এই ওষুধ প্রশাসন দিয়ে কী হবে by ড. মুনীরউদ্দিন আহমদ

এ লেখার শিরোনামটি আমার নয়। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত সম্পাদকীয় থেকে এ শিরোনামটি ধার নিয়েছি। কিছুদিন আগে কালের কণ্ঠে 'ভেজাল ওষুধ নাকি মানুষ হত্যা' শীর্ষক একটি সম্পাদকীয় ছাপা হয়। সম্পাদকীয়তে বলা হয়, মুমূর্ষু রোগী বাঁচার আকুতি নিয়ে ওষুধ সেবন করেন।


কিন্তু সেই ওষুধ যদি ভেজাল হয়, তাহলে কী হবে? মৃৃত্যুটাই কেবল ত্বরান্বিত হবে। ২৫৮টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৪০টির ওষুধ মানসম্মত বলে জানা গেছে। বাকি ওষুধ মানসম্মত না হওয়ায় রোগ সারাচতুনোর ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে না। আবার ভেজাল ওষুধও তৈরি হয় প্রচুর। ইটের গুঁড়ার সঙ্গে নানা ধরনের কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি হয় নানা ধরনের ভেজাল ওষুধ। বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এমন কিছু ভেজালকারী প্রতিষ্ঠান ধরা পড়েছে, যে প্রতিষ্ঠানগুলো ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, সিরাপসহ ৮০ থেকে ৯০ ধরনের ওষুধ তৈরি করত। অধিক লাভজনক হওয়ায় দোকানগুলোয় এসব ওষুধই বেশি বিক্রি করতে দেখা যায়, বিশেষ করে গ্রামগঞ্জে। এর পরিণতি কী হচ্ছে? বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, ইদানীং হাসপাতালেও রোগী মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনক বেড়ে গেছে। অনেক সময়ই দেখা যায়, ওষুধে কাজ হয় না, তখন বারবার ওষুধ বদলাতে হয়। রোগীর জন্য তা হয়ে দাঁড়ায় প্রাণঘাতী। সম্পাদকীয়তে আরো বলা হয়, আমরা নিশ্চয়ই ভুলে যাইনি ১৯৯২ ও ২০০৯ সালের বিয়োগান্তক ঘটনাগুলোর কথা। ১৯৯২ সালে বিষাক্ত প্যারাসিটামল খেয়ে কেবল শিশু হাসপাতালেই তিন শতাধিক শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। ২০০৯ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রিড ফার্মাসহ তিনটি ওষুধ কম্পানির বিরুদ্ধে বিষাক্ত প্যারাসিটামল সিরাপ বাজারজাত করার অভিযোগ উঠেছিল। প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, সেসব সিরাপ পান করে ২৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। ঘটনাগুলোর পর পর ওষুধ প্রশাসনের দৌড়ঝাঁপ দেখা গেলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা আবার থিতিয়ে যায়। ওষুধ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বললেই কর্মকর্তারা জানান, তাঁদের লোকবল নেই, আধুনিক গবেষণাগার নেই ইত্যাদি। তাই তাঁরা সারা দেশের এত বড় ওষুধ বাজার পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। কিন্তু দুর্জনেরা বলেন, ওষুধ প্রশাসনের লোকদের হাত না করে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বাজারজাত করা যায় না। আমরা কোনটাকে সত্য বলে ধরে নেব! শর্ষের মধ্যেই ভূত রয়ে গেছে। এ ওষুধ প্রশাসন দিয়ে কী হবে?
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে ২৫৮টি অ্যালোপ্যাথিক, ২২৪টি আয়ুর্বেদিক, ২৯৫টি ইউনানি ও ৭৭টি হোমিওপ্যাথিকসহ ৮৫৪টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দেশে বছরে ওষুধ বিক্রি হচ্ছে আট হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে আড়াই শ কোটি টাকার ওষুধ ভেজাল হচ্ছে। জীবন রক্ষার নামে নকল, ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধে বাজার ছেয়ে গেছে। নকল ও ভেজাল ওষুধ বাজারজাত করায় শুধু জটিল রোগব্যাধি নয়, ঘটছে মৃত্যুর মতো ঘটনাও। সারা দেশে ২৫৮টি ওষুধ কম্পানি ২০ হাজার ৪৫৬ ব্র্যান্ডের ওষুধ উৎপাদন করছে। এ ছাড়া নকল ও ভেজাল ওষুধ তৈরি হচ্ছে জিঞ্জিরা, কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ, লালবাগ, ইসলামবাগ, মীরহাজীরবাগ, জিগাতলা, মালিবাগ, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, বাড্ডা, সাভার ও টঙ্গীতে। এর মধ্যে বড়জোর ৪০টি ছাড়া বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো নকল ও নিম্নমানের ওষুধ তৈরি করেছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১০ মে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে জানানো হয়, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও নিম্নমানের ওষুধ তৈরির অভিযোগে ৬২টি ওষুধ কম্পানির উৎপাদন সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানকে তিন মাসের মধ্যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও নিম্নমানের ওষুধ তৈরির অভিযোগে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। ওই বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম সাংবাদিকদের জানান, সংসদীয় কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই মন্ত্রণালয় এ পদক্ষেপ নিয়েছে। তিন মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানগুলো যদি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান অনুযায়ী ওষুধ উৎপাদন শুরু না করে, তবে তাদের সনদ বাতিলের সুপারিশ করবে কমিটি। তিনি অবশ্য সাময়িক বন্ধ রাখা ৬২টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করতে রাজি হননি। কিন্তু তিনি কেন এই কম্পানিগুলোর নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি, তা আমাদের বোধগম্য নয়। এটা তো সত্যি যে ওই ৬২টি কম্পানির উৎপাদন বন্ধ রাখা হলেও তাদের অসংখ্য ওষুধ এখনো বাজারে প্রচলিত আছে এবং সেগুলো নিম্নমানের বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কম্পানির নামসহ ওষুধগুলোর নাম প্রকাশ করা না হলে চিকিৎসকরা সেসব ওষুধ ব্যবস্থাপত্রে লিখবেন, রোগীরাও তা সেবন করবে। এতে করে রোগী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ছাড়াও নিম্নমানের ওষুধ গ্রহণের ফলে জটিল সংক্রামক রোগসহ অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগ না সারার কারণে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। এর দায়দায়িত্ব কে নেবে? এটা হতে দেওয়া যায় না। খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে বলেছেন, পরিস্থিতি আমরাও অনুধাবন করতে পারছি। আমি নিজেও বিষয়টি নিয়ে পরিষ্কার হতে পারছি না। এ প্রসঙ্গে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বক্তব্যে আমি অবাক ও হতাশ হয়েছি। তিনি বলেছেন, বিভ্রান্তির দিকে না তাকিয়ে চিকিৎসকরা বরং বড় বড় ওষুধ কম্পানির ওষুধ লিখলেই তো পারেন, কারণ বড় বড় কম্পানিগুলোতে মানসম্পন্ন উপায়েই ওষুধ প্রস্তুত হয়। এ ছাড়া দেশে সব মিলিয়ে যে ওষুধ উৎপাদন বা বাজারজাত হয়ে থাকে, এর মধ্যে ৮০ শতাংশই মানসমপন্ন উপায়ে হয় বলে আমরা জানি। বাকি মাত্র ২০ শতাংশের মতো ওষুধ নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। আর এই ২০ শতাংশ নিম্নমানের ওষুধ যেসব কম্পানি তৈরি করে সেসব কম্পানির তেমন পরিচিতিও নেই। এগুলো বুঝেশুনে ওষুধ লিখলে আর খেলে কোনো বিভ্রান্তি হওয়ার সুযোগ থাকে না। অধিদপ্তরের শীর্ষস্থানীয় একজন কর্মকর্তা হিসেবে তিনি যে অভিমত ব্যক্ত করেছেন, তার কি আইনগত বৈধতা আছে? চিকিৎসকরা যদি শুধু বড় কম্পানির ওষুধ প্রেসক্রাইব করেন, তাহলে বৈধ লাইসেন্সপ্রাপ্ত ছোট কম্পানিগুলো গুণগত মানসম্পন্ন ওষুধ তৈরি করা সত্ত্বেও বাজারে টিকে থাকতে পারবে না। এটা কী প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণ হয়ে গেল না। দেশে ২৫৮টি কম্পানির মধ্যে ৪০ থেকে ৫০টি কম্পানি গুণগত মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদন করে বলে ধরা হয়। ৬২টি ওষুধ কম্পানি নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন করার কারণে তাদের উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে। ওপরে উলি্লখিত দুই ধরনের ওষুধ কম্পানির সংখ্যা বাদ দিলেও দেশে আরো ১৪৬টি ওষুধ কম্পানি থাকে। এসব কম্পানির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসক এবং রোগীদের এসব কম্পানির ওষুধ প্রেসক্রাইব করা এবং গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া কি মেনে নেওয়া যায়? অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের মতে, 'বাজারজাতকৃত ২০ হাজার ৪৫৬ ব্র্যান্ডের ২০ শতাংশ নিম্নমানের ওষুধের সংখ্যা দাঁড়ায় চার হাজারের মতো। চার হাজারের মতো নিম্নমানের ওষুধ বাজারে প্রচলিত আছে এটাও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
বাজারে প্রচলিত অধিকাংশ ব্র্যান্ডের ওষুধই ওষুধ প্রশাসনের কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই অবাধে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। ফলে রোগীরা আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি গুরুতর শারীরিক ক্ষতিরও শিকার হচ্ছে। এসব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় প্রাণহানিরও আশঙ্কা রয়েছে। দেশে প্রায় সোয়া দুই লাখ ওষুধের দোকান রয়েছে। এর মধ্যে লাইসেন্স রয়েছে মাত্র ৬০ হাজার দোকানের। অবশিষ্টগুলোর কোনো লাইসেন্স নেই। ফলে তারা অবাধে নকল ওষুধ বিক্রি করছে। নকল, ভেজাল বা নিম্নমানের ওষুধ গ্রহণের ফলে শরীরে সৃষ্ট প্রতিক্রিয়ার কারণে অনেক সময় নানা ধরনের বিভ্রান্তি দেখা দেয়। এসব বিভ্রান্তির কারণে মূল কালপ্রিট নকল, ভেজাল বা ক্ষতিকর ওষুধের পরিবর্তে আমরা আমাদের স্বাস্থ্যের অবনতি বা মৃত্যুর জন্য অন্যসব নির্দোষ উপাদানকে দায়ী করে বসি। ওষুধ যখন সেবন করা হয় তখন বোঝার উপায় থাকে না ওষুধটি নকল বা আসল। ওষুধ সেবনের পর কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া না গেলে রোগী ভাবে তার রোগ নির্ণয় ঠিক হয়নি। তখন রোগী অন্য ডাক্তারের কাছে যায়, বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করতে গিয়ে আর্থিকভাবে সর্বস্বান্ত হয়। নকল ও ভেজাল ওষুধের কারণে শরীরে কোনো বিষক্রিয়া বা ক্ষতিকর অবস্থার সৃষ্টি হলে তাকে ওষুধের অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে চিহ্নিত করে রোগীকে অন্য ওষুধ প্রদান করা হয়। মূল দোষী সেই ভেজাল ওষুধটি বরাবরই দৃষ্টির বাইরে থেকে যায়। অনেক ক্ষেত্রে নকল, ভেজাল ও ক্ষতিকর ওষুধের কারণে কারো স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলে বা মৃত্যু হলে দোষ হয় রোগের, নতুবা ডাক্তারের অথবা হাসপাতালের। আমরা খুব কমই ভাবি নকল, ভেজাল, নিম্নমানের ওষুধের কারণে বিশ্বের অধিকাংশ রোগী মারা যায়। কেবল জনবল সংকটের কারণে নকল ও ভেজাল ওষুধ প্রতিরোধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রশাসন। জনবল সংকটের কথাটি নতুন নয়। ওষুধ প্রশাসন পরিদপ্তর প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জনবল সংকটের কথা আমরা শুনে আসছি। ওষুধ প্রশাসন পরিদপ্তর অধিদপ্তরে পরিণত হয়েছে অনেক দিন আগে। এর পরও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে জনবল সংকট থাকার কী কারণ থাকতে পারে, এটাও আমাদের বোধগম্য নয়।
নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধের করালগ্রাস থেকে আমাদের বাঁচতে হবে। কিভাবে বাঁচা যায়, সে ব্যাপারে কিছু পরামর্শ :
এক. যেসব ওষুধের দোকানে অভিজ্ঞ ফার্মাসিস্ট বা চিকিৎসক নেই, সেসব দোকান থেকে ওষুধ না কেনাই ভালো। দুই. ওষুধ কেনার পর ক্যাশমেমো গ্রহণ করুন। ক্যাশমেমো ছাড়া কোনো ওষুধ কিনবেন না। ওষুধ বিক্রেতাকে ক্যাশমেমো দিতে বাধ্য করুন। তিন. ক্যাশমেমোর ওপর পরিষ্কারভাবে ওষুধের নাম, ব্যাচ নম্বর ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লেখা হয়েছে কি না পরীক্ষা করে দেখুন। ওষুধের ব্যাচ নম্বর, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লেখা না হলে ক্যাশমেমো গ্রহণ করবেন না। ক্যাশমেমোতে পরিষ্কারভাবে ওষুধের দাম লেখা থাকা চাই। চার. ক্যাশমেমোতে ওষুধের জেনেরিক নাম লেখা হলে ওষুধ প্রস্তুতকারক কম্পানির নাম উল্লেখ করতে হবে। পাঁচ. প্রেসক্রিপশনে চিকিৎসক যেসব ওষুধ লিখেছেন, ঠিক সে ওষুধটি কিনুন। ওষুধ বিক্রেতা প্রেসক্রিপশনে প্রদত্ত ওষুধের পরিবর্তে অন্য ওষুধ দিতে চাইলে যাচাই না করে কিনবেন না। কারণ ওষুধ বিক্রেতা বিকল্প ওষুধের নামে নকল, ভেজাল বা নিম্নমানের ওষুধ বিক্রি করে আপনাকে ঠকাতে পারে। ছয়. খোলা বা খুচরা ওষুধ কেনার ব্যাপারে সতর্ক হোন। খোলা ওষুধ নকল, ভেজাল বা নিম্নমানের হতে পারে। সাত. ওষুধের প্যাকেট বা মোড়কের ওপর মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ দেখে ওষুধ কিনুন। মোড়কের ভেতরে ওষুধের প্রতিটি স্ট্রিপে এই তারিখ মুদ্রিত থাকে। কৌটার ওষুধ বা শিশির ওষুধ কেনার সময় ভালো করে দেখে নিন, সিল অক্ষত আছে কি না। আট. ওষুধের মোড়কের গায়ে খুচরা মূল্য, ব্যাচ নম্বর ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লেখা থাকে। ওষুধ কেনার আগে এসব তথ্য পরীক্ষা করে দেখুন। লিখিত মূল্যের কম দামে ওষুধ বিক্রি হলে ওষুধ নকল বা ভেজাল হতে পারে। নয়. অনেক ওষুধের নামের উচ্চারণ অত্যন্ত কাছাকাছি। পরীক্ষা করে দেখুন আপনি ঠিক ওষুধটি গ্রহণ করছেন কি না। ১০. ওষুধের লেবেল ক্ষতিগ্রস্ত, নষ্ট বা পুরনো হলে ওই ওষুধ কিনবেন না। ১১. যারা অশিক্ষিত বা পড়াশোনা কম তাদের ওষুধ কেনার সময় শিক্ষিত বা অভিজ্ঞ লোকের সাহায্য নেওয়া বাঞ্ছনীয়। ক্রেতা অশিক্ষিত হলে বিক্রেতা এর সুযোগ নিতে পারে। ১২. ওষুধ ব্যবহারের পর লেবেল, ওষুধের কৌটা বা শিশি, মোড়ক ধ্বংস করে ফেলুন। ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ বা গ্লাভস ব্যবহারের পর ধ্বংস করে ফেলুন, যাতে অসৎ ব্যবসায়ীরা এগুলো রিপ্যাক করে বাজারজাত করতে না পারে।
লেখক : অধ্যাপক, ফার্মেসি অনুষদ, ঢাবি এবং প্রো-ভিসি, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি

No comments

Powered by Blogger.