পবিত্র কোরআনের আলো-কাফেররা আল্লাহ ও জীবন-মৃত্যু সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর ধারণা পোষণ করে

১৫৫. ইন্নাল্লাযীনা তাওয়াল্লাও মিনকুম ইয়াওমাল তাক্বাল জামআ'-নি; ইন্নামাছ্তাযাল্লাহুমুশ্ শাইত্বা-নু বিবা'দ্বি মা-কাছাবূ- ওয়ালাক্বাদ আ'ফাল্লা-হু আ'নহুম; ইন্নাল্লা-হা গাফূরুন হালীম। ১৫৬. ইয়া-আয়্যুহাল্লাযীনা আ-মানূ লা-তাকূনূ কাল্লাযীনা কাফারূ ওয়াক্বা-লূ লিইখওয়ানিহিম ইযা- দ্বারাবূ ফিল আরদ্বি আও কা-নূ গুয্যান লাও কা-নূ
ই'নদানা- মা- মা-তূ ওয়ামা- ক্বুতিলূ; লিইয়াজআ'লাল্লা-হু যা-লিকা হাছরাতান ফী ক্বূলূবিহিম; ওয়াল্লা-হু ইউহ্য়ী ওয়া ইউমীতু; ওয়াল্লা-হু বিমা- তা'মালূনা বাছীর। [সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৫৫-১৫৬]

অনুবাদ : ১৫৫. যেদিন দুটি বাহিনী একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল যুদ্ধের ময়দানে, সেদিন যারা ময়দান থেকে পালিয়ে গিয়েছিল তারা সেটা করেছিল শয়তানের প্ররোচনায়, কারণ তাদের কেউ কেউ সে রকমই অর্জন করেছিল। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা তাদের ক্ষমা করে দিলেন, আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও পরম প্রজ্ঞাবান।
১৫৬. হে ইমানদাররা, তোমরা কাফেরদের মতো হয়ো না। এ কাফেরদের কোনো ভাই যখন বিদেশে মারা যেত কিংবা যুদ্ধে লিপ্ত হতো, তখন তারা বলত, এরা যদি বাইরে না গিয়ে আমাদের কাছে থাকত তা হলে এরা মরত না, বা যুদ্ধে নিহত হতো না। এটা যেন আল্লাহ তায়ালা তাদের মনের আক্ষেপে পরিণত করে দিত। আসলে আল্লাহ তায়ালাই মানুষের জীবন দেন এবং মৃত্যু ঘটান আর তোমরা যা করে যাচ্ছ, আল্লাহ এর সব কিছুই দেখেন।

ব্যাখ্যা : ১৫৫ নম্বর আয়াতটি এসেছে আগের আয়াতের ধারাবাহিকতায়। ওহুদের যুদ্ধে যারা মৃত্যুর ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিল তাদের তিরস্কার করেই এখানে বলা হচ্ছে, তারা এ কাজ করেছিল শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে। আর শয়তান তাদের কাঁধে চেপে বসেছিল এ কারণে যে তাদের মধ্যকার কেউ কেউ নিজেদের কর্ম ও বিশ্বাসের মাধ্যমে এ রকমই অর্জন করেছিল। অর্থাৎ শয়তানের প্ররোচনায় পড়ার পটভূমিও মানুষ নিজেরাই তৈরি করেছিল। শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে শয়তানকে দায়ী করলে চলবে না। বরং শয়তানের প্ররোচনায় পড়ার জন্য মানুষের কর্মকাণ্ডই দায়ী। এই আয়াতে বলা হয়েছে, এর পরও আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের ক্ষমা করে দিয়েছেন, যেহেতু তারা অনুশোচনা করে ক্ষমাপ্রার্থী হয়েছিল।
১৫৬ নম্বর আয়াতটিতে মুমিনদের কাফেরদের মতো না হওয়ার উপদেশ দেওয়া হয়েছে কাফেরদের কিছু ভ্রান্ত ধারণার কথা উল্লেখ করে। কাফেররা আল্লাহ সম্পর্কে এবং জীবন ও মৃত্যু সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করে। যেমন তাদের কোনো লোক যখন বিদেশে গিয়ে মারা যেত বা যুদ্ধে গিয়ে নিহত হতো তখন তারা বলত এরা যদি সেখানে না গিয়ে আমাদের কাছে থাকত তবে এরা মরত না বা নিহত হতো না। এটা জীবন-মৃত্যু সম্পর্কে এবং আল্লাহ সম্পর্কে এদের ভুল ধারণারই বহিঃপ্রকাশ। কারণ জীবন-মৃত্যু আল্লাহর হাতে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী

No comments

Powered by Blogger.