাখ ২৩ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছে। এ ছাড়া প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ১৮৫ কোটি ১৪ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৩৩ কোটি ৪১ লাখ ২০ হাজার টাকা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১২৫ কোটি ৫১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ তিন কোটি ৯ লাখ টাকা, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ৫৮৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, বিদ্যুৎ বিভাগ ৩১ কোটি ৫৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা, সুপ্রিম কোর্ট ১৩ কোটি ১১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সাত কোটি ২১ লাখ ৫৪ হাজার টাকা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ১০৭ কোটি তিন লাখ ৬৭ হাজার টাকা, শিল্প মন্ত্রণালয় ২৫৯ কোটি ৮০ লাখ ৩৩ হাজার টাকা, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ১৪ কোটি তিন লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ ২৪৫ কোটি ৭১ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ১৪৬ কোটি ২০ লাখ ৯ হাজার টাকা, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ১২ কোটি ৯৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৪২ কোটি ৩৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকা, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ৩২ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, রাষ্ট্রপতির কার্যালয় ১৪ লাখ ৩৪ হাজার টাকা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন ১০ লাখ ৩০ হাজার টাকা মঞ্জুরি পেয়েছে।
সম্পূরক বাজেট পাসের আগে অর্থমন্ত্রী আলোচনায় বলেন, সমালোচকরা বলছেন বাজেট ভ্রান্তনীতি ও ঝুঁকির ওপর প্রণয়ন করা হয়েছে। কিন্তু যদি ভ্রান্তনীতির ওপর বাজেট হতো তাহলে মূল্যস্ফীতি দুই ডিজিট থেকে কিভাবে এক ডিজিটে নামল? মহামন্দার বছরে কিভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকল? ব্যাংক ঋণ কিভাবে কমল? সমালোচকরা যা-ই বলুন না কেন বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে তিনি দাবি করেন।
শেয়ারবাজার অর্থনীতির ওপর তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, 'আমি শেয়ারবাজার নিয়ে কথা বলতে চাই না। বলিও না। কারণ, এটা একটা দুষ্টু বাজার। এখানে অনেক সংস্কার করেও লাভ হয়নি। তবে শেয়ারবাজারের ক্ষেত্রে একটি মৌলিক পরিবর্তন আনা দরকার। আপনারা ডিসেম্বরে সেটা দেখতে পাবেন।'
রেন্টাল বিদ্যুৎ প্লান্টের সমালোচনার জবাবে মুহিত বলেন, 'বিদ্যুৎ ছাড়া অর্থনীতির অগ্রগতি, বিকাশ ও উন্নয়ন সম্ভব নয়। বিদ্যুৎ ছাড়া উন্নয়ন হবে না। বিনিয়োগও আসবে না। তাই বিদ্যুৎকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। রেন্টাল প্লান্ট প্রকল্প হাতে নিয়েছি।' রেন্টাল বিদ্যুৎ ছাড়া অর্থনৈতিক অগ্রগতি সম্ভব ছিল না বলে তিনি দাবি করেন।
সরকার জ্বালানির মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, 'আমরা অনেক আগেই জ্বালানির মূল্য সমন্বয় করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু রাজনৈতিক কারণেই তা সম্ভব হয়নি। তবে পর্যায়ক্রমে এটা করতে হবে। বিশ্ব পরিস্থিতি ও দেশীয় বাস্তবতা বিবেচনা করে সেটা করা হবে।'
ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন করে মো. ফজলুল আজিম বলেন, 'অর্থনীতির দুরবস্থার কারণে দেশে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি। মন্ত্রী শেয়ারবাজারকে ফটকাবাজির বাজার আখ্যায়িত করায় নৈরাজ্যের সৃষ্টি হয়েছিল। আর আজ দুষ্টু বাজার আখ্যায়িত করলেন, জানি না কাল কী পরিস্থিতি হবে!' তিনি সরকারি দলের নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, টিভি টকশোতে এক নেতা বলেছিলেন, একজন বিদেশে দৌড়ে অংশ নিয়ে মন্ত্রিত্ব পেয়েছিলেন। আজ বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে, মন্ত্রিত্ববঞ্চিত ও মন্ত্রিত্ব হারানো অনেকেই এখনো সেই দৌড় প্রতিযোগিতায় আছেন। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। অর্থনীতি পদে পদে হোঁচট খাচ্ছে : মেনন
এর আগে সম্পূরক বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বিরোধী দলের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, একের পর এক আলটিমেটাম দিয়ে বিএনপি-জামায়াত পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু তাদের এই স্বপ্ন কখনোই পূরণ হবে না। সংসদের বাইরে আস্ফালন করে কোনো লাভ হবে না। মহাজোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বিদ্যুৎ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, "সমালোচকরা কেউ কেউ বলেন, এবারের বাজেট 'ভালো' তবে 'রাজনৈতিক'। আবার কেউ কেউ বলেন, এবারের বাজেট 'নির্বাচনমুখী' হয়েছে। আমি ওইসব সমালোচককে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল। এ দল জনকল্যাণমুখী রাজনৈতিক বাজেটই দেবে। হোমিওপ্যাথিক বা এলোপ্যাথিক বাজেট দেবে না। আর অবশ্যই আমরা নির্বাচনমুখী বাজেটই দেব। বাজেট নির্বাচনমুখী হবে না তো 'সামরিকমুখী' হবে? নির্বাচনমুখী বাজেটের মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে জনগণকে সঙ্গে নিয়েই আমরা আবার ক্ষমতায় আসতে চাই। বাজেট বড় হওয়ার অর্থ অর্থনীতি তত বড়, দেশও তত বড়।" তিনি আরো বলেন, 'এ সরকার হাওয়ায় ভেসে আসেনি। প্রধানমন্ত্রীর একটি রূপকল্প আছে। আর তা আছে বলেই আমরা একটি মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হতে চাই।' তিনি বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'আপনারা যাঁরা বাইরে কথা বলেন, আপনারা যদি জাতীয় মূলনীতিতে বিশ্বাস করেন তাহলে আপনাদের সঙ্গে আমরা জাতীয় ঐক্য করতে রাজি।'
সুরঞ্জিত বলেন, বিএনপি কৃষি ও ডিজেলে হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি নিয়েও সমালোচনা করছে। তাদের দৃষ্টিতে কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়া যাবে না। তাদের সময় অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান কৃষিতে ভর্তুকি না দেওয়ার যুক্তি দেখিয়ে বলতেন, 'কৃষিতে ভর্তুকি দিলে খাদ্যে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে যাবে। ফলে বৈদেশিক ঋণ পাওয়া যাবে না। কিন্তু আমাদের সরকার ঋণপ্রাপ্তি নয়, কৃষককে ভর্তুকি দিয়ে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে বিশ্বাসী। তাই আজ আমাদের দেশ খাদ্য নিরাপত্তায় বিশ্বে মডেল দেশ হিসেবে পরিণত হয়েছে।'
বিদ্যুৎ সংকট পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন মহলের বিরূপ বক্তব্য নিয়েও সমালোচনা করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, জোট সরকার বিদ্যুতের নামে শুধু খাম্বা বসিয়ে 'হাম্বা হাম্বা' করার যে পরিস্থিতি তৈরি করে গিয়েছিল, সেখান থেকে কোনো ম্যাজিকের মাধ্যমে রাতারাতি উন্নয়ন সম্ভব নয়। তার ওপর আবার কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চাইলে বামপন্থীরা হায় হায় করে ছুটে আসে। এরপরও অসাধ্য সাধন করে মাত্র সাড়ে তিন বছরে কিভাবে ৪০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হলো তা নিয়ে কেউ ভেবে দেখেছেন কি? শুধু সংকট দেখলেই হবে না। বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ছে বলেই এর চাহিদাও বাড়ছে। এ কারণে সংকট দেখা দিচ্ছে। কারণ এটাই স্বাভাবিক যে বিদ্যুৎ উৎপাদন এরিথমেটিক হারে বাড়লে চাহিদা জিওমেট্রিক হারে বাড়বে।
সৌদি কূটনীতিক খালাফ ও সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড ষড়যন্ত্রের অংশ উল্লেখ করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, 'আমরা মুসলিমপ্রধান দেশ। মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে খুব নিখুঁতভাবে ওই কূটনীতিককে হত্যা করা হয়েছে। আজও ঘটনার কোনো কূল-কিনারা পাওয়া যায়নি। একই রকম ষড়যন্ত্র হয়েছে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির ক্ষেত্রেও। গণমাধ্যমের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য এ হত্যা করা হয়েছে। সব দোষ সরকারের ঘাড়ে না চাপিয়ে মানবিকভাবে দেখা উচিত। তাহলে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীকেও ফেরত পাওয়া যেত।'
বাজেট নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে রাশেদ খান মেনন বলেছেন, দেশের অর্থনীতি পদে পদে হোঁচট খাচ্ছে। প্রথম দিকে অর্থমন্ত্রী মানুষের মনে বিরাট আশা জুগিয়েছিলেন। একটি-দুটি বাদে অর্থনীতির সূচক ঊর্ধ্বমুখী হলেও তা এখন নিম্নমুখী। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভ্রান্তনীতির কারণে অর্থনীতিকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। মনে হয়েছে, অর্থনীতি পরিচালনায় অর্থমন্ত্রী সতর্ক ছিলেন না। তাঁর কথাবার্তায় অনেক সময় অযাচিত সমস্যার সৃষ্টি করেছে। শেয়ারবাজার নিয়ে অর্থমন্ত্রী একসময় কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু অন্ধ হলে যেমন প্রলয় বন্ধ থাকে না, তেমনি অর্থমন্ত্রী কথা বলা বন্ধ করায় শেয়ারবাজারের প্রলয় বন্ধ হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে শেয়ারবাজার পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও বিনিয়োগকারীদের আস্থা আজও ফিরে আসেনি। শেয়ার কারসাজির নায়করা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।
কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের তীব্র সমালোচনা করে মেনন বলেন, 'বিদ্যুৎ নিয়ে কথা কম বলাই ভালো। যাঁরা রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের বিরোধিতা করেছেন, তাঁদের দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়েছেন বিদ্যুৎ উপদেষ্টা। আমি অজ্ঞ-জ্ঞানপাপী বা দেশদ্রোহী যাই হই না কেন, একটা কথা সত্য আর তা হচ্ছে উপদেষ্টাদের কোনো জবাবদিহি করতে হয় না। তাদের লেজ অন্য কোথাও বাঁধা। দেশ উপদেষ্টাশাসিত সরকার ব্যবস্থায় চলে না। দেশ চলছে সংসদীয় গণতন্ত্রের ওপর ভিত্তি করে।'
রাশেদ খান মেনন বলেন, মুক্তিযুদ্ধ করলেই যদি দেশপ্রেমিক হওয়া যেত তাহলে খন্দকার মোশতাক সবচেয়ে বড় দেশপ্রেমিক হতেন। দেশপ্রেমিক হতে হলে প্রতিটি ক্ষেত্রে দেশপ্রেম থাকতে হয়। তিনি বলেন, "রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট কোনো কাজে আসেনি। বরং এই প্লান্টের জন্য তেল কিনতে কিনতে 'নুন আনতে পান্তা' ফুরানোর মতো অবস্থা। লোকজন বলে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি তিন বছর আগে যেখানে ছিল সেখানেই আছে। এখন শোনা যাচ্ছে, বড়লোকদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় বাড়তি টাকায় বিদ্যুৎ দেওয়া হবে। এতে লাভ কী হবে জানি না। তবে সমস্যা আরো বাড়বে।"
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সমালোচনা করে রাশেদ খান মেনন বলেন, ইলিয়াস আলী গুম হয়েছেন। শিশুসন্তানদের অপহরণ করে হত্যা করা হচ্ছে। সাগর-রুনি খুন হয়েছেন। সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে। পুলিশ বিচারকদের পেটাচ্ছে। এ অবস্থার অবসান জরুরি। পুলিশের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এই ক্ষোভও নিরসন করতে হবে। তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।
রেল থেকে কালো বিড়াল তাড়ানোর দাবি জানিয়ে মেনন বলেন, রেলের ভেতরে এখনো কালো বিড়াল রয়েছে। এই বিড়াল তাড়াতে হবে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বলেন, ঘরের মধ্যে কালো বিড়াল পুষলে নিজেদেরই ক্ষতি হবে। তিনি বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় মার্কিন সপ্তম নৌবহর আসার বিষয়টি নিয়ে দেশবাসী ও বামপন্থীদের উদ্বেগের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
রাশেদ খান মেনন বলেন, নয়াপল্টনে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট সমাবেশ করছে। এই জনসভার নামে মূলত জামায়াতের নেতা-কর্মীরা শোডাউন করছে। তারা গোলাম আযম-নিজামী-মুজাহিদ-সাঈদীর মুক্তির দাবি নিয়ে বিশাল বিশাল ব্যানার টানিয়েছে। আসলে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষাই এই জনসভার মূল লক্ষ্য। সুযোগ পেলে এই গোষ্ঠী দেশকে আবার দুর্নীতি-দলীয়করণ ও সাম্প্রদায়িকতার অতল গহ্বরে নিক্ষেপ করবে।
পত্রিকার অসত্য, উদ্দেশ্যমূলক ও ফরমায়েশি প্রতিবেদনের কারণে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প বাধাগ্রস্ত হয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। সম্পূরক বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সৈয়দ আবুল হোসেন বলেন, 'অসত্য খবরের ভিত্তিতে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ সমালোচনার শিকার হয়েছেন। আমি নিজেও কিছু পত্রিকার অসত্য সমালোচনার শিকার। কিছু পত্রিকার অসত্য, উদ্দেশ্যমূলক ও ফরমায়েশি প্রতিবেদনের কারণে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাধাগ্রস্ত হয়। বিভিন্ন কাজে দরপত্র জমাদানকারীরা কাজ না পেলে মিডিয়ার দ্বারস্থ হয়। অথচ সরকারি সব টেন্ডারের কাজ স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করা হয়।'
গত রবিবার সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনা শুরু হয়। গত ৭ জুন অর্থমন্ত্রী বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

No comments

Powered by Blogger.