‘প্রধানমন্ত্রীর সই নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সার্টিফিকেট নেয়া হবে দুঃখজনক’ -হাফিজউদ্দিন বীরপ্রতীক

বর্তমান সরকার ঘোষিত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাকে ‘অবৈধ’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল। গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন সংগঠনটির নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বীরপ্রতীক বলেন, এই সরকার মুক্তিযুদ্ধকে একটি পণ্যে পরিণত করেছে। রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য তারা মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার করছে। ১৯৭১ সালে যুদ্ধক্ষেত্রে কম-বেশি এক লাখ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এখন মুক্তিযোদ্ধা তিন লাখে পরিণত হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারও নেই। হাফিজউদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সই নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সার্টিফিকেট নিতে হবে, এটি দুঃখজনক। মুক্তিযুদ্ধের সেনাপ্রধান বেঁচে না থাকলেও উপসেনাপ্রধান এ কে খন্দকার এখনও বেঁচে আছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সনদ দেয়ার অধিকার একমাত্র যুদ্ধক্ষেত্রের সেনাপ্রধানেরই থাকা উচিত। রণাঙ্গনের এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্টিফিকেট ও লাল বইয়ে নাম থাকার যে প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা হয়েছে সেটা রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দেয়ার এক অপচেষ্টা। আমরা আওয়ামী লীগ সরকারের এই তালিকা প্রত্যাখ্যান করছি। দেশব্যাপী এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, এ অবৈধ সরকারের আমলে ১৫০ জন কর্মকর্তা এবং ১৬ জন সচিব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট নিয়ে সরকার থেকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন। অবিলম্বে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট বাতিল করে মূল মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশের আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে হাফিজউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, সরকার মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বিদেশী মেহমানদের দেয়া ক্রেস্ট থেকে সোনা চুরি করেছে। ওই ঘটনার বিচার না করে প্রধানমন্ত্রী চোরদের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। এতে তিনি আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছেন। সরকারের সমালোচনা করে সাবেক এই পানিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস বিকৃতি করার অপকৌশলের শিকার হয়েছেন মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের উপপ্রধান সেনাপতি একে খন্দকার, ৯নং সেক্টর কমান্ডার মেজর এমএ জলিল, বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, কমরেড সিরাজ শিকদারসহ রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধারা। এছাড়া নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস, প্রবীণ আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, প্রয়াত সাংবাদিক এবিএম মূসা, প্রয়াত শিক্ষক ড. পিয়াস করিম, মানবজমিন-এর প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবির, আইনজীবী ড. তুহিন মালিক, শিক্ষক ড. আমেনা মহসিন, সাংবাদিক গোলাম মর্তুজা, মাহমুদুর রহমানসহ দেশবরেণ্য ব্যক্তিরা সরকারের রোষানলের শিকার হয়েছেন।  সংবাদ সম্মেলনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, মুক্তিযোদ্ধা লে. কর্নেল (অব.) জয়নুল আবেদিন, ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, আবুল হোসেন, আবিদুর রহমান, মিজানুর রহমান বীরপ্রতীক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.