পাউবোর ডিজি সহিদুরকে দুদকে তলব

মুক্তিযোদ্ধা সনদ জালিয়াতির অনুসন্ধানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অবসরে যাওয়া মহাপরিচালক সহিদুর রহমানকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক। দুদকের সহকারী পরিচালক সেলিনা আক্তার মনি তাকে তলবি নোটিশ পাঠান। নোটিশে ২০ নভেম্বর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে বলা হয়েছে। সূত্র জানায়, পাউবোর
মহাপরিচালক সহিদুর রহমান মঙ্গলবারই অবসর গ্রহণ করেন। তার এ অবসর গ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে তার বিষয়ে অনুসন্ধান সংক্রান্ত তথ্য গোপন রাখে। ১৬ নভেম্বর তলবি নোটিশ পাঠানো হলেও তার যাতে কিছুতেই সম্মানহানি না হয় সে বিষয়টি মাথায় রেখে গণমাধ্যমকে কোনো তথ্য দেননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। মঙ্গলবার সহিদুর রহমান অবসরে যাওয়ার পর তলবের তথ্য প্রকাশ করা হয়।
সূত্র মতে, মুক্তিযুদ্ধ না করেও মুক্তিযোদ্ধার জাল সনদ নিয়ে পাউবোর মহাপরিচালক হিসেবে চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধি করেন সহিদুর
রহমান। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় ইতিমধ্যে রেকর্ডপত্র হস্তগত করেছেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা। এর মধ্যে ডোসিয়ার, পিডিএস (পার্সোনাল ডাটাশিট), মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাখিলকৃত সনদ, চাকরিতে যোগদানকালে পূরণকৃত ফরমের সত্যায়িত অনুলিপি, মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট, সার্ভিস রেকর্ড, মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের প্রমাণপত্র, নিজের নাম সংবলিত মুক্তিবার্তা (লাল বই) দুদকের হস্তগত হয়েছে। কিন্তু এসব রেকর্ডপত্রের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটিতে পূর্ণাঙ্গ তথ্য নেই বলে জানা গেছে। ৭ অক্টোবর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ কাউন্সিল-জামুকা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়।
সূত্র জানায়, অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সর্বশেষ ১৩ নভেম্বর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মুুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত উপসচিব আবুল হাসনাতকে। তিনি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রণয়নে যুক্ত ছিলেন। আবুল হাসনাতের বিরুদ্ধে প্রণীত তালিকা কাটাছেঁড়া করার অভিযোগ রয়েছে। সহিদুর রহমানের নামও তিনি কাটাছেঁড়া করেন বলে জানা গেছে। অনুসন্ধানের শেষ পর্যায়ে তলব করা হল সহিদুর রহমানকে। তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের একটি অভিযোগও অনুসন্ধানাধীন রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.