এইচ টি ইমামের সাফাই বিশ্বাস করেনি জনগণ: ফখরুল

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে যতই সাফাই বক্তব্য দেন না কেন জনগণ তা বিশ্বাস করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেছেন, ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। পতন যখন শুরু হয়, তখন চারদিক থেকে আসে। আওয়ামী লীগের পতন শুরু হয়েছে। সর্বশেষ তাদের এইচটি ইমামের কথায় জারিজুরি সব বের হয়ে এসেছে। এখন তিনি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে যতই সাফাই গান দেশের মানুষ তা বিশ্বাস করেনি। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫০তম জন্মদিন উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন মির্জা আলমগীর। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রধান ইমাম হলেন এইচটি ইমাম। ওই ইমামের নির্দেশনাতেই নির্বাচন কমিশন ৫ই জানুয়ারি ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচন সম্পন্ন করেছে। তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি। এখন তিনিই প্রকাশ করে দিয়েছেন ৫ই জানুয়ারির ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচন নিয়ে সরকারি ষড়যন্ত্রের কথা। তার কথাতেই প্রমাণ হয়েছে একই সঙ্গে মাত্র পাঁচ ভাগেরও কম ভোট পড়লেও তারা ভোটের ফলাফল বদলে তা ৪০ শতাংশ করেছে। কিভাবে বশংবদ নির্বাচন কমিশন ও দলীয় লোকজনের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে একতরফা নির্বাচন করেছেন। তার নির্দেশেই নির্বাচন কমিশন কাজ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, লতিফ সিদ্দিকী বলেছেন- জয় প্রতি মাসে এক কোটি ৬০ লাখ টাকা বেতন নিতেন। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে সেই টাকা দেয়া হয়। লতিফ সিদ্দিকী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে জেনে-শুনেই এ কথা বলেছেন। আমরা এ বিষয়ে সরকারের কাছে বারবার সঠিক ব্যাখ্যা দাবি করেছি, জয়কে কেন এত টাকা দেয়া হয়? জনগণ এর ব্যাখ্যা জানতে চায়। মির্জা আলমগীর বলেন, জনগণ আরও জানতে চায় সত্য কথা বলার জন্য লতিফ সিদ্দিকীর চাকরি গেল না অন্য কারণে? জনগণ এ ব্যাখ্যাও জানতে চায়। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলা সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিনের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে মির্জা আলমগীর বলেন, এ ধরনের ফ্যাসিবাদী কথা আমরা আগেও শুনেছি। স্বাধীনতার পর আমরা বলতে শুনেছি, কোথায় সিরাজ শিকদার? সেই দম্ভোক্তিকারীরা শেষ হয়ে গেছে। তার মৃত্যুর পর দেশের একজন লোকও কাঁদেনি। অথচ যে জিয়াউর রহমান নিয়ে তাদের এত ক্ষোভ, সেই জিয়ার মৃত্যুর পর দেশের কোটি কোটি মানুষ ডুকরে কেঁদেছেন। শোক পালন করেছেন। মির্জা আলমগীর বলেন, আগামী দিনের তরুণ সমাজের সুযোগ্য নেতৃত্ব বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে। তাকে মিথ্যা অভিযোগে কারাগারে আটক রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ফ্যাসিবাদী সরকার তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিতে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করছে এবং সমন জারি করছে। এ ধরনের ষড়যন্ত্র নতুন নয়। তারেক রহমান সম্পর্কে মির্জা আলমগীর তার ব্যক্তিগত অভিমত প্রকাশ করে বলেন, তিনি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে একটি সত্যিকার স্বাধীন-সার্বভৌম শক্তিশালী গণতন্ত্রের জন্য নেতৃত্ব দেবেন। ২০দলীয় জোটের শরিক বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যরিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, শওকত মাহমুদ, এডভোকেট আহমদ আজম খান, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির সাংস্কৃতিক সম্পাদক গাজী মাযহারুল আনোয়ার, চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলাম, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, জাসাসের সিনিয়র সহ-সভাপতি চিত্রনায়ক আশরাফ উদ্দিন উজ্জল, ছাত্রদল সভাপতি রাজিব হাসান, সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান ও উত্তরাঞ্চল ছাত্রফোরামের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বক্তব্য দেন।
ভাসানী পতাকা-মানচিত্র রক্ষার সংগ্রামের প্রেরণা
এদিকে মওলানা ভাসানীকে সংগ্রামের প্রেরণা বলে মন্তব্য করেছেন ২০ দলীয় জোট নেতা ও বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া। বলেছেন, জাতীয় স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, পতাকা-মানচিত্র রক্ষার সংগ্রামে মওলানা ভাসানী আজও সমগ্র জাতির প্রেরণা। তিনি বৃটিশবিরোধী স্বাধীনতা-সংগ্রাম থেকে বাঙালির স্বাধিকার এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের আলোকবর্তিকা। রাজধানীর নয়াপল্টনের যাদু মিয়া মিলনায়তনে গতকাল সকালে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ন্যাপ আয়োজিত স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন। স্মরণসভায় ন্যাপের ভাইস চেয়ারম্যান কাজী ফারুক হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ শাহজাহান সাজু, স্বপন কুমার সাহা প্রমুখ বক্তব্য দেন।

No comments

Powered by Blogger.