দিনাজপুর মেডিকেলে ছাত্রলীগের দুগ্রুপে সংঘর্ষ

দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠনের জেরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৩৭ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার এ সংঘর্ষের পর একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় আগামী তিন মাসের জন্য ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় ছাত্রলীগের ৪ নেতাকর্মীকে আটক করেছে। গুরুতর আহতদের দিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ হলে তল্লাশি চালিয়ে দুটি কক্ষ থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে। কলেজের অধ্যক্ষ ডা. কামরুল আহসান জানান, ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ১৩ নভেম্বর থেকে ক্যাম্পাসে দু’গ্রুপের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ চলছিল। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বেলা ১১টার দিকে ছাত্রলীগের মোজাহিদুর হাসান ও কৌশিক দেব গ্র“পের হিল্লোল নামে এক ছাত্রকে ক্যাম্পাসে থাকা হুইপ ইকবালুর রহিম এমপির পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে ধারালো অস্ত্রসহ অধ্যক্ষের কক্ষে ধরে নিয়ে আসে প্রতিপক্ষ তুষার ও শামস গ্র“পের লোকজন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তের মধ্যে অপর গ্র“প অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অধ্যক্ষের কক্ষে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। পরে উভয় গ্র“পের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। পুলিশের সামনেই তুষার ও শামস গ্রুপ ডা. ইউসুফ হলে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর এবং ছাত্রদের মারধর করে।
উভয় গ্রুপের পাল্টাপাল্টি হামলা ও পুলিশের লাঠিচার্জে এ সময় অন্তত ৩৭ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় কৌশিক, হিল্লোল, জিসান ও সোহাগকে আটক করেছে। আহত ৩য় বর্ষের ছাত্র শাহাদত হোসেন, কামরুজ্জামান, রাশেদ ও শাকিলকে উদ্ধার করে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
মেডিকেল কলেজের ডা. ইউসুফ হলে মোজাহিদুর হাসানের ২০৬নং কক্ষ ও শেখ বাপ্পীর ৪০৫নং কক্ষ থেকে পুলিশ বিপুল পরিমাণ দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে।
কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আলতাফ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক পারভেজ আহমেদ চৌধুরী পরাগ ১৩ নভেম্বর দিমেক ছাত্র মোজাহিদুর হাসানকে সভাপতি ও কৌশিক দেবকে সাধারণ সম্পাদক করে মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ শাখা কমিটি অনুমোদন দেয়। পরদিন জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সৈকত পাল দিমেক ছাত্র আশফাকুর রহমান তুষারকে সভাপতি ও আসফিকার শামসকে সাধারণ সম্পাদক করে পাল্টা আরেকটি কমিটি অনুমোদন দেয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেডিকেল কলেজে দুটি কমিটির অনুমোদন হওয়ায় তখন থেকেই উভয় গ্র“পের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।

No comments

Powered by Blogger.