প্রযুক্তিনির্ভর উন্নয়ন চান ড. ইউনূস

মানবজমিন ডেস্ক: বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস শিক্ষিত সমাজকে বাণিজ্যিক স্বার্থসিদ্ধির পরিবর্তে আর্থ-সামাজিক সমস্যা সমাধানে প্রযুক্তির ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ক্ষুদ্রঋণের জনক ড. ইউনূস মঙ্গলবার ভারতের কেরালা রাজ্যের অমৃতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘টেকনোলজি ইনহ্যান্স এডুকেশন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনকালে বলেন, সমাজের সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবসা, অর্থ উপার্জনের জন্য নয়। ড. ইউনূস তার বক্তৃতায় মুনাফা উপার্জনের জন্যই ব্যবসা এ তত্ত্ব পরিহার করার এটাই সবচেয়ে উপযুক্ত সময় বলে উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের গরিব ও অভাবী মানুষের জীবন উন্নত করতে মোবাইল ফোনের মতো আরও ডিজিটাল পণ্য উদ্ভাবনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সে সঙ্গে তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের মতো সমস্যাকবলিত দেশগুলোকে উন্মুক্ত প্রযুক্তি সন্ধানেরও আহ্বান জানিয়েছেন। গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে গ্রামীণ মহিলাদের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বর্তমানে এ ব্যাংকের ৮৩ লাখ ঋণগ্রহীতা রয়েছে বলে জানান।
এসব ঋণগ্রহীতার ৯৭ ভাগই মহিলা। ড. ইউনূস আরও বলেন, এ পদ্ধতির ফলে মানুষ ভিক্ষা করা ছেড়ে দিয়েছে। বর্তমানে ২২ হাজার মানুষ ভিক্ষা করার পরিবর্তে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে সেলসম্যান হিসেবে কাজ করছে। তার মতে, তিনি যখন গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তখন মোট জনসংখ্যার ৭০ ভাগই বিদ্যুতের আলোবঞ্চিত ছিল। সোলার হোম সিস্টেমের সাহায্যে অবস্থার নাটকীয় পরিবর্তন হয়েছে। তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালের দিকে এ সিস্টেম চালুর শুরুতে মাসে মাত্র ১০টি সৌর প্যানেল বিক্রি হতো। বর্তমানে হাজারো ভিক্ষুক প্রতিদিন হাজার হাজার সোলার প্যানেল বিক্রি করছে। ইউনূস আরও বলেন, বর্তমানে সাড়ে ৭ লাখ সোলার প্যানেল বাংলাদেশে কাজ করছে। এ বছরের মাঝের দিকে তা ১০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। তার মতে, একই ধরনের বিপ্লব ঘটতে যাচ্ছে মোবাইল ফোন জগতেও। সম্মেলনে অমৃতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট স্বামী অমৃতাস্বরূপানন্দ প্রযুক্তিকে মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপচার্য পি ভেঙ্কটারঞ্জন সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়টির অগ্রযাত্রার বর্ণনা দিয়ে বক্তৃতা করেন।

No comments

Powered by Blogger.