৭৭ বছর পর মা-মেয়ের মিলন

মানবজমিন ডেস্ক: ৭৭ বছর এক দীর্ঘ সময়। এক জীবনের চেয়েও তা অনেকাংশে বেশি। আর সেই দীর্ঘ সময় পরে এক মা ও তার মেয়ের মধ্যে মিলন ঘটেছে। তারা হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার মা মিনকা ডিসব্রো ও তার মেয়ে বেটি জেইন। ১৯২৮ সালের এক গ্রীষ্মে মিনকা ডিসব্রো ধর্ষিত হয়েছিলেন। এর ফলে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। নির্দিষ্ট সময় পরে তিনি একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন। নাম রাখেন বেটি জেইন। কিন্তু তিনি সামাজিক অবস্থার কারণে ওই সন্তানকে এক দম্পতির কাছে দত্তক দেন। নিজের কাছে স্মৃতি হিসেবে জমা রাখেন শুধু একটি সাদা-কালো ছবি। দত্তক নেয়া ওই দম্পতির নাম-ঠিকানাও তিনি রাখেননি। তারপর একে একে ৭৭টি বছর পার হয়। মিনকা ডিসব্রো শত বর্ষ বয়সের দিকে এগিয়ে যান। কিন্তু সেই বেটি জেইনকে ভুলতে পারেননি। তিনি দত্তক বিষয়ক বিভিন্ন এজেন্সির কাছে মেয়ের সন্ধান চান। কিন্তু কেউ দিতে পারেনি। অকস্মাৎ গত বছর তার এপার্টমেন্টের ফোন বেজে ওঠে। আলাবামা থেকে তাকে একজন বলেন, বেটি জেইনের সঙ্গে কথা বলুন। এ কথা শুনে বিস্ময়ে গা শিউরে ওঠে তার। স্বপ্ন দেখছেন কিনা এজন্য গায়ে চিমটি কাটেন। অবশেষে সমপ্রতি মা-মেয়ের মিলন ঘটে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গালফ নিউজ। এতে বলা হয়, মিনকা ডিসব্রো ছিলেন সাউথ ডাকোটার একটি ফার্মের গরুর দুধ দহনের কর্মচারী। তিনি ডাচ নাগরিক। ১৯২৮ সালে এক সেলাই প্রশিক্ষণ ক্লাসের ছাত্রীদের সঙ্গে তিনি পিকনিক করতে যান। সেখানে তিনি ও তার এক বন্ধু এলিজাবেথ বেড়াতে বের হন। ওই সময় তিন ব্যক্তি তাদের ধর্ষণ করে। এতে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় তার মা ও সৎ পিতা তাকে অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য নির্ধারিত লুথারান হাউজে পাঠান। ১৭ বছর বয়সে ডিসব্রো সোনালী চুলের এক কন্যা সন্তান জন্ম দেন। পিতা-মাতা তাকে বলেন, ওই সন্তান তিনি ফার্মে নিয়ে ফিরতে পারবেন না। ফলে এক যাজক ও তার স্ত্রী ওই সন্তানকে দত্তক নেন। ওদিকে ডিসব্রো এক ফল বিক্রেতাকে বিয়ে করেন। তিনি যুদ্ধকালে একজন পাইলট ছিলেন। দায়িত্ব পালন করেছেন ড্রাফটিং ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। তাদের দু’টি সন্তান। ওদিকে ডিসব্রো প্রতি বছরই বেটি জেইনের জন্মদিন ২২শে মে পালন করেন। গত বছর ২রা জুলাই তার ফোন বেজে ওঠে। ততদিনে বেটির নতুন নাম রাখা হয়েছে রুথ লি। তাকে বড় করে তুলেছেন নরওয়ের এক যাজক ও তার স্ত্রী। তারা তাকে বিয়ে দিয়েছেন আলাবামার এক শিক্ষক ও জ্যোতির্বিদ মার্কলি’র সঙ্গে। তাদের ৬ সন্তান। সমপ্রতি ওই মা ও মেয়ের সাক্ষাৎ হয়েছে। এর ফলে ডিসব্রো ভীষণ খুশি। তার অন্য মেয়ে ডায়ানা হুন বলেন, আমি আমার মাকে এত খুশি হতে দেখিনি এর আগে কখনও।

No comments

Powered by Blogger.